একরকম হঠাত করেই রাজনীতিতে নাম লেখান মাশরাফি বিন মুর্তজা। অবসরের আগে এবং জাতীয় দলের অধিনায়ক থাকাকালীন সময়ে মাশরাফির এমন সিদ্ধান্তের সমালোচনা শুরু হয়। সব মহলে মাশরাফির যে গ্রহণযোগ্যতা ছিল রাজনীতিতে নাম লেখানোয় তাতে বসে যায় প্রশ্নবোধক চিহ্ন। সরাসরি অনলাইন আলাপচারিতা ‘নট আউট নোমান’ অনুষ্ঠানে সমালোচকদের জবাব দিয়েছেন মাশরাফি।
মাশরাফি বলেন, ‘কারো প্রশ্নের জবাব দেয়া আমি শ্রেয় মনে করি না। সবারই নিজস্ব মতামত থাকতেই পারে। এটা এমন কিছু না। আমি সব সময় মানুষের পাশে থাকতে চেয়েছি। বলতে পারেন মানুষের পাশে দাঁড়ানোটা নেশার মতো।
রাজনীতিতে এসে সে সুযোগটা বেড়েছে। প্রশ্ন আসতে পারে আমি রাজনীতিতে না আসলে কি মানুষকে সহযোগিতা করতাম না? অবশ্যই করতাম। করেছিও। কিন্তু যখন আপনি বড় পরিসরে মানুষকে সহযোগিতা করার চিন্তা করবেন তখন ভিন্ন একটা চিত্র চোখে পড়বে।’
সেটার একটা উদাহরণ টেনে তিনি বলেন, ‘ব্রেন স্ট্রোক, কিডনি, লিভার সিরোসিস, ক্যান্সারে আক্রান্ত এবং প্রতিবন্ধিদের জন্য সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ তহবিল থেকে সর্বোচ্চ ৫০ হাজার টাকা করে দেয়া হয়। আমি ভাবলাম আমার এলাকায় এরকম কতজন আছেন এটা নিয়ে একটা জরিপ করবো। তো আমি স্বল্প পরিসরে একটা জরিপ করেছিলাম। মাত্র ১৫ দিনে আমার কাছে এরকম রোগে আক্রান্ত প্রায় ১ হাজার জনের নাম আসে। এদের মধ্যে অনেকে ছিলেন, গুরুতর অসুস্থ। বাঁচার সম্ভাবনা খুবই কম। তাদের ইচ্ছা, ঢাকায় গিয়ে বিশেষজ্ঞ ডাক্তারের কাছে একবার চিকিৎসা করাবেন। এতবড় রোগে আক্রান্ত অথচ তারা এখনো পর্যন্ত ভালো একজন ডাক্তারই দেখাতে পারেননি। আপনি যদি এই বিষয়টা একবার ভাবেন তাহলে দেখবেন, কোনো ক্রিকেটারের পক্ষে কিন্তু এতগুলো মানুষকে সহযোগিতা করা সম্ভব হতো না।’
‘আসলে আমরা রাজনীতির বাইরে কেউ নয়। এরকমটা হতে পারে, আমি আপনার পছন্দের দলে নাম লেখাইনি বলে আমার প্রতি আপনার রাগ আছে। আমি আপনার বিপক্ষে গিয়েছি বলে আমি আপনাকে অসম্মান করিনি। আপনার সমালোচনাও করছিনা কিংবা ক্ষতিও করছি না। আমি খারাপ কাজ করলে অবশ্যই আপনি সমালোচনা করবেন। ২০১৯ বিশ্বকাপে আমি ভালো খেলতে পারিনি সেজন্য আমাকে সমালোচনা শুনতে হয়েছে। এটা আমি মেনেও নিয়েছি। আমি যদি রাজনীতিতে ভুল কিছু করি সেটা নিয়েও আপনি বলতে পারেন। একটা বিষয় খুবই গুরুত্বপূর্ণ, রাজনীতিটা আপনি নিজের জন্য করছেন নাকি মানুষের জন্য? আপনি যদি মানুষের জন্য করেন তাহলে প্রশ্ন তোলার সুযোগ নেই। আর যদি নিজের জন্য করেন সেক্ষেত্রে নানা রকম প্রশ্ন আসতে পারে। আমার কাছে রাজনীতিটা হচ্ছে, মানুষের জন্য কাজ করা। এটাই আমার মূল জায়গা (রাজনীতিতে)।’