তিমির বনিক,মৌলভীবাজার থেকে: জলাবদ্ধতা নিরসনের পর মৌলভীবাজারের হাওরে বাড়ছে বোরো ধানের চাষ। এর কারণে চাষে মনোযোগী হয়েছেন কৃষকরা। জেলার হাওরগুলোতে চলছে বোরো চাষের ব্যস্ততা। হাকালুকি, কাওয়াদীঘি, হাইল হাওরসহ ছোট-বড় হাওরের উজান-ভাটিতে এখন চলছে বোরো চাষাবাদের উৎসব। বাজারে ধানের দাম বৃদ্ধি ও আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় এবছর জেলায় বোরো চাষে আগ্রহ বেড়েছে কৃষকদের। জেলা কৃষি বিভাগের তথ্যমতে, এবছর বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৫৬ হাজার ৮০০ হেক্টর। এর মধ্যে হাওরে ২৭ হাজার ৮০০ হেক্টর ও সমতল ভূমিতে ২৯ হাজার হেক্টর।
কাওয়াদীঘি হাওর ঘুরে দেখা যায়, প্রচণ্ড শীত উপেক্ষা করে জমি প্রস্তুত ও রোপণের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন চাষিরা। কেউ সেচের জন্য নালা তৈরি করছেন, আবার অনেকে তৈরি জমিতে পানি সেচ দিয়ে ভিজিয়ে রাখছেন। আনুষঙ্গিক কাজ শেষ করে কেউবা বীজতলা থেকে চারা তুলে তা জমিতে রোপণ করছেন।
এসময় কৃষকদের সঙ্গে কথা হলে তারা জানান, হাওরে এবছর বোরো আবাদ বেশি হয়েছে। বিগত কয়েক বছর জলাবদ্ধতার কারণে হাওরে পতিত জমিতে এবছর বোরো রোপণ করেছেন কৃষকরা। প্রায় ৭ বছর ধরে হাওরে নিচু এলাকা জোর কান্দি, লামা কান্দি, পিয়ালার পার, উলাউলি, জুলঘাট, বলদা বলিছিরা, হিয়ালিমুড়া, কুশুয়া বিলের পার, মাঝের বান্দসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় কৃষকরা চাষাবাদ করতেন না। জমিগুলো পতিত অবস্থায় থাকত। এতে রাখালরা গরু-মহিষ চড়াত।
কাওয়াদীঘি হাওর পাড়ের কৃষক জগলু মিয়া বলেন, ধানের দাম আগের চেয়ে বেশি হওয়ায় আমরা কৃষকেরা আগ্রহ নিয়ে বোরো চাষ করছি। কৃষক শাহিন আলমের সাথে কথা বলে জানা যায়, হাওরে জলাবদ্ধতার অবসান হয়েছে। এবছর হাওরের পানি আগাম কমে যাওয়ায় হাওরের পতিত নিচু এলাকা জোড় কান্দি, পিয়ালার পার, বলদা বলিছিড়া, কুশুয়া মাজের বান্দসহ বেশ কিছু এলাকায় কয়েক হাজার বিঘা জমিতে এবছর বোরো রোপণ হয়েছে। আমি জোর কান্দি এলাকায় ৭ বিঘা জমিতে বোরো রোপণ করেছি।
মৌলভীবাজার জেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক কাজী লুৎফুল বারী বলেন, বৈরী আবহাওয়া না থাকলে এবছর বোরো ফসলের ফলন ভালো হবে। ধানের দাম বাড়ায় কৃষকেরা ধান চাষে আগের চেয়ে অনেক বেশি আগ্রহী হয়েছেন। আমরা সার্বক্ষণিক নজরদারি রাখছি, মাঠ ঘুরে তাদের সমস্যার কথা শুনে পরামর্শও দিচ্ছি। এবছর জেলায় ৩৫ হাজার কৃষকদের আমরা সার ও বীজ, কিটনাশক দিয়েছি।