ভারতের উত্তরপ্রদেশের ‘সুপারটেক টুইন টাওয়ার’ ভেঙে ফেলা হয়। নয়ডা’র এই যমজ অট্টালিকাটি প্রথম থেকেই বিতর্কের কেন্দ্রবিন্দুতে ছিল। বেআইনিভাবে নির্মাণের অভিযোগ ছিল স্থাপনাটির বিরুদ্ধে। শেষ পর্যন্ত ২০২২ সালের ১২ অগস্ট দেশটির সুপ্রিম কোর্ট নির্দেশ দেয়, ২৮ আগস্ট ভেঙে ফেলতে হবে ভবনটি।
রোববার (২৮ আগস্ট) ভারতীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে ভেঙে ফেলা হয় জমজ অট্টালিকাটি
৩,৭০০ কেজি বিস্ফোরক দিয়ে মাত্র ৯ সেকেন্ডেই গুঁড়িয়ে ফেলা হয় বিশালাকার এই ভবন। ভেঙে ফেলতে খরচ হয় প্রায় ২০ কোটি রুপি।
রোববার সকালে শেষ মহূর্তের তৎপরতা দেখা গিয়েছিল ভবনটি ঘিরে। এটি ভাঙতে গিয়ে যেন কোনও দুর্ঘটনা না ঘটে, সে জন্য একাধিক সতর্কতামূলক পদক্ষেপ নেওয়া হয়েছিল।
চলুন দেখে নেওয়া যাক সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত অট্টালিকাটি ভাঙার আগে কোন সময়ে কী করা হয়েছিল-
সকাল সাড়ে ৬টা: ফ্ল্যাটগুলোতে পাইপলাইনে গ্যাসের সরবরাহ বন্ধ করে দেওয়া হয়েছিল।
সকাল ৭টা: অট্টালিকা সংলগ্ন এলাকার বাসিন্দাদের নিরাপদ স্থানে সরানোর কাজ শুরু হয়। আশপাশের সমস্ত রাস্তা বন্ধ করে দেওয়া হয়।
সকাল ৯টা: অট্টালিকা চত্বর ও তার আশপাশের এলাকা ফাঁকা করে দেওয়া হয়।
সকাল ১১টা: অট্টালিকা চত্বরে যে সমস্ত নিরাপত্তারক্ষী রয়েছেন, তাদের নিরাপদ স্থানে সরানো হয়েছে।
দুপুর ১টা: পরীক্ষা করে দেখার পর অট্টালিকা চত্বর ছেড়েছেন টাস্ক ফোর্সের কর্মকর্তারা।
দুপুর পৌনে ২টা: ভাঙার আগে শেষ মুহূর্তে অট্টালিকা চত্বর আরও এক বার সম্পূর্ণ পরিদর্শন করেছিলেন কর্মকর্তারা।
দুপুর আড়াইটা: ভাঙার কাজ শুরু হয়। দুপুর পৌনে ৩টা: খোলা হবে নয়ডা-গ্রেটার নয়ডা এক্সপ্রেসওয়ে।
বিকেল ৪টা: আশপাশের ফ্ল্যাটগুলোতে পাইপলাইনে গ্যাস সরবরাহ আবার চালু করা হবে। পুরোদমে এই পরিষেবা চালু করতে তিন থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগতে পারে বলে জানানো হয়েছে।
বিকেল সাড়ে ৫টা: সব কিছু খতিয়ে দেখার পর পরিস্থিতি বুঝে আশপাশের বাসিন্দাদের ফেরানো হবে।
ভাঙার আগে আশপাশের বাসিন্দাদের জন্য বিশেষ সতর্কতামূলক পদক্ষেপ করা হয়েছে। অট্টালিকা সংলগ্ন বাসিন্দাদের বাড়ির দরজা-জানলা বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে। বহুতল ভাঙার সময় বাড়ির ছাদে যেতে নিষেধ করা হয়েছে।
আগামী ৩১ অগস্ট পর্যন্ত শহরে ড্রোন ওড়ানোয় নিষেধাজ্ঞাও জারি করেছে নয়ডা পুলিশ।
এর পাশাপাশি অট্টালিকা ধ্বংসের সময় তার এক নটিক্যাল মাইলের (১.৮ কিলোমিটার) মধ্যে কোনও বিমান উড়বে না, নির্দেশিকা জারি করেছিল নয়ডা প্রশাসন। ধ্বংসের জেরে ধুলোর আস্তরণ পড়তে পারে, তাই দমকলের ইঞ্জিন রাখা হয়েছিল। আপৎকালীন পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে রাখা হয়েছিল অ্যাম্বুল্যান্সও।