স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বলেছেন, মিয়ানমার সীমান্তে অব্যাহত উত্তেজনা বৃদ্ধির ফলে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশকে (বিজিবি) আরও শক্তিশালী করা হয়েছে। সীমান্তে বিজিবিকে সতর্ক রাখা হয়েছে। আশা করি অচিরেই সীমান্তে গোলাগুলি বন্ধ হবে। আমরা মিয়ানমারের সঙ্গে যোগাযোগ রেখেছি।
মঙ্গলবার সকালে রাজশাহী পুলিশ লাইনে পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ স্মৃতি জাদুঘর উদ্বোধনকালে দেওয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, মিয়ানমারের আরাকান অঞ্চল নিয়ে অনেক দিন ধরেই জাতিগত জটিলতা চলছে। আরাকানের রোহিঙ্গা সম্প্রদায়কে অন্যায়ভাবে তাদের ভূমি থেকে উচ্ছেদ করা হয়েছে। প্রায় ১২ লাখের বেশি রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠী এখন বাংলাদেশের আশ্রয়ে আছেন। এখন আমরা শুনছি, আরাকান আর্মি নামে আরেকটা সশস্ত্র গোষ্ঠীর সঙ্গে মিয়ানমারের সশস্ত্র বাহিনী সংঘর্ষে লিপ্ত হচ্ছে। উভয়ের আক্রমণ ও পাল্টা আক্রমণকালে কিছু কিছু গোলা আমাদের সীমানার ভেতরে এসে পড়ছে। আমরা ঘটনা সম্পর্কে সতর্ক ও সজাগ আছি।
তিনি আরও বলেন, সীমান্তে এভাবে গোলা এসে পড়ার বিষয়ে আমাদের বিজিবি মিয়ানমার পক্ষের কাছে জোরালো প্রতিবাদ করেছে। আমাদের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ও ঢাকায় নিয়োজিত ওই দেশের রাষ্ট্রদূতকে ডেকে কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছেন। এ নিয়ে দুদেশের সব পর্যায়েই আলোচনা ও কথাবার্তা হচ্ছে। আশা করি এ ধরনের গোলাগুলি অচিরেই বন্ধ হবে।
রাজশাহীতে সম্প্রতি বরেন্দ্র উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের দপ্তরে সাংবাদিকদের ওপর হামলা প্রসঙ্গে এক প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, যারা সাংবাদিকদের ওপর হামলা চালিয়েছেন তাদের আইনের মুখোমুখি হতে হবে। আমরা ঘটনার বিষয়ে অবগত আছি। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর কাছে অভিযোগ হয়েছে। আইনানুযায়ী সব পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
গত ৫ সেপ্টেম্বর বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন কর্তৃপক্ষের (বিএমডিএ) কার্যালয়ে হামলার শিকার হন এটিএন নিউজের দুই সাংবাদিক। এ নিয়ে দুজন কর্মচারীকে সাময়িক বরখাস্ত করেছে বিএমডিএ। ঘটনার পর ভুক্তভোগী সাংবাদিকের পক্ষ থেকে মামলা করা হলেও এ পর্যন্ত কেউ গ্রেফতার হননি।
এদিকে পুলিশ লাইনে পুলিশ মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘর উদ্বোধন শেষে শহিদ মামুন মাহমুদ পুলিশ লাইন স্কুল মাঠে আয়োজিত মাদক ও জঙ্গিবিরোধী পৃথক এক সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে যোগ দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী। সেখানে ‘মুক্তিযুদ্ধে রাজশাহী পুলিশ’ নামে একটি বইয়ের মোড়ক উন্মোচন করেন তিনি।
সমাবেশে শহিদ পুলিশ ও বীর মুক্তিযোদ্ধা পুলিশ পরিবারের সদস্যদের সংবর্ধনা দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন আরএমপি কমিশনার আবু কালাম সিদ্দিক।
বিশেষ অতিথি ছিলেন রাজশাহী সিটি করপোরেশনের মেয়র এএইচএম খায়রুজ্জামান লিটন, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব আখতার হোসেন, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার জিএসএম জাফরউল্লাহ, পুলিশের রাজশাহী রেঞ্জের উপ-মহাপরিদর্শক (ডিআইজি) আবদুল বাতেন, জেলা প্রশাসক আবদুল জলিল ও জেলার পুলিশ সুপার (এসপি) এবিএম মাসুদ হোসেন প্রমুখ।