লক্ষ্মীপুরের রায়পুরে শহিদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষে মিছিল করাকে কেন্দ্র করে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও বিএনপি নেতাকর্মীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে।
এতে উভয়পক্ষের ২২ জন আহত হয়েছেন। এ সময় বাসটার্মিনাল এলাকায় বিএনপি সমর্থকের চাইনিজ রেস্টুরেন্টসহ দুটি প্রতিষ্ঠান ভাঙচুর করা হয়।
সোমবার সকালে উপজেলা পরিষদ সড়কে ডাকবাংলোর সামনে এবং প্রধান সড়ক ও উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
আহতরা হলেন- ফয়সাল আজিম, সজিব, মুরাদ, শান্ত ইসলাম, রিয়াজ, সোহেল, আলাউদ্দিন, সোহেল আহাম্মদ, শিমুল, জুম্মান, এমরান হোসেন, মিরাজ, নিলয়। অন্যদের নাম তাৎক্ষণিক জানা যায়নি।
আহতদের মধ্যে বিএনপির দুই ও আওয়ামী লীগের দুজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে বলে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডা. ইসমত জেরিন জানান।
এ রিপোর্ট লেখা সময় দুপুর দেড়টা পর্যন্ত আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে মামলার প্রস্তুতি চলছিল। সংঘর্ষের পর শহরজুড়ে থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সকাল ৮টায় বিএনপির নেতাকর্মীরা শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে গাজী মার্কেটের সামনে চলে আসেন। একই সময়ে ফুল দিতে আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল খোকনের কার্যালয়ে জড়ো হতে থাকেন।
এ সময় বিএনপির মিছিলটি আওয়ামী লীগ নেতার কার্যালয়ের সামনে আসা মাত্রই ধাওয়া করে কয়েকজন কর্মী। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা গাজী মার্কেটে আসার সময় প্রধানমন্ত্রীসহ সরকারবিরোধী স্লোগান দেন।
এ সময় তাদের ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে ধাওয়া করেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা। পরে বিএনপির নেতাকর্মীরা গাজী মার্কেটে সভা ও নাস্তা বিতরণ করার সময় তা ভণ্ডুল করে দেয় ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা।
এ সময় উভয় দলের ২২ নেতাকর্মী আহত হন। পরে আওয়ামী লীগ কর্মীরা বাসটার্মিনাল এলাকায় মিছিল নিয়ে আজাদ হোসেন নামে এক বিএনপি সমর্থকের চাইনিজ রেস্টুরেন্ট ও জিম ভবনের কাঁচের গ্লাস ও দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করেন।
সংঘর্ষের পর উভয় দলের আহত কর্মীরা চিকিৎসা নিতে গেলে হাসপাতালে গেলে বিএনপির কর্মীদের ধাওয়া করেন আওয়ামী লীগের কর্মীরা। পরে পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে।
পৌর আওয়ামী লীগের সভাপতি কাজি জামমেদ কবির বাক্কি বিল্লাহ বলেন, সকালে বিএনপির নেতাকর্মীরা শহিদ মিনারে ফুল দিতে যাওয়ার সময় প্রধানমন্ত্রী ও সরকারবিরোধী স্লোগান দেয়। আমরা বাধা দিলে আমাদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ করা হয়। এতে উভয় দলের মধ্যে ধাওয়া পাল্টা ধাওয়া হয়। আমাদের ১০/১২ নেতাকর্মী মারাত্মকভাবে আহত হয়েছেন। আমরা মামলার প্রস্তুতি নিয়েছি।
উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক নাজমুল আলম মিটু বলেন, সকালে শান্তিপূর্ণভাবে শহিদ মিনারে ফুল দিয়ে গাজী মার্কেটে চলে আসি। সভা শেষে কর্মীদের মাঝে নাস্তা বিতরণের সময় আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা ইটপাটকেল নিক্ষেপ করে আমাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। আমাদের ৭/৮ জন নেতাকর্মী মাথায় ও শরীরে আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছে।
রায়পুর থানার ওসি শিপন বড়ুয়া বলেন, স্লোগান নিয়ে বিএনপি ও আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মধ্যে পাল্টাপাল্টি ধাওয়া হয়। তিন দফায় ঘটনাস্থল গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে পুলিশ। সংঘর্ষ এড়াতে শহরের বিভিন্ন স্থানে পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। এখন পর্যন্ত কোনো পক্ষ থেকে মামলা করা হয়নি।