রংপুর নগরীর বিনোদপুর এলাকায় তিন লাখ টাকা যৌতুকের দাবিতে বিয়ের ৬ মাস পর শ্বশুরবাড়িতে হামলা চালিয়ে ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে মহিবুল ইসলাম নামে এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। শনিবার বিকালে এই ঘটনা ঘটেছে। অভিযুক্ত ওই পুলিশ কনস্টেবল লালমনিরহাট জেলায় কর্মরত।
তার শ্বশুরবাড়ি লোকজনের দাবি, রংপুর নগরীর বিনোদপুর এলাকার শহিদুল ইসলামের একমাত্র মেয়ে সুরমী আখতারের সঙ্গে নগরীর ভগিবালাপাড়া মহল্লার পুলিশ সদস্য মহিবুল ইসলামের ৬ মাসে পূর্বে বিয়ে হয়। বিয়ের সময় যৌতুক হিসেবে শ্বশুর জামাকে নগদ ৭ লাখ টাকা দেন। এক মাস না যেতেই আবারও তিন লাখ টাকা যৌতুক দাবি করেন মহিবুল। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় প্রায় দু’মাস পূর্বে স্ত্রী সুরমী আখতারকে মারধর করে বাড়ি থেকে বের করে দেন তিনি।
এরপর শনিবার বিকালে মহিবুল তার লোকজনসহ শ্বশুরবাড়িতে এসে তিন লাখ টাকাসহ মেয়েকে তুলে দিতে চাপ সৃষ্টি করেন। টাকা দিতে রাজি না হওয়ায় শ্বশুর শহিদুলসহ তার বাড়ির লোকজনের ওপর হামলা চালিয়ে মারধর করে। এ সময় শহিদুল ইসলাম গুরুতর আহত হন। হামলার সময় এলাকাবাসি ৯৯৯ নম্বরে ফোন করলে পুলিশ এসে মহিবুলসহ তার ৬ সহযোগীকে আটক করে থানায় নিয়ে যায়।
এরা হলেন- মকবুল হোসেন, মজিদা বেগম, মোকলেসুর রহমান রতন, মনোয়ার হোসেন, আনোয়ার ও রাজু মিয়া। পরে এদের বিরুদ্ধে থানায় মামলা করলে পুলিশ তা গ্রহণ না করে বিষয়টি মিমাংসার প্রস্তাব দেয়।
এ ব্যাপারে নববিবাহিতা গৃহবধূ সুরমী আখতারের বাবা শহিদুল ইসলাম জানান, নিজে বাদী হয়ে এ ঘটনায় গভীর রাত পর্যন্ত লিখিত এজাহার মেট্রোপলিটন কোতয়ালী থানায় দেওয়ার পরেও পুলিশ মামলা রেকর্ড করেনি। বরং তারা আপোষ মিমাংসা করার জন্য চাপ সৃষ্টি করে। অবশেষে গভীর রাত পর্যন্ত থানায় অবস্থান করে মামলা রেকর্ড না করায়।
বিষয়টি রংপুর সিটি করপোরেশনের মেয়র মোস্তাফিজার রহমান মোস্তফাকে অবহিত করা হয়। তিনি কোতয়ালী থানার ওসি আব্দুর রশিদকে ফোন করে মামলা নেবার কথা জানান। তারপরও রোবববার সকালেও মামলা রেকর্ড না করে আটক পুলিশ সদস্যকে ছেড়ে দেবার পরিকল্পনা করে পুলিশ।
এ ঘটনার প্রতিবাদে এলাকাবাসি ও স্বজনরা রোববার দুপুর বেলা পৌনে ১টার দিকে বিক্ষোভ মিছিল নিয়ে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ প্রদর্শন করে। পরে মেট্রোপলিটন পুলিশ কমিশনার আব্দুল আলীম মাহমুদের হস্তক্ষেপে থানা পুলিশ মামলা রেকর্ড করে।
এ ব্যাপারে কোতয়ালী থানার ওসি আব্দুর রশিদ জানান, মামলা রেকর্ড করা হয়েছে। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়া হবে। আটক পুলিশ সদস্যসহ অন্যান্যদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।