সুগন্ধা নদীতে ঢাকা থেকে বরগুনাগামী অভিযান-১০ লঞ্চে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় এ পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যু হয়েছে। তাদের মধ্যে চার জনের লাশ নিয়ে গেছেন স্বজনরা। পরে আরও পাঁচজনের লাশ হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকি ৩২ লাশ বরগুনা জেলা প্রশাসনের কাছে হস্তান্তর করেছে ঝালকাঠি জেলা প্রশাসন। এর মধ্যে দুইজনের লাশ শনাক্ত হয়েছে। শুক্রবার রাত পৌনে ১২টার দিকে বরগুনা জেনারেল হাসপাতালে পৌঁছায় মরদেহবাহী গাড়ি। এরপর মরদেহগুলো নামিয়ে হাসপাতালের মর্গে নিয়ে যান স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেডক্রিসেন্ট বরগুনার সদস্যরা। হাসপাতাল প্রাঙ্গণে কান্নায় ভেঙে পড়েন নিহতদের স্বজনরা। এ সময় উৎসুক মানুষ শোকে স্তব্ধ হয়ে যান।
বরগুনার জেলা প্রশাসক হাবিবুর রহমান জানান, বেলা ১১টায় জানাজা শেষে বরগুনা পোটকাখালী গণকবরে ৩০ জনের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
যাদের পরিচয় শনাক্ত হয়নি তাদের ডিএনএ সংরক্ষণ করা হয়েছে। আমরা এখন পর্যন্ত ২২ জন নিখোঁজের খসড়া তালিকা করেছি। আহত ও মৃতদের তালিকা তৈরি করতে গ্রামে গ্রামে মাইকিং করা হচ্ছে। নিখোঁজদের তালিকা পূর্ণাঙ্গ হলে বলা যাবে বরগুনার কতজন নিখোঁজ রয়েছেন।
জেলা প্রশাসক আরো জানান, ঝালকাঠি জেনারেল হাসপাতাল থেকে মোট ৩৭ জনের মরদেহ বুঝে নেয় বরগুনা জেলা প্রশাসন। এদের মধ্যে পাঁচজনের মরদেহ ইতোমধ্যে স্বজনদেরও কাছে বুঝিয়ে দেয়া হয়েছে। বাকি ৩২টি মরদেহ বরগুনা জেনারেল হাসপাতালের মর্গে রাখা হয়েছে।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে নলছিটির সুগন্ধা নদীর পোনাবালীয়া ইউনিয়নের দেউরী এলাকায় বরগুনাগামী এমভি অভিযান-১০ লঞ্চের ইঞ্জিন রুম থেকে আগুন লাগে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ৪১ জনের মৃত্যুর খবর পাওয়া গেছে। অগ্নিদগ্ধ হয়ে বরিশাল শের-ই-বাংলা মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছেন ৭০ জন। ঢাকায় পাঠানো হয়েছে ১৬ জনকে। আহত হয়েছেন শতাধিক।
বরগুনা জেলা প্রশাসনের কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, ৩৩ জনের লাশ আমরা বুঝে নিয়েছি। এর মধ্যে ৯ জনের লাশ শনাক্ত করেছেন স্বজনরা। সকল প্রক্রিয়া শেষে ওই ৯ জনের লাশ স্বজনদের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। বাকিদের লাশ বিকৃত হয়ে যাওয়ায় চিনতে পারছেন না স্বজনরা। লাশের ময়নাতদন্ত করা হয়েছে। স্বজনরা চিনতে না পারলে ডিএনএ পরীক্ষা করে এসব লাশ হস্তান্তর করা হবে।