নারায়ণগঞ্জের রূপগঞ্জে হাসেম ফুডসের কারখানায় আগুনে ৫২ জনের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল হাসেমসহ আট জনের চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
তারা হলেন আবুল হাসেমের চার ছেলে হাসিব বিন হাসেম সজীব, তারেক ইব্রাহীম, তাওসীব ইব্রাহীম ও তানজীম ইব্রাহীম, প্রতিষ্ঠানটির প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা শাহান শাহ আজাদ, হাসেম ফুড লিমিটেডের ডিজিএম মামুনুর রশিদ ও এডমিন প্রধান সালাউদ্দিন।
শনিবার (১০ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় তাদের রিমান্ড মঞ্জুর করেন নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট ফাহমিদা খাতুন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন নারায়ণগঞ্জ কোর্ট পুলিশের পরিদর্শক আসাদুজ্জামান।
তিনি বলেন, জিজ্ঞাসাবাদের জন্য প্রত্যেক আসামির ১০ দিন করে রিমান্ড চেয়েছে পুলিশ। শুনানি শেষে চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত।
রূপগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি-তদন্ত) হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, বিকালে আসামিদের আদালতে হাজির করে ১০ দিন করে রিমান্ড চায় পুলিশ। পরে চার দিন করে রিমান্ড মঞ্জুর করেন বিচারক।
হুমায়ুন কবির মোল্লা বলেন, আগুনের সূত্রপাত, বহু শ্রমিকের প্রাণহানি, কেন আগুন লাগার পর শ্রমিকরা কারখানা থেকে বের হতে পারেননি এসব যুক্তি আদালতে তুলে ধরে রিমান্ড চেয়েছি। রিমান্ডে এসব বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে।
এর আগে সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান মোহাম্মদ আবুল হাসেম ও এমডি সজীবসহ আট জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। দুপুর ২টার দিকে অগ্নিকাণ্ডে ক্ষতিগ্রস্ত কারখানা পরিদর্শন শেষে সাংবাদিকদের এ তথ্য নিশ্চিত করেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল।
তিনি বলেন, সেজান জুস কারখানায় অগ্নিকাণ্ডের ঘটনায় জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সজীব গ্রুপের চেয়ারম্যান ও এমডিসহ আট জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে। ফায়ার সার্ভিস ও পুলিশের তদন্তে কারখানা মালিকপক্ষের বিরুদ্ধে একাধিক অভিযোগ উঠেছে। এসব বিষয়ে তাদের জিজ্ঞাসাবাদ করবে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী।
প্রসঙ্গত, রূপগঞ্জে সজীব গ্রুপের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান হাসেম ফুড অ্যান্ড বেভারেজের সেজান জুস কারখানায় বৃহস্পতিবার (০৮ জুলাই) বিকাল সাড়ে ৫টায় আগুনের সূত্রপাত হয়। কারখানার ছয় তলা ভবনটিতে তখন প্রায় চারশ’র বেশি কর্মী কাজ করছিলেন। কারখানায় প্লাস্টিক, কাগজসহ মোড়কিকরণের প্রচুর সরঞ্জাম থাকায় আগুন মুহূর্তে ছড়িয়ে পড়ে সব ফ্লোরে।
প্রচুর পরিমাণ দাহ্য পদার্থ থাকায় কয়েকটি ফ্লোরের আগুন নিয়ন্ত্রণে আনতে ফায়ার সার্ভিসের ১৮টি ইউনিটের ২০ ঘণ্টার বেশি সময় লাগে। শুক্রবার (০৯ জুলাই) দুপুরে কারখানার ভেতর থেকে ৪৯ জনের লাশ উদ্ধার করা হয়েছে। এর আগে, আগুনে পুড়ে তিন জনের মৃত্যু হয়। সবমিলিয়ে এ পর্যন্ত ৫২ জনের লাশ উদ্ধার হয়েছে। কারখানায় আগুনের ঘটনায় নিখোঁজ রয়েছেন প্রায় অর্ধশতাধিক ব্যক্তি। ঘটনা তদন্তে জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে কমিটি গঠন করা হয়েছে।