জিয়াউল হক জুমন: যে কোন রোগ প্রাথমিক পর্যায়ে সনাক্ত করা গেলে তা নিরাময় করা সহজ হয়। তাই রোগ নির্ণয়ের জন্য অত্যাধুনিক প্রযুক্তি উদ্ভাবন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আধুনিক চিকিৎসাবিদ্যায় রোগ নির্ণয়, রোগের চিকিৎসা, রোগীর শরীরে যথাযথভাবে ঔষধ সরবরাহ, এমনকি ঔষধ তৈরিতেও ন্যানোটেকনোলজি বহুলভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। অন্যান্য ক্ষেত্রের মতো চিকিৎসা ক্ষেত্রেও ন্যানোটেকনোলজিকে কীভাবে আরও কার্যকরভাবে ব্যবহার করা যায় তা নিয়ে বিশ্বব্যাপী ব্যাপক গবেষণা হচ্ছে। শনিবার সন্ধ্যায় বাংলাদেশ ন্যানো সোসাইটির উদ্যোগে আয়োজিত ওয়েবিনারে ন্যানোবিজ্ঞানীগন এসব বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
উক্ত ওয়েবিনারে আমেরিকার টেক্সাস ইউনিভার্সিটি, এল পাসো এর ফারমাসিউটিকস বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ড. মোঃ নুরুন্নবী “পটেনশিয়াল অব টু-ডি ন্যানোমেটেরিয়েলস ফর ডায়াগনস্টিক এন্ড থেরাপেটিক এপ্লিকেশনস” বিষয়ের ওপর মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন। দ্বিমাত্রিক ন্যানোমেটেরিয়েলস গ্রাফিনকে কিভাবে রোগ নির্ণয় ও চিকিতসায় ব্যবহার করা যায় তার ওপর তিনি বিস্তারিত আলোচনা করেন। কানাডার টরন্টো ইউনিভার্সিটির ফার্মাসিউটিক্যালস সায়েন্স বিভাগের সিনিয়র রিসার্চ এসোসিয়েট ড. জগতময় দাস উপস্থাপিত প্রবন্ধের ওপর আলোচনা করেন। তিনি ক্যান্সার বায়োমার্কার, ন্যানোবায়োসেন্সর ইত্যাদি অত্যাধুনিক রোগ নির্ণায়ক যন্ত্রে দ্বিমাত্রিক ন্যানোমেটেরিয়েলস এর ব্যবহার, তাদের কার্যকারিতা ও দক্ষতা বিষয়েও আলোচনা করেন।
আমেরিকান ইন্টারন্যাশনাল ইউনিভার্সিটি-বাংলাদেশ (এআইইউবি) এর রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মাহবুব রব্বানী এর সঞ্চালনায় পরিচালিত ওয়েবিনারে সভাপতিত্ব করেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় এর অধ্যাপক ও ইনস্টিটিউট অব বায়োটেকনোলজি এন্ড জেনেটিক ইঞ্জিনিয়ারিং এর প্রতিষ্ঠাতা পরিচালক অধ্যাপক ড. মোঃ তোফাজ্জল ইসলাম। বাংলাদেশে ন্যানোটেকনোলজি বিষয়ে গবেষণার সার্বিক অবস্থা, গবেষণার গুরুত্ব, কৃষিতে ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহারের বিভিন্ন সুযোগ ও ক্ষেত্র, কৃষি উতপাদন, কৃষিজ পণ্য ও খাদ্যদ্রব্যের সংরক্ষণ, বাজারজাতকরণ, ও উদ্ভিদের রোগ নির্ণয়ে ন্যানোটেকনোলজি ব্যবহারের সম্ভাবনা ইত্যাদি বিষয়ে তিনি আলোকপাত করেন।
প্রবন্ধ উপস্থাপন ও আলোচনা শেষে প্রশ্নোত্তর পর্ব সঞ্চালনা করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের রসায়ন বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. এ জে সালেহ আহাম্মদ। দেশ বিদেশে অবস্থানরত অসংখ্য শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও গবেষক উক্ত ওয়েবিনারে অংশগ্রহণ করেন। চতুর্থ শিল্প বিপ্লব অর্জনে ন্যানোটেকনোলজির গুরুত্ব তুলে ধরে এবং অংশগ্রহণকারীদের ধন্যবাদ জ্ঞাপন করে বুয়েট এর রসায়ন বিভাগের অধ্যাপক ড. আল-নকীব চৌধুরীর সমাপনী বক্তব্যের মাধ্যমে ভার্চুয়াল সেমিনারটি সমাপ্ত হয়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ন্যানো সোসাইটি নিয়মিত এ ধরণের ওয়েবিনার আয়োজন করে থাকে।