
ইতালির রোমে বাংলাদেশ বিমানের একটি ফ্লাইটে যাত্রীর ব্যাগ থেকে কাঁচা মাছ-মাংসের তরল বের হয়ে দুর্গন্ধ ছড়ানোর ঘটনায় ফিরতি ফ্লাইটের অনুমতি পেতে প্রায় চার ঘণ্টা বিলম্ব হয়েছে। এ ঘটনায় বিমানবন্দরে বিভ্রান্তি ও নিরাপত্তাজনিত তৎপরতা দেখা দেয়।
মঙ্গলবার (২৯ জুলাই) স্থানীয় সময় বিকালে রোমের ফিউমিচিনো বিমানবন্দরে ঘটে এই অস্বস্তিকর ঘটনা। বাংলাদেশ থেকে আসা একটি ফ্লাইটের যাত্রীদের ব্যাগেজ বেল্টে পচনশীল খাবারের তরল ছড়িয়ে পড়ে পরিবেশ দূষণ করে। দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ায় আতঙ্কিত হয়ে ওঠেন আশপাশের অন্য ফ্লাইটের যাত্রীরাও। পরে বিষয়টি জানানো হয় নিরাপত্তা কর্মীদের।
পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশি যাত্রীদের সব ব্যাগ তল্লাশি শুরু করে এবং বেশ কিছু পচনশীল খাদ্যসামগ্রী জব্দ করে। এতে ঢাকামুখী ফিরতি ফ্লাইটের ছাড়পত্র পেতে বিলম্ব ঘটে।
বিষয়টি নিয়ে জানতে চাইলে ইতালিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের কান্ট্রি ম্যানেজার আবদুল্লাহ আল হোসাইন জানান, ‘আমি বর্তমানে বাংলাদেশে অবস্থান করছি। তবে রোমে থাকা সহকর্মীদের মাধ্যমে জেনেছি, বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ কিছু যাত্রীর ব্যাগে পচনশীল খাবার পায়। সেখান থেকেই দুর্গন্ধ ছড়িয়ে পড়ে এবং অপ্রীতিকর পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। ঢাকায় বিষয়টি জানানো হলে তদন্তের কথা বলা হয়েছে।’
ফিরতি ফ্লাইটটি স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা ২০ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও ছাড়পত্র পেতে দেরি হওয়ায় ফ্লাইটটি ছাড়ে রাত ১২টা ৪ মিনিটে। দীর্ঘ অপেক্ষায় ক্ষোভে ফেটে পড়েন ঢাকাগামী যাত্রীরা।
বিমানের এক যাত্রী রায়হান খান মোবাইলে জানান, ‘রোম থেকে নির্ধারিত সময়ের চার ঘণ্টা পরে বিমান ছেড়েছে। কর্মকর্তারা জানিয়েছিলেন, রোমের বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ অনুমতি না দেওয়ায় ফ্লাইটটি বিলম্বিত হয়।’
এ বিষয়ে ফ্লাইটের এক ক্রু নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, ‘ব্যাগেজ এরিয়ায় দুর্গন্ধ ছড়ানোর ঘটনায় নিরাপত্তা কর্মীরা বিমানের কার্গো ডেকও পরিদর্শন করেন। সব পরীক্ষা-নিরীক্ষা শেষে আমাদের ফ্লাইট ছাড়ার অনুমতি দেওয়া হয়।’
তিনি আরও বলেন, ‘বাংলাদেশ থেকে ইতালির দূরত্ব প্রায় ৬ হাজার ৯০০ কিলোমিটার। এত দীর্ঘ যাত্রায় অনেক খাবার নষ্ট হয়ে যায়। সেখান থেকেই দুর্গন্ধের উৎপত্তি।’
উল্লেখ্য, আন্তর্জাতিক বেসামরিক বিমান চলাচল বিধি অনুযায়ী, পচনশীল খাদ্যপণ্য পরিবহনে কড়াকড়ি রয়েছে। এসব পণ্য সঠিক নিয়মে না বহন করলে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ তা বাজেয়াপ্ত করতে পারে।
এ ঘটনায় প্রশ্ন উঠেছে, কীভাবে এসব খাদ্যপণ্য ঢাকার বিমানবন্দর থেকে ছাড়পত্র পেল? যাত্রীদের সচেতনতার অভাবের দিকেও আঙুল তুলেছেন অনেকে।
রোম প্রবাসী ব্যবসায়ী রাশেদুল ইসলাম বলেন, ‘কোন পণ্য বহন করা যায়, আর কোনটি যায় না—সেসব বিষয়ে যাত্রীদের আগে থেকেই সঠিক তথ্য জানানো হলে হয়তো এ ধরনের সমস্যা আর হবে না।’