চট্টগ্রামের হাটহাজারী দারুল উলুম মুঈনুল ইসলাম মাদরাসা থেকে হেফাজতে ইসলামের আমির আল্লামা আহমদ শফীর ছেলে আনাস মাদানীকে বহিষ্কারের দাবিতে বিক্ষোভ করছে হাজারও শিক্ষার্থী।
একই সঙ্গে মাদরাসার বর্তমান মুহতামিম আল্লামা শফীকে মা’যুর (অক্ষম) উল্লেখ করে কর্মক্ষম নতুন মুহতামিম নিয়োগসহ ৬ দফা দাবি জানিয়েছে শিক্ষার্থীরা। বুধবার (১৬ সেপ্টেম্বর) জোহরের নামাজের পর থেকে শিক্ষার্থীরা আন্দোলন শুরু করে।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, আল্লামা শফী বর্তমানে বার্ধক্যজনিত বিভিন্ন রোগে ভুগছেন। তার এই অসুস্থতার সুযোগে কোনো নিয়মনীতি না মেনেই হাটহাজারী মাদরাসা থেকে শিক্ষক-কর্মচারীদের চাকরিচ্যুত করছেন আনাস মাদানী। এছাড়া হাটহাজারী মাদরাসা, হেফাজতে ইসলাম ও কওমি মাদরাসা বোর্ডের (বেফাক) ওপর প্রভাব বিস্তারের অভিযোগ উঠেছে আনাস মাদানীর বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, আল্লামা শফী দীর্ঘদিন ধরে বার্ধক্যজনিত কারণে মাদরাসার প্রশাসনিক তদারকিতে অক্ষম হয়ে পড়ছেন। একাধিকবার তাকে দেশে বিদেশে চিকিৎসা দেয়া হয়েছে। নিজের বার্ধক্যজনিত অসুস্থতায় আল্লামা শফী দাফতরিক কাজে ছোট ছেলে মাওলানা আনাস মাদানীর ওপর নির্ভরশীল হয়ে পড়েন। এই সুযোগে মাওলানা আনাস মাদানী হেফাজতে ইসলাম ও হাটহাজারী মাদরাসায় নিজের বলয় বাড়াতে তৎপরতা শুরু করেন।
সূত্র জানায়, আল্লামা শফীর প্রেস সচিব মাওলানা মুনির আহমদকে কোনো নোটিশ ছাড়াই দারুল উলুম হাটহাজারী মাদরাসার সব দায়িত্ব থেকে অব্যাহতি দেয়া হয়। এরপর থেকেই আনাস মাদানীর প্রভাব, মাদরাসার ভেতরে প্রশাসনিক অনিয়মের বিষয়গুলো আলোচনায় আসে।
মাওলানা আনাস মাদানীর প্রভাবে কোনো কারণ দর্শানো ছাড়াই কমপক্ষে ১১ জন শিক্ষক-কর্মকর্তাকে বিনা কারণে মৌখিক নির্দেশে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে। এর মধ্যে রয়েছেন- মাওলানা হাফেজ কাছেম (সহযোগী পরিচালক ও মুহাদ্দিস, মাওলানা রশীদ আহমদ ফয়জী, মাওলানা আবু তৈয়ব আব্দুল্লাপুরী (শিক্ষক প্রতিনিধি), মাওলানা হাফেজ মুহাম্মদ ওসমান, মাওলানা তরীকুল ইসলাম, মাওলানা মুনির আহমদ, মাওলানা মাহবুবুর রশীদ, মাওলানা তৌহিদুল ইসলাম, মাওলানা হাফেজ ইসমাঈল, মাওলানা হাবীবুল্লাহ সোহাইল, মাওলানা হাফেজ আব্দুর রশীদ। এসব বিষয় নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে হাটহাজারী মাদরাসার শিক্ষার্থীদের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছিল।
এ বিষয়ে জানতে হাটহাজারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) ও উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে পাওয়া যায়নি।