করোনা ভাইরাস (কভিড-১৯) সংক্রমণ রোধে জারি করা লকডাউন মানায় বিরল এক দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছেন নেদারল্যান্ডসের প্রধানমন্ত্রী মার্ক রুত্তে। লকডাউন নীতিমালা মেনে চলায় নিজের মুমূর্ষ মাকে মৃত্যুর আগে দেখতে পারেননি তিনি। মরণাপন্ন মাকে দেখতে লকডাউন অমান্য করেননি এই প্রধানমন্ত্রী। তার মা মিয়েক রুত্তে-দিলিং একটি কেয়ার হোমসে ভর্তি ছিলেন। রুত্তের কার্যালয় এক বিবৃতিতে জানায়, নেদারল্যান্ডসে জারি লকডাউনের আওতায় কেয়ার হোমস পরিদর্শন নিষিদ্ধ। লকডাউনের কারণে, নিজের মাকে তার জীবনের শেষ সপ্তাহগুলোতে দেখতে যেতে পারেননি রুত্তে। বৃটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসনের প্রধান উপদেষ্টা ডমিনিক কামিংসের লকডাউন অমান্য করা নিয়ে দেশটিতে তীব্র সমালোচনার মাঝখানে নিজের মাকে দেখতে না পারার কথা জানালেন ডাচ প্রধানমন্ত্রী। এ খবর দিয়েছে দ্য গার্ডিয়ান।
রুত্তে সোমবার জানান, গত ১৩ই মে দ্য হেগে এক কেয়ার হোমসে অসুস্থ অবস্থায় মারা যান তার মা রুত্তে-দিলিং।
মৃত্যুর সময় তার বয়স হয়েছিল ৯৬ বছর। তিনি করোনায় আক্রান্ত ছিলেন না। রুত্তের এক মুখপাত্র বার্তা সংস্থা এএফপিকে জানান, প্রধানমন্ত্রী লকডাউনের সকল নির্দেশ মেনে চলেছেন। গত ২০শে মার্চ থেকে সেখানে লকডাউন জারি রয়েছে।
মায়ের মৃত্যুতে রুত্তে বলেন, তীব্র ব্যথা ও প্রিয় সব স্মৃতির পাশাপাশি, তিনি আমাদের সঙ্গে এতদিন ধরে ছিলেন- এ ব্যাপারে আমার পরিবার ও আমি এক ধরণের কৃতজ্ঞতাবোধও বিরাজ করছে। আমরা পারিবারিকভাবে তাকে বিদায় জানিয়েছে। আশা করছি ভবিষ্যতে তার চলে যাওয়ার ব্যাপারটি মেনে নিতে পারবো।
প্রসঙ্গত, ডাচ কর্তৃপক্ষ সোমবার থেকে আগামী ১৫ই জুন পর্যন্ত কিছু কেয়ার হোমসে পরিদর্শন উন্মুক্ত করে দিয়েছে। দেশটিতে গত ২০ মার্চ থেকে লকডাউন জারি রয়েছে। তবে ইউরোপের বেশিরভাগ দেশের মতো কঠোর লকডাউন জারি না করে, তুলনামূলক কম কঠোর বিধিনিষেধের ‘বুদ্ধিবৃত্তিক লকডাউন’ জারি করেছে ডাচ সরকার। জন হপকিন্স ইউনিভার্সিটির উপাত্ত অনুসারে, এখন পর্যন্ত দেশটিতে করোনা আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারিয়েছে ৫ হাজার ৮৪৯ জন মানুষ। আক্রান্ত হয়েছেন ৪৫ হাজারের বেশি।