বাংলা এক্সপ্রেস ডেস্কঃ ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডবে জয়পুরহাটের ক্ষেতলাল উপজেলার ২০ গ্রামের ঘর-বাড়ি লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। ওপড়ে পড়েছে শত শত গাছ। বিদ্যুতের বেশ কয়েকটি খুঁটি ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ রয়েছে। ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে প্রায় দশ হাজার হেক্টর জমির বোরো ধান। রবিবার (২৪ মে) মধ্যরাতে প্রচণ্ড গতিবেগে আঘাত হানে এই ঘূর্ণিঝড়। বাড়ি-ঘর ও ফসলের ক্ষতি হলেও প্রাণহানির কোনও খবর পাওয়া যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শী ও ক্ষতিগ্রস্ত ব্যক্তিরা জানান, রবিবার রাত দেড়টার দিকে হঠাৎ করে প্রচণ্ড বেগে আঘাত হানে ঘূর্ণিঝড়। সেইসঙ্গে শুরু হয় বৃষ্টি। এতে বাতাসের তীব্রতায় মুহূর্তের মধ্যেই ক্ষেতলাল উপজেলার তুলশীগঙ্গা ইউনিয়নের ঘুগইল, মনঝার, দাশড়া, মালিগাড়ি, কাজিপাড়া এবং ক্ষেতলাল পৌর সদর, কোড়লগাড়ি, রামপুরা, সূর্যবান, বুড়াইল, পাটবাড়ি, মুন্দাইল ও খুঞ্জালসহ ২০ গ্রামের অন্তত হাজারেরও বেশি ঘর-বাড়ি বিধ্বস্ত হয়ে যায়। সড়কের ওপড়ে পড়ে শত শত গাছ। ভেঙে গেছে বৈদ্যুতিক খুঁটি। এতে বন্ধ হয়ে যায় বিদ্যুত সরবরাহ। আর গাছ পড়ে বন্ধ হয়ে গেছে যোগাযোগ ব্যবস্থাও।
প্রচণ্ড বাতাস আর বৃষ্টিতে ১০ হাজার হেক্টর জমির মাঠের বোরো ধানের ক্ষতি হয়েছে। খবর পেয়ে সকালে ফায়ার সার্ভিসের দল এসে রাস্তা থেকে গাছ অপসারণ শুরু করলে ক্ষেতলালের প্রধান সড়কে যোগাযোগ ব্যবস্থা পুনঃস্থাপিত হয়। টর্নেডো শুরুর পর থেকে জয়পুরহাট জেলা শহরসহ ক্ষেতলালে বিদ্যুত সরবরাহ বন্ধ রয়েছে।
মালিগাড়ি গ্রামের শফিক বলেন, ঝড়ের যে এত শক্তি হয় আমার জানা ছিল না। ঝড়ের গতিবেগ দেখে পরিবার নিয়ে তিনি ঘরের কোণে আশ্রয় নিয়েছিলেন।
মুন্দাইল গ্রামের হাবিবুর রহমান বলেন, তার গ্রামের প্রায় সব গাছ-পালা ওপড়ে গেছে। আর কারো বাড়ি-ঘরে টিনের চালা নেই। ঝড়ে সব উড়ে গেছে।
ক্ষেতলাল পৌর সদরের সোবহান তালুকদার বলেন, ‘ঝড়ের তাণ্ডবে আমার পোল্ট্রি ফার্মের প্রায় ৪০০ মুরগি মারা গেছে। আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠানের ঘরের চালা কয়েক’শ গজ দূরে গিয়ে পাওয়া গেছে।’
ক্ষেতলালের ইসলামপুর এলাকার অটোরাইস মিল মালিক বকুল হোসেন বলেন, আতপ চালের জন্য তিনি আলাদা একটি সেড নির্মাণ করে মেশিনপত্রও সেখানে স্থাপন করেছেন। এখনও উদ্বোধন করা হয়নি। ঝড়ে সেই সেডটিও লণ্ডভণ্ড হয়ে গেছে। এতে তার প্রায় ৪০ লাখ টাকার ক্ষতি হয়েছে।
ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরাফাত রহমান বলেন, ঝড়ের তাণ্ডবে উপজেলার শত শত বাড়ি ঘরের টিনের চালা উড়ে গেলেও হতাহতের ঘটনা ঘটেনি। তবে শত শত গাছ ওপড়ে পড়েছে। প্রায় দশ হাজার হেক্টর জমির পাকা ধানের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। তাৎক্ষণিকভাবে ঝড়ে ক্ষতির পরিমাণ কত হতে পারে জানতে চাইলে ইউএনও বলেন, ক্ষতির ব্যাপকতা এত বেশি যে নিরূপণ না করে তাৎক্ষণিকভাবে বলা সম্ভব নয়। তবে ক্ষতির সঠিক পরিসংখ্যান জানতে মাঠে তার লোকজন কাজ করছেন।
উৎসঃ বাংলা ট্রিবিউন