চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের (চবি) ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদ থেকে ইতিহাসবিদ অধ্যাপক ড. মুনতাসীর মামুনের নিয়োগ বাতিল করা হয়েছে। ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ থেকে তার নিয়োগ বাতিল করে গত ১৯ অক্টোবর চিঠি পাঠায় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়, “২০২৫ সালের ৯ মার্চ অনুষ্ঠিত ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ নির্বাহী কমিটির সপ্তম সভায় দুই নম্বর সিদ্ধান্ত অনুসারে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদে আপনার নিয়োগ ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ তারিখ থেকে বাতিল করা হলো। ওই তারিখের পরবর্তী আপনাকে পরিশোধিত সমুদয় অর্থ চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ফেরত প্রদানের জন্য অনুরোধ করা হলো।”
এতে আরও বলা হয়, এই সিদ্ধান্ত বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫৬২তম সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদন পায় গত ১ অগাস্ট।
২০২৪ সালের ১১ নভেম্বর বঙ্গবন্ধু চেয়ার নির্বাহী কমিটির ষষ্ঠ সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে মুনতাসীর মামুনের বক্তব্য চাওয়া হয়েছিল এবং তিনি লিখিত উত্তর দিয়েছিলেন।
২০২১ সালের ফেব্রুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের ৫২৯তম সিন্ডিকেট সভায় মুনতাসীর মামুনকে এই পদে নিয়োগ দেওয়া হয়। ২০২১ সালের ১৫ মার্চ তিনি পদে যোগ দেন এবং বিশ্ববিদ্যালয়ের বিধি অনুসারে প্রথম শ্রেণির অধ্যাপকের সব সুযোগ-সুবিধা পেতে থাকেন।
বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা যায়, নিয়োগের পর থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত ৪৩ মাসে মোট ৬০ লাখ টাকা বেতন-ভাতা নিয়েছেন। প্রতি মাসে এক লাখ ৩৯ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। অর্থাৎ ২০২৩ সালের ১৫ মার্চ থেকে ২০২৪ সালের সেপ্টেম্বর পর্যন্ত তাকে মোট ১৭ মাস ১৫ দিনের অর্থ ফেরত দিতে হবে। টাকার অঙ্কে তাকে ২৪ লাখ ৩২ হাজার ৫০০ টাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে ফেরত দিতে হবে।
চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদটি সৃষ্টি করা হয় বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের জীবন ও কর্ম নিয়ে গবেষণা এবং স্মৃতি সংরক্ষণের জন্য। এর আগে ২০১৯ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ইফতেখার উদ্দিন চৌধুরী এই পদে দায়িত্ব নেন। তবে ২০২০ সালের সেপ্টেম্বরে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ তাকে ওই পদবি ব্যবহার না করার নির্দেশ দেয়।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপউপাচার্য অধ্যাপক শামীম উদ্দিন খান গণমাধ্যমকে বলেন, ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার পদে উনার (মুনতাসীর মামুন) নিয়োগ বাতিলের সর্বসম্মত সিদ্ধান্ত হয়েছে সিন্ডিকেট সভায়। এ বিষয়ে চিঠি দেওয়া হয়েছে এবং তারিখ উল্লেখ করে এর পরে দেওয়া অর্থ ফেরত দিতে বলা হয়েছে।’
তবে ‘বঙ্গবন্ধু চেয়ার’ পদে মুনতাসীর মামুনের নিয়োগ কেন বাতিল করা হয়েছে এবং তাকে ঠিক কত টাকা ফেরত দিতে হবে, সে বিষয়ে অধ্যাপক শামীম কোনো মন্তব্য করেননি।
