মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আয়োজিত শোভাযাত্রা পূর্ব সমাবেশে আওয়ামী লীগ নেতৃবৃন্দ দেশি-বিদেশি সকল ষড়যন্ত্র মোকাবেলার পাশাপাশি, সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখে দেওয়ার অঙ্গীর ব্যক্ত করেছেন।
তারা বলেন, একাত্তরের খুনি, পঁচাত্তরের খুনিদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। খুনিদের আমরা পরাজিত করবো। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখতে হবে। আজকের এই বিজয় র্যালি থেকে আমাদের প্রত্যয় হোক-যেকোনো মূল্যে এই অপশক্তিকে আমরা নির্মূল করবো। এই দেশকে নিয়ে, আমাদের স্বাধীনতাকে নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না।
মহান বিজয় দিবস উপলক্ষে আজ শনিবার বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যান সংলগ্ন ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউটের সামনে আওয়ামী লীগের বিজয় র্যালি পূর্ব সমাবেশে দলটির নেতৃবৃন্দ এ কথা বলেন।
ঢাকা মহানগর উত্তর আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ বজলুর রহমানের সভাপতিত্বে সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক এবং সড়ক পরিবহন ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের, সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরী, ড. আব্দুর রাজ্জাক, শাজাহান খান, জাহাঙ্গীর কবির নানক, আব্দুর রহমান, মোফাজ্জল হোসেন চৌধুরী মায়া বীর বিক্রম ও কামরুল ইসলাম, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ, ডা. দীপু মনি, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আ ফ ম বাহা উদ্দিন নাছিম প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।
আওয়ামী লীগ সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের বলেন, খুনিদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। একাত্তরের খুনি, পঁচাত্তরের খুনিদের বিরুদ্ধে খেলা হবে। খুনিদের আমরা পরাজিত করবো। সাম্প্রদায়িক অপশক্তিকে রুখতে হবে।
বিজয় শোভাযাত্রায় ব্যাপক জনসমাগমের কারণে নিজে মোটর সাইকেলে এসেছেন জানিয়ে তিনি বলেন, আমি মোটরসাইকেলে করে এসেছি। চারদিকে শুধু জনগণ, স্লোগান আর স্লোগান, বুড়িগঙ্গা, ধলেশ^রী, শীতলক্ষার সব ঢেউ যেন ঢাকা মহনগর আওয়ামী লীগের আজকের এই উত্তাল সমাবেশে আছড়ে পড়ছে।
ওবায়দুল কাদের বলেন, আমাদের বন্ধু রাষ্ট্র যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বিভেদ সৃষ্টির উসকানী দিচ্ছে বিএনপি। আমেরিকান দূতাবাসের সঙ্গে আমাদের কোনো টানাপোড়েন হলে কূটনৈতিক ভাবে আমরা এর সঙ্গে ফয়সালা করবো।
নিরাপত্তার বিষয়ে তিনি বলেন, আমি যুক্তরাষ্ট্রসহ সকল দূতাবাসকে আশস্ত করছি- কূটনীতিকদের জন্য নিরাপত্তার কোনো অভাব বাংলাদেশে নেই। শেখ হাসিনার বাংলাদেশে, বঙ্গবন্ধুর বাংলাদেশে সবাই নিরাপদে থাকবেন। যদি কোনো টানাপোড়েন হয়, তার বিচার চাইবে যুক্তরাষ্ট্র। কিন্তু আপনারা এটা বলার কে?
বেগম মতিয়া চৌধুরী বলেন, বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আজ মানুষ অন্নের নিশ্চয়তা পেয়েছে, বস্ত্রের নিশ্চয়তা পেয়েছে। তারা বাসস্থান পেয়েছে। শিক্ষা-চিকিৎসা পাচ্ছে। তাই, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর কন্যার নেতৃত্বে স্বাধীনতা বিরোধী অপশক্তিকে পরাজিত করে আমাদের সামনের দিকে এগিয়ে যেতে হবে।
আব্দুর রাজ্জাক বলেন, আওয়ামী লীগকে ষড়যন্ত্র করে ক্ষমতাচ্যূত করা যাবে না। নির্বাচনে যদি জনগণ ভোট না দেয় আমরা সালাম করে চলে যাব।
শাহজাহান খান বলেন, আজ বিএনপি-জামায়াত ভেংচি মারে। আওয়ামী লীগ কোনো বানরের ভেংচিতে ভয় পায় না। আওয়ামী লীগ জনগণকে সঙ্গে নিয়ে এদের দাঁতভাঙা জবাব দেবে।
জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, আজকে তারা নতুন করে ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। বিএনপি-জামায়াত অরাজকতা সৃষ্টি করে দেশকে অস্থিতিশীল করতে চায়। তাদের এই ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে।
আব্দুর রহমান বলেন, বিএনপি-জামায়াত বাংলাদেশকে পাকিস্তান বানানোর দুঃস্বপ্ন দেখে। বঙ্গবন্ধুর নেতৃত্বে এই দেশ স্বাধীন হয়েছে। তার কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে এই দেশকে সন্ত্রাস, রাজাকার ও জঙ্গিবাদ মুক্ত করবো।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক মাহবুব উল আলম হানিফ বলেন, দেশ যখন এগিয়ে যাচ্ছে তখন ওই পরাজিত শক্তি নতুনভাবে চক্রান্ত-ষড়যন্ত্র শুরু করেছে। এই বিজয়ের মাস থেকেই আমরা ঘোষণা দিতে চাই-পাকিস্তানী দোসর বিএনপি-জামায়াতকে নির্মূল করতে হবে।
দীপু মনি বলেন, আজকের এই বিজয় র্যালি থেকে আমাদের প্রত্যয় হোক-যেকোনো মূল্যে এই অপশক্তিকে আমরা নির্মূল করবো। এই দেশকে নিয়ে, আমাদের স্বাধীনতাকে নিয়ে কাউকে ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া যায় না।
যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এবং তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ডা. হাছান মাহমুদ বলেন, ১০ ডিসেম্বর বিএনপি পরাজিত হয়েছে। পরাজয় মেনে নেয়ার এই ধারাবাহিকতায় আগামী নির্বাচনেও পরাজিত হবে। আমাদের শপথ হচ্ছে পাকিস্তানের দোসর, চর বিএনপি-জামায়াত অপশক্তির কবর রচিত করতে হবে। তাদেরকে নির্মূল করার পাশাপাশি আমরা স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ব।
তিনি বলেন, বিএনপি বলেছিল ১০ তারিখে নাকি সরকারকে বিদায় নিতে হবে। ১০ তারিখে বিএনপিই পরাজিত হয়েছে। ২০১৪ সালের জানুয়ারি প্রথম সপ্তাহে যে জাতীয় নির্বাচন হবে সেই নির্বাচনের ফয়সালা ১০ ডিসেম্বর হয়ে গেছে।
বাহাউদ্দীন নাছিম বলেন, বিএনপি একটা সন্ত্রাসী দল। তাদের কাছে দেশ ও দেশের মানুষ কখনো নিরাপদ নয়। তারা আবারও মাথাচাড়া দিয়ে উঠেছে। এদেরকে প্রতিহত করতে নেতাকর্মীদের সজাগ থাকতে হবে।