ঝালকাঠিতে প্রথম করোনায় আক্রান্ত হওয়া একই পরিবারের তিন সদস্য সুস্থ হয়েছেন। হোম আইসোলেশনে থেকেই চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী চিকিৎসাসেবা নিয়ে তারা সুস্থ হন। সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হালদার এ তথ্য জানান।
সুস্থ হওয়া ব্যক্তিরা হলেন—ঝালকাঠি সদর উপজেলার গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের বিন্নাপাড়া গ্রামের নাছির হাওলাদার ( ২৮), তার স্ত্রী সুমা আক্তার ( ২৩) ও তাদের ৬ মাসের শিশুপুত্র মো. সাজিদ।
চিকিৎসকরা জানান, উপজেলা স্বাস্থ্য সহকারী মো. জুবায়ের হোসেনের সঙ্গে তারা নিয়মিত যোগাযোগ রাখতেন। তারা জ্বর ও কাশির ওষুধ খেতেন নিয়মিত। এছাড়া লেবু, আদা, এলাচ, দারুচিনি গরম পানির সঙ্গে মিশিয়ে ভালোভাবে ফুটিয়ে পান করতেন। এর বাইরে নিয়মিত শরীরচর্চসহ অন্য নিয়নকানুন মেনে চলায় এক মাসের মধ্যেই করোনাকে জয় করতে সক্ষম হয়েছে পরিবারটি।
করোনা জয়ী নাছির হাওলাদার বলেন, ‘প্রথম যেদিন শুনেছি আমার পুরো পরিবার করোনায় আক্রান্ত, তখন একদম ভেঙে পড়েছিলাম। গরিবের সংসার কীভাবে চিকিৎসা নেবো, কী খাবো—এসব ভাবছিলাম। কিন্তু জেলা প্রশাসন, পুলিশ প্রশাসন, স্বাস্থ্য বিভাগ ও জন প্রতিনিধিরা সহযোগিতায় এগিয়ে আসেন। তারা আমাদের চিকিৎসা ও খাদ্য সাহায্যসহ সব ধরনের সহযোগিতা করেছেন। এ জন্য আমরা দ্রুত সুস্থ হতে পেরেছি। আমাদের সহযোগিতায় যারা এগিয়ে এসেছেন, তাদের প্রতি আমরা কৃতজ্ঞ।’
গাবখান ধানসিঁড়ি ইউনিয়নের দায়িত্বে থাকা স্বাস্থ্য সহকারী মো. জুবায়ের হোসেন বলেন, ‘আমি প্রতিনিয়ত এই পরিবারের খোঁজ-খবর নিতাম। নিয়ম মেনে চিকিৎসা নিচ্ছে কিনা সে বিষয়ে খেয়াল রাখতাম। তারা সবকিছু নিয়ম করে করতো বলেই হয়তো সুস্থ হয়েছেন।’
সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. ওমর ফারুক বলেন, ‘আমাদের পক্ষ থেকে সব সময় চেষ্টা ছিল কীভাবে তাদের সুস্থ করে তোলা যায়। যখন যে ওষুধ দরকার, আমরা তা দিতাম। আর তাদের মনোবল সব সময় চাঙ্গা রাখতাম। নিয়ম মেনে চিকিৎসা নেওয়ায় তারা করোনাকে জয় করতে সক্ষম হয়েছেন।’
সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হালদার বলেন, ‘করোনার হাত থেকে বাঁচতে হলে এই মুহূর্তে সবাইকে ঘরে থাকতে হবে। জরুরি প্রয়োজনে বের হলেও অবশ্যই মাস্ক ও গ্লাভস পরতে হবে।’
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এই পুরো পরিবার নারায়ণগঞ্জে বসবাস করতো। এর মধ্যে নাছির উদ্দিন দোকানে দোকানে বিভিন্ন মালামাল সরবরাহ করতেন। গত ৮ এপ্রিল তারা নারায়ণগঞ্জ থেকে গ্রামের বাড়িতে আসেন। এরপর তাদের জ্বর-সর্দি দেখা দিলে করোনা পরীক্ষা করা হয় এবং রিপোর্ট পজিটিভ আসে। এ সময় ঝালকাঠির সিভিল সার্জন ডা. শ্যামল কৃষ্ণ হালদারের নির্দেশনা অনুযায়ী এবং সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের মেডিক্যাল অফিসার ডা. ওমর ফারুকের তত্ত্বাবধানে হোম আইসোলেশনে রেখে চিকিৎসা দেওয়া হয় তাদের।
উৎসঃ বাংলা ট্রিবিউন