প্রবাস ডেস্কঃ মালদ্বীপে করোনা আক্রান্ত হয়ে একজন বাংলাদেশি মারা গেছেন। গতকাল তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। মালেতে নিযুক্ত বাংলাদেশের হাই কমিশনার রিয়ার এডমিরাল মোহাম্মদ নাজমুল হাসান মানবজমিনকে এ তথ্য নিশ্চিত করেন। জানান, দেশটিতে এ পর্যন্ত ২৮২ বাংলাদেশি করোনায় আক্রান্ত হয়েছেন। তাদের অবস্থা স্থিতিশীল। তবে এই প্রথম কোন বাংলাদেশিকে হাসপাতালে নিতে হয়েছে এবং তার মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে।
উল্লেখ্য, বৈশ্বিক মহামারি করোনায় বিভিন্ন দেশে প্রায় ১০ হাজারের বেশি বাংলাদেশিরা আক্রান্ত। মারা গেছেন ৪৫০ এর অধিক।
মালদ্বীপে করোনার চেয়ে বড় বিপদ হচ্ছে হাজার হাজার বাংলাদেশি কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। তারা চরম খাদ্য সঙ্কটে আছেন। বলা যায়, মালদ্বীপের পরিস্থিতি রীতিমত ত্রাহী অবস্থায় পৌঁছেছে। তাদের অন্তত দু’বেলা খাবারের সংস্থান করতে চেষ্টা করছে বাংলাদেশ সরকার। সেই প্রচেষ্টার অংশ হিসাবে দেশটিতে জরুরি ভিত্তিতে ত্রাণ সামগ্রী পাঠানো হয়েছে। নৌ বাহিনীর একটি জাহাজে পাঠানো সামগ্রীর মধ্যে ছিল চাল, ডাল, আলু, পিয়াজ, ডিম এবং সবজি মিলিয়ে মোট ৮৫ টন খাদ্য সামগ্রী এবং স্যানিটাইজার, জরুরি ঔষধপত্র ও মাস্কসহ অন্যান্য সুরক্ষা সামগ্রী।
পররাষ্ট্র ও প্রবাসী কল্যাণ মন্ত্রণালয় এবং মালের বাংলাদেশ মিশনের দায়িত্বশীল সূত্রগুলো জানিয়েছে, মালদ্বীপে চরম খাদ্য সঙ্কটে দিনাতিপাত করা বাংলাদেশি হাজার হাজার শ্রমিকের মধ্য থেকে রেড ক্রিসেন্টের সহায়তায় কিছু সংখ্যক (১৫০০ জন) শ্রমিকের মাঝে জরুরি ভিত্তিতে দূতাবাস প্রতিদিন খাদ্য বিতরণ করছে। তবে অভুক্তের সংখ্যা বেশি হওয়ায় তাদের নিয়ে চরম দুশ্চিন্তায় মিশনের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।
মালদ্বীপ সরকার অবৈধ বিদেশিদের নিজ নিজ দেশে ফেরাতে চাপ দিচ্ছে বহুদিন ধরে। তারা অবৈধদের রেজিস্ট্রেশন বা নিবন্ধনের একটি সূযোগ বা জানালা খুলেছিল। সেখানে প্রায় ৩৮ হাজার বাংলাদেশি রেজিস্ট্রেশন করেছেন। কিন্ত কমিউনিটি সূত্রের খবর অনিবন্ধত বা রেজিস্ট্রেশনের বাইরে আরও অন্তত ১৫-২০ হাজার বাংলাদেশি রয়েছেন।
অবৈধদের ফেরানোর চাপ দিনে দিনে জোরালো হচ্ছে জানিয়ে ঢাকার এক কর্মকর্তা বলেন, করোনা পরিস্থিতি যেন সেই চাপ বা আগুনে ঘি ঢালতে শুরু করেছে। করোনায় কর্মহীন বৈধ বাংলাদেশিদেরও এখন ১-২ মাসের আগাম বেতন দিয়ে ছুটিতে দেশে পাঠানোর নতুন চেষ্টা শুরু করেছে মালদ্বীপ সরকার। ঢাকার তরফে মানবিক কারণে তাদের এখনই না পাঠানোর অনুরোধ করা হয়েছে।