তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজারের জুড়ী ও বড়লেখা উপজেলার এক প্রান্তজুড়ে পাথারিয়া হিলস রিজার্ভ ফরেস্ট। এর অধীনে লাঠিটিলা বন। প্রতিকূল অবস্থার মধ্যে এ বনে টিকে আছে পাঁচটি বন্যহাতি। এই বনটি সিলেট বিভাগের একমাত্র বন, যেখানে এখনও টিকে আছে পাঁচটি বন্য মাদি হাতি।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এই বনে পুরুষ হাতি নেই। ফলে বনটিতে হাতির বংশ বৃদ্ধি পাচ্ছে না। এতে করে এই বন থেকে একসময় হাতি বিলুপ্ত হয়ে যাবে। বনটিতে অন্তত একটি পুরুষ হাতির ব্যবস্থা করা গেলে বিলুপ্তি থেকে রক্ষা পাওয়া যাবে। আর প্রাকৃতিক বনটি নিরাপদে থাকবে। বন বিভাগ সূত্রে জানা গেছে, জুড়ী উপজেলার লাঠিটিলা ও পার্শ্ববর্তী বড়লেখা উপজেলার সমনভাগ, মাধবছড়া বিট নিয়ে এই সংরক্ষিত বন। এই বনের অপর পাশে ভারতের আসাম রাজ্যেরসংরক্ষিত বন। উভয় দেশের এই বনে বসবাস করে পাঁচটি হাতি। মানুষের চলাচল ও বসতি করার ফলে হাতিগুলো বনের গভীরে চলে গেছে। তবে খাবারের খুঁজে মাঝে-মধ্যে লোকালয়ে আসে দল বেঁধে। আসামের বেশকিছু জায়গায় তাদের বিচরণ। স্থানীয় অধিবাসীরা জানান, একসময় এই দলে নয়টি হাতি ছিল। এরমধ্যে আটটি মাদি হাতি ও একটি পুরুষ হাতি ছিল। দলের রাজা ছিল পুরুষ হাতিটি। উচ্চতার দিক থেকে সেটি ছিল সবচেয়ে বড়। তারা জানান, হাতিগুলো ছিল ভারতের এক মালিকের পোষা। হাতির মালিক মারা যাওয়ায় খাদ্য সংকটে পড়ে হাতিগুলো। পরে মালিকের ছেলে হাতিগুলোকে আসামের বনে ছেড়ে দেন। বনটির নাম দুহালিয়া হিল কিট। তখন এই দলে ছিল সাতটি হাতি। প্রজননক্রমে দুটি হাতি বেড়েছিল, সেই দুটিও ছিল মাদি হাতি।স্থানীয় বন জাগিদার রইছ উদ্দিন বলেন, বনটিতে হাতি কমে যাওয়ার প্রধান একটি কারণ কোনো পুরুষ হাতি নেই। প্রজনন সংকটে ধীরে ধীরে এখন বিলুপ্তির পথে। আরেকটা বিষয় বনের ভারসাম্য নষ্ট হওয়ায় কিছুটা খাদ্যের অভাবও আছে।
বন্যপ্রাণী ও প্রকৃতি সংরক্ষণ বিভাগের বিভাগীয় বন কর্মকর্তা মো. রেজাউল করিম চৌধুরী বলেন, দলটিতে একটি মাত্র পুরুষ হাতি ছিল। সেটি মারা যায়। আমরা চেষ্টা করছি কোনো সাফারি পার্ক থেকে একটা পুরুষ হাতি এনে দেওয়া যায় কিনা। তার আগে আমরা ভাবছি, রেকার পরানো যায় কিনা, রেকার পরিয়ে হাতিগুলোর মুভমেন্ট বুঝতে হবে। যেহেতু দুই দেশের ব্যাপার, সে বিষয়ে উভয়ের মধ্যে আলোচনা করতে হবে।