মৃত প্রবাসীর পরিবারকে ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ডে থেকে তিন লাখ ৩৫ হাজার টাকার পরিবর্তে অনুদান ১০ লাখ টাকা দেয়ার দাবিসহ মোট ১৮ দফা দাবি জানিয়ে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন সৌদি প্রবাসী বাংলাদেশীরা।
সম্প্রতি হাইল, সৌদি আরব আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণের জন্য দাবিগুলো তুলে দেয়া হয় বলে জানা গেছে।
দাবিগুলো হচ্ছেÑ প্রবাসীদের ন্যাশনাল আইডি কার্ড দ্রুত দেয়া। বাংলাদেশ ও প্রবাসে সরকারি কাজ করতে গেলে এ কার্ড খুবই জরুরি। প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের ওয়েজ আর্নার্স কল্যাণ বোর্ড থেকে মৃত প্রবাসীর পরিবারকে মাত্র তিন লাখ ৩৫ হাজার টাকা অনুদান দেয়া হয়, যা বর্তমান সময়ে খুবই সামান্য। তাই এটি বৃদ্ধি করে ১০ লাখ টাকায় করা। রেমিট্যান্স পাঠানোর ওপর ভিত্তি করে প্রবাসী পেনশন স্কিম চালু করা। স্বাস্থ্যবীমা (মেডিক্যাল ইন্স্যুরেন্স) নিশ্চিত করে প্রবাসে এবং দেশে স্বল্প খরচে ভালো মানের হাসপাতালে চিকিৎসা নেয়ার ব্যবস্থা করা, দেশে সরকারিভাবে প্রতিটি জেলায় এবং উপজেলায় প্রবাসী হাসপাতাল তৈরি করা, যেন প্রবাসীর পরিবার স্বাস্থ্যসেবা নিতে পারে। প্রবাস থেকে দেশে ফেরত কর্মীদের স্বল্প সময়ের মধ্যে পুনর্বাসনের ব্যবস্থা করা। নারী কর্মীদের বিদেশে পাঠানোর জন্য এজেন্সিগুলোর নির্ধারিত বয়স ও তাদের যথাযথ প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করা হয়েছে কি না তা অভিজ্ঞ অফিসার দিয়ে তদারকি করা। গাফিলতি থাকলে এজেন্সির বিরুদ্ধে জরুরি ব্যবস্থা নেয়া। প্রবাসে অসহায় নারী শ্রমিকদের জন্য দূতাবাসের আশ্রয় কেন্দ্রে সুযোগ-সুবিধা বাড়ানোর পাশাপাশি তাদের অল্প সময়ের মধ্যে দেশে ফেরত পাঠানোর ব্যবস্থা করা।
প্রবাসী শ্রমিকদের লাশ দেশে পাঠানোর ক্ষেত্রে সরকারিভাবে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেয়া। প্রবাসীদের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য দূতাবাসের আইনি পরামর্শ ও সহায়তা কার্যক্রমের পরিধি বাড়ানো। পাসপোর্ট নবায়নে আগের মতো দূতাবাসে কনসুলার সেবা চালু করা। প্রবাসী সেবা কেন্দ্রগুলোর সেবার মান বাড়ানোর ব্যাপারে দূতাবাসের কর্মকর্তাদের দিয়ে দৈনিক মনিটরিং করা। প্রবাসফেরত পরিবারের সন্তানদের দেশের ভালো শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রবাসী কোটাভিত্তিক ভর্তির সুযোগ দেয়া। বাংলাদেশে বিনিয়োগে আগ্রহী প্রবাসীদের জন্য ওয়ানস্টপ সার্ভিস চালু করা। বিমানবন্দরে প্রবাসীদের হয়রানি বন্ধ করা। বাংলাদেশ বিমানের টিকিট ও লাগেজ সিন্ডিকেটদের মাধ্যমে প্রবাসী যাত্রী হয়রানি বন্ধ করা। সপ্তাহে অন্তত একটি বাংলাদেশ বিমানের ফ্লাইট চালু করা। হাইলে বাংলাদেশের যেকোনো একটি ব্যাংকের শাখা খোলা। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীকে নিয়ে যারা কটূক্তি করেন তাদের আইনের আওতায় আনা এবং বাংলাদেশে সরকারি ইপিজেডগুলোতে প্রবাসীদের ব্যবসা করার সুবিধার মাধ্যমে বিনিয়োগের ব্যবস্থা করা।
জেলহত্যা দিবস উপলক্ষে সৌদি আরবের হাইলে আয়োজিত আলোচনা সভা ও দোয়া অনুষ্ঠানে প্রবাসী বাংলাদেশীরা উল্লিখিত ১৮ দাবি জানিয়ে স্মারকলিপিটি সৌদি আরবে বাংলাদেশের রাষ্ট্রদূত ড. মোহাম্মদ জাবেদ পাটোয়ারীর হাতে তুলে দিয়েছেন বলে গণমাধ্যমে খবর এসেছে। তারা মনে করছেন, তাদের দাবিগুলো প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত পৌঁছাবে এবং সেটি দ্রুত বাস্তবায়ন হবে।