কুষ্টিয়ার ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতির পাশে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের ছবিটি বিকৃত করে দিয়েছে বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ কুষ্টিয়া।
গত রোববার বিকেলে কালো কালি দিয়ে ছবিটির ওপর ক্রস চিহ্ন এঁকে দেওয়া হয়। সেই সঙ্গে ছবিটি সরিয়ে ফেলার দাবি জানায় তারা।
বিষয়টি নিয়ে সোমবার বেলা ১১টায় শহরের বঙ্গবন্ধু মার্কেটের সামনে মানববন্ধন করেছেন বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ কুষ্টিয়ার নেতা–কর্মীরা। সেখানে সংগঠনের জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক আরিফুজ্জামান খান বলেন, ‘মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বলেছেন বঙ্গবন্ধুকে হত্যায় প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িত খুনি জিয়া। একটি পত্রিকায় দেখতে পেলাম ভেড়ামারায় মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভে বঙ্গবন্ধুর ছবির পাশে জিয়ার ছবি রয়েছে। বঙ্গবন্ধুর পাশে একজন খুনির ছবি থাকতে পারে না। আমরা (মুক্তিযোদ্ধা মঞ্চ) প্রতিবাদস্বরূপ ছবির ওপর কালো কালির ক্রস চিহ্ন দিয়েছি। বঙ্গবন্ধুর প্রতিকৃতির পাশ থেকে জিয়ার ছবি সরিয়ে ফেলার দাবি জানাচ্ছি।’
এ ঘটনার প্রতিবাদে সোমবার বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করেছে ভেড়ামারা উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন। মানববন্ধনে ভেড়ামারা শহরের বাসিন্দা জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তৌহিদুল ইসলাম আলম বলেন, শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের নামে স্থানীয় একটি পত্রিকায় অসত্য ও মিথ্যা সংবাদ পরিবেশন করা হয়েছে। এরপরই ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতিস্তম্ভে শহীদ জিয়ার ছবি বিকৃত করা হয়েছে। ছবি বিকৃত করার ঘটনায় জড়িত ব্যক্তিদের আইনের আওতায় আনার দাবি জানান তিনি। জিয়াউর রহমানের ছবি বিকৃতের প্রতিবাদ জানিয়ে কুষ্টিয়া জেলা শহরে গতকাল এনএস রোডে বিক্ষোভ করেছে জেলা ছাত্রদল।
জেলা পরিষদের অর্থায়নে ২০০৪-০৫ অর্থবছরে ভেড়ামারা উপজেলা পরিষদ চত্বরে মুক্তিযুদ্ধের স্মৃতিস্তম্ভের নির্মাণ শুরু হয়। ২০০৫ সালে নির্মাণকাজ সমাপ্ত হয়।
কুষ্টিয়া-২ আসনের সেই সময়ের বিএনপির সাংসদ শহীদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ‘সম্পূর্ণ রাজনৈতিক হীনম্মন্যতায় এ ঘটনা ঘটানো হয়েছে। আমি নিজে এই স্মৃতিস্তম্ভ করেছিলাম। শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরাল করার কথা বলেছিলাম। ইচ্ছা করলে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরাল নাও রাখতে পারতাম, কিন্তু হীনম্মন্যতার পরিচয় দেইনি। এত দিন পর কেন এ ঘটনা ঘটানো হলো, সেটা বোধগম্য হচ্ছে না। প্রকৃত আওয়ামী লীগ যারা করে, তারা এটাকে সমর্থন করবে না।’
উৎসঃ প্রথম আলো