
ময়মনসিংহের ত্রিশাল-ফুলবাড়ীয়া সড়কের ত্রিশাল পোড়াবাড়ী বাজারে খিরু নদীর উপর বেইলি ব্রিজটি পণ্যবাহী ট্রাক পারাপারের সময় পাটাতন ভেঙ্গে ব্রিজের মাঝখানেই আটকে যায়। বুধবার সন্ধায় এ ঘটনার পর থেকেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়েছে দুই উপজেলার যান চলাচল। এতে স্থবির হয়ে পড়েছে দু’পারের ব্যবসায়ীদের বাণিজ্য।
জানা যায়, উপজেলা সদর হতে মঠবাড়ি, মুক্ষপুর ইউনিয়নসহ ফুলবাড়ীয়া উপজেলার দক্ষিণাঞ্চল ও টাঙ্গাইল জেলার ঘাটাইল, ভালুকার সাগরদীঘি যাতায়াতের একমাত্র সড়কে অবস্থিত ১৯৮২ সালে নির্মাণ করা হয়। ২৪২ ফুট দীর্ঘ ও ১৪ ফুট প্রস্থের ব্রিজটি নির্মাণের ১০-১২ বছর পরই এর অনেকগুলো পাটাতনে মরিচা পড়ে ভাঙ্গতে শুরু করে। দীর্ঘদিন ধরে জোড়াতালি দিয়ে চালানো হলেও প্রায়ই দুর্ঘটনা ঘটে এবং এতে আহত হচ্ছেন অনেকে। ভারি যানবাহন চলাচলের সময় পাটাতন ভেঙ্গে যাওয়ার ঘটনা ঘটেছে বেশ কয়েকবার। বিকল্প কোনো ব্যবস্থা না থাকায় ঝুঁকিপূর্ণ এ ব্রিজ দিয়েই চলাচল করতে হচ্ছে দুই পারের সাধারণ মানুষ ও শিক্ষার্থীদের।
এছাড়া ব্রিজ দিয়ে ভারি যানবাহন চলাচল নিষেধ হলেও তা উপেক্ষা করে প্রতিদিন কয়েকশ ভারি যান চলাচল করছে। এ ব্যাপারে কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি।
মঠবাড়ি ইউনিয়নের অধিকাংশ স্থানে মাছের ফিশারি থাকায় প্রতিদিন ৫ শতাধিক মাছের গাড়ি চলাচল করে এ ব্রিজ দিয়ে। পাটাতন ভেঙ্গে যাওয়ায় বেকায়দায় পরেছে দু’পারের মাছ ও অন্য ব্যবসায়ীরা।
স্থানীয়রা জানায়, ব্রিজের বিভিন্ন স্থানে ভাঙ্গা থাকার কারণে গত কয়েক বছরে ঘটে যাওয়া ছোট বড় দুর্ঘটনায় এ পর্যন্ত কয়েকশ মানুষ আহত হয়েছেন। অনেকেই পঙ্গুত্ব বরণ করছেন। এখন ব্রিজটি ছাড়া দুপারের কয়েক হাজার মানুষের জীবন যাত্রা স্থবির হয়ে যাবে।
এ ব্যাপারে ইউপি চেয়ারম্যান আব্দুল কদ্দুছ মন্ডল জানান, একটি নতুন ব্রিজের আবেদন নিয়ে বিভিন্ন দফতরে দৌড়ঝাপ করছি যেন এই এলাকার জনদুর্ভোগ দূর হয়। তবে এই মুহূর্তে ব্রিজটি সংস্কার না করলে যে কোনো সময় বড় দুর্ঘটনা ঘটতে পারে। মানুষ উপায় না পেয়েই ব্রিজটি দিয়ে চলাচল করে। এই অঞ্চলের লক্ষাধিক মানুষের চলাচলের একমাত্র মাধ্যম এই ব্রিজ।
ত্রিশাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, উপজেলা প্রকৌশলীর সঙ্গে কথা বলে মেরামতের বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। সাময়িকভাবে মানুষ চলাচলের উপযোগী করার জন্য দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে।
উপজেলা প্রকৌশলী মনিরুজ্জামান জানান, গত বছর সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তা সাময়িকভাবে মেরামত করেছিলেন। ইতিমধ্যে ব্রিজটি ভালভাবে মেরামতের জন্য ২৫ লাখ টাকা বরাদ্দ দিয়ে টেন্ডার আহবান করা হয়েছে। আশা করি আগামী মাসের শুরুর দিকে কাজ শুরু করা যাবে।