বিপুল পরিমাণ মাদকের সন্ধানে মঙ্গলবার রাত সাড়ে ১০টা থেকে রাজধানীর নারিন্দা এলাকায় একটি বাড়ি ঘিরে রাখে র্যাপিড আ্যকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)। পরে অভিযান চালিয়ে সেই বাড়ি থেকে সাড়ে ৩ হাজার বোতল বিভিন্ন প্রকার মাদক মিশ্রিত পানীয় জব্দ করেছে র্যাব।
এছাড়া এই পানীয় তৈরির কাজে কাঁচামাল হিসেবে ব্যবহৃত ইয়াবার গুড়া, গাঁজা সাদৃশ্য বস্তু ও বিভিন্ন সরঞ্জামাদি জব্দ করা হয়েছে সেখান থেকে।
অভিযান শেষে রাত দেড়টায় নারিন্দার ফকিরচান সর্দার কমিউনিটি সেন্টার সংলগ্ন এলাকায় দেওয়া এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন র্যাবের লিগ্যাল আ্যন্ড মিডিয়া উইংয়ের পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন।
তিনি জানান, সম্প্রতি র্যাবের কাছে কামরাঙ্গীরচর এলাকার কয়েকটি পরিবারের অভিভাবকরা জানান, তাদের সন্তানেরা মাদক মিশ্রিত এক ধরনের পানীয়র প্রতি আসক্ত হয়ে পড়েছেন।
সেসব অভিযোগের ভিত্তিতে গোয়েন্দা নজরদারি বাড়ায় র্যাব। এসব অভিযোগের সত্যতা পাওয়া যায়। পরে সুনির্দিষ্ট তথ্যের ভিত্তিতে মঙ্গলবার রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে এই চক্রের ৬ সদস্যকে আটক করে র্যাব-২।
আটকরা হলেন, মো. ওয়াজেদ ইসলাম শান্ত (২০), রাসেল (২৯), হৃদয় (২৯), মো. মুরসালিন আহম্মেদ (১৮), মো. সবুজ মিয়া (১৮) ও নান্টু (৫২)। এদের মধ্যে শান্ত এ চক্রটির মূলহোতা।
এরপর তাদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে নারিন্দার বাড়িতে অভিযান চালানো হয়। বাড়িটি মাদকের এই পানীয় তৈরির কারখানা হিসেবে ব্যবহৃত হচ্ছিল।
কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন,অভিযোগ আসে কামরাঙ্গীরচরে খোলা মোরা জায়গায় একটি দোকানে আয়ুর্বেদিক ওষুধের আড়ালে এক প্রকার পানীয় বিক্রি করা হয়। সেই পানীয়র প্রতি আসক্ত হয়ে পড়ছে যুবকেরা। এসব পানীয় পান করার পর মাদকাসক্তদের মতো আচরণ করে তারা।
অভিযোগের ভিত্তিতে র্যাব-২ এর গোয়েন্দা দল গোপনে ওই আয়ুর্বেদিকের দোকান থেকে ওষুধ সংগ্রহ করে এবং তা পরীক্ষাগারে পাঠায়। পরীক্ষার পর ওই পানীয়ের মধ্যে গাঁজা, ইয়াবা, ডান্ডি তৈরিতে ব্যবহৃত টলুইন নামক ‘ক’ শ্রেণির মাদকের উপস্থিতি পাওয়া যায়। এছাড়াও তীব্র ঘুমের ওষুধ ও যৌন উত্তেজনা বৃদ্ধির বিভিন্ন উপকরণ, এসিড জাতীয় দ্রব্যসহ বিভিন্ন দাহ্য পদার্থের উপস্থিতি পাওয়া যায় এই পানীয়তে।
তিনি বলেন, এরই পরিপ্রেক্ষিতে র্যাব-২ এর একটি দল রাজধানীর নারিন্দাতে অবস্থিত কারখানায় এবং কামরাঙ্গীরচর, কাঁটাবন, নাজিরা বাজার, গুলিস্তান, পুরান ঢাকার বিভিন্ন আউটলেটে অভিযান চালিয়ে আয়ুর্বেদিক/ভেষজ ওষুধের আড়ালে মাদক মিশ্রিত পানীয় উৎপাদন ও বিক্রির অভিযোগে এই ছয় জনকে আটক করে।
আটকদের জিজ্ঞাসাবাদের ভিত্তিতে তিনি বলেন, তারা ফার্মেসির নামে লাইসেন্স নিয়ে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে আয়ুর্বেদিক ওষুধ বিক্রির আড়ালে মাদক ও যৌন উত্তেজক দ্রব্যাদি মিশ্রিত পানীয় প্রস্তুত ও বিক্রি করে আসছিল। প্রতি বোতল পানীয়র দাম ১৬০ টাকা থেকে ২০০ টাকা।