মালয়েশিয়ায় কর্মী রপ্তানির গুরুত্বপূর্ণ সেক্টরকে তছনছ করে দিয়েছে সিন্ডিকেট নামক দানবরা। তিন বছরে সিন্ডিকেট সদস্যরা শ্রমিক রপ্তানি করেছে মাত্র ২ লাখ ৭৫ হাজার টাকা। এদের কারণেই দেশ হারিয়েছে বিলিয়ন ডলার আয়ের সুযোগ। নতুন করে ২৫জনের সিন্ডিকেট মালয়েশিয়ার শ্রম বাজার দখলে নিতে তৎপরতা চালাচ্ছে। ওই সিণ্ডিকেটের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছে সম্মিলিত সমন্বয় ফ্রন্ট, বায়রা। ফ্রন্টের পক্ষ থেকে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের ব্যবস্থাপনা পরিচালকের (এমডি) পদত্যাগ দাবি করেছেন।
গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবে জনশক্তি রপ্তানি সিন্ডিকেট ও টিকিট সিন্ডিকেট অবিলম্বে বন্ধ করার দাবিতে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে সভাপতিত্ব করেন সম্মলিত সমন্বয় ফ্রন্টের সভাপতি ড. মোহাম্মদ ফারুক। বক্তৃতা করেন ফ্রন্টের মহাসচিব মোস্তফা মাহমুদ ও সিনিয়র সহ-সভাপতি রিয়াজ উল ইসলাম, রিস্কুটিং এজেন্সি ঐক্য পরিষদের সভাপতি মো. টিপু সুলতান ও মহাসচিব আরিফুর রহমান প্রমুখ।
সংবাদ সম্মেলনে মালয়েশিয়ায় সিন্ডিকেটের মাধ্যমে জনশক্তি রপ্তানি এবং মধ্যপ্রাচ্যের বিভিন্ন রুটে বিমানের টিকিটের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির প্রতিবাদ জানানো হয়। বলা হয়, সিন্ডিকেটের কারণে হাজার হাজার কোটি টাকা বিদেশে পাচার, অভিবাসী কর্মীদের থেকে অতিরিক্ত অর্থ আদায়, অধিকাংশ ও রফতানিকারকদের ব্যবসা থেকে বঞ্চিত ও লাখ লাখ অভিবাসন প্রত্যাশী কর্মীদেরকে নিশ্চিত চাকরির সুযোগ থেকে বঞ্চিত করছে। আগে ১০জনের সিন্ডিকেট শ্রম বাজার নিয়ন্ত্রণ করতো। তাদের নেতৃত্বে ২৫জনের সিণ্ডিকেট দুই দেশের মন্ত্রীদের ভুল বুঝিয়ে শ্রম বাজার দখলে নিতে চায়। নিয়মতান্ত্রিক আন্দোলনের মাধ্যমে এই সিন্ডিকেট দূর করা হবে।
সংবাদ সম্মেলনে অবিলম্বে জনশক্তি রফতানি সিন্ডিকেট ও টিকেট সিন্ডিকেট বন্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের হস্তক্ষেপ চাওয়া হয়। এছাড়া টিকিট সিন্ডিকেটের জন্য বাংলাদেশ বিমানের এমডিকে দায়ি তাকে দ্রুত অপসারণের দাবি জানানো হয়।
সংবাদ সম্মেলনে মোহাম্মদ ফারুক বলেন, দুই দেশের কিছু দুষ্কৃতকারী বর্তমানে মালয়েশিয়ায় শ্রমিক রপ্তানির সবচেয়ে বড় বাধা। এই ষড়যন্ত্র শুরু হয়েছে ২০১৬ সালের জি-টু-জি প্লাস চুক্তির মাধ্যমে। তারা সরকার নির্ধারিত ফি থেকে কয়েক গুণ বেশি টাকা দিয়ে অভিবাসী কর্মীদের মালয়েশিয়ায় যেতে বাধ্য করেছে। এভাবে তিন বছরে তারা এই সেক্টর থেকে প্রায় ৫ হাজার কোটি টাকা লুট করে নিয়েছে। আর ১২০০ রিক্রুটিং এজেন্সিকে ব্যবসা থেকে বঞ্চিত করেছে। এছাড়া ওই সময়ই সিন্ডিকেটের সদস্যরা ১২ লাখ অভিবাসী কর্মীদের ভুয়া মেডিকেল করে প্রায় ৬০০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে বলে তিনি উল্লেখ করেন।
মহাসচিব মোস্তফা মাহমুদ বলেন, চুক্তি অনুযায়ী কারা ব্যবসা করবে সেটা ঠিক করবে মালয়েশিয়ান সরকার। এটা আমাদের সার্বভৌমত্বের লঙ্ঘন। আমার দেশ থেকে কারা কাজ করবে, সেটা নির্ধারণ করব আমরা। মালয়েশিয়ান সরকার বা অন্য কোনো সরকার নয়। তিনি আরো বলেন, আর্টিফিশিয়াল ক্রাইসিস দেখিয়ে বিমান ভাড়া বাড়ানো হচ্ছে। সরকার কেন এটা তদন্ত করছে না? বাংলাদেশ বিমানসহ কিছু বিদেশি এয়ারলাইনস ও বাংলাদেশি ট্রাভেল এজেন্সির অসাধু কিছু লোক সিন্ডিকেট করে ভাড়া বাড়িয়েছে।