তিমির বনিক,মৌলভীবাজার থেকে: কারো মাস্ক পকেটে, কারো থুতনিতে আবার কারো মাস্ক সঙ্গে না থাকায় পাশের দোকান থেকে কিনছেন। সামনে ম্যাজিস্ট্রেট, চলছে অভিযান এমন খবর শুনেই তড়িঘড়ি করে মাস্ক পড়তে দেখা যায় অনেককে। এমন চিত্র দেখা যায় মৌলভীবাজার জেলা শহর থেকে শুরু করে উপজেলা গুলোতে ও।
করোনা মোকাবিলায় সরকারি বিভিন্ন উদ্যোগের পাশাপাশি জনসাধারণকে সচেতন করা, মাস্ক পড়া ও স্বাস্থ্যবিধি মানাতে চলছে নিয়মিত অভিযান। অভিযান পরিচালনা করে আসছেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটগণ। যে স্থানে অভিযান চলে সেই স্থানে প্রশাসনের সরব উপস্থিতি দেখেই মাস্ক পড়তে দেখা যায় অনেকেই।
রোজ বুধবার সকাল থেকে শুরু হওয়া বিকেল গড়িয়ে সন্ধ্যা অবধি সচেতনতা অভিযান শহরের সাইফুর রহমান সড়কে মাস্ক পড়া ও সচেতনতার লক্ষ্যে পরিচালনা করেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অর্ণব মালাকার ও ঊর্মি রায়। এই অভিযানে মাস্ক না পড়ার কারণে সকল শ্রেণিপেশার মানুষকে জরিমানা ও তা আদায় করা হয়।
অভিযান দেখলেই মানুষ মাস্ক পড়ছেন, অন্যথায় পড়ছেন না। এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঊর্মি রায় বলেন, ‘এটাও আমাদের একটা সফলতা বলা যায়। ভয়ে হলেও তো মানুষের মাস্ক পড়ার অভ্যাস হচ্ছে।’
তিনি জানান, আমাদের মানুষজন অনেক অসচেতন, তারা মাস্ক পড়তে চান না। মাস্ক না পড়ার পক্ষে অনেক যুক্তি দেখান তারা। তবে আমাদের নিয়মিত অভিযানের ফলে অনেকের মধ্যে সচেতনতা তৈরি হচ্ছে। মাস্ক পড়ার অভ্যাস হচ্ছে এবং মাস্ক পড়ার সংখ্যা আগের চেয়ে অনেক বেড়েছে।
সিএনজি চালক লিটন মিয়া জানান, আমার গাড়িতে থাকা যাত্রীকে মাস্ক না থাকায় ম্যাজিস্ট্রেট জরিমানা করেছেন। আমার মাস্ক থাকায় আমাকে জরিমানা করেন নি। তবে ম্যাজিস্ট্রেট আমাকে বলেছেন মাস্ক ছাড়া গাড়িতে যাত্রী না তুলতে।
জরিমানার শিকার হওয়া নাহিদ হোসেন জানান, ভুলে মাস্ক বাসায় রেখে এসেছি। ম্যাজিস্ট্রেট মাস্ক ছাড়া পেয়ে ২০০ টাকা জরিমানা করেছেন। পরবর্তীতে মাস্ক নিয়মিত পড়বো, এ ভুল আর হবে না। মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট অর্ণব মালাকার জানান, স্বাস্থ্যবিধি প্রতিপালনে আমরা নিয়মিত অভিযান পরিচালনা করছি। জেলা শহরে প্রতিদিন সকাল ও বিকেলে দুইধাপে ৯টি টিম বের হচ্ছে। করোনা মোকাবিলায় ও স্বাস্থ্যবিধি মেনে জনসচেতনতার লক্ষ্যে আমাদের কাজ অব্যাহত থাকবে।
এদিকে মৌলভীবাজার সিভিল সার্জন অফিসের তথ্য অনুযায়ী বুধবার জেলায় ১২৮ জনের নমুনা পরিক্ষায় করোনা আক্রান্ত হয়েছেন ১৫ জন। আক্রান্তের হার ১১ দশমিক ৭ শতাংশ। জেলায় এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন মোট ৯ হাজার ৭৩৬ জন। সুস্থ হয়েছেন মোট ৭ হাজার ৬৪৭ জন এবং এ জেলায় মোট মারা গেছেন ৭২ জন।