ভারতের আসাম রাজ্যে গণপিটুনিতে নিহত ৩ বাংলাদেশির দুইজনের পরিচয় পাওয়া গেছে। শনিবার রাতে করিমগঞ্জ জেলার পাথারকান্দি সীমান্তবর্তী বুবরীঘাট চা বাগানের বাসিন্দারা গরুচোর সন্দেহে তাদেরকে পিটিয়ে হত্যা করেছে। বিজিবির মাধ্যমে বিএসএফের পাঠানো ছবি দেখে সোমবার বিকেলে দুইজনের লাশ শনাক্ত করেছে তাদের স্বজনরা।
পরিচয় পাওয়া বাংলাদেশিরা হচ্ছে বড়লেখা উপজেলার দাসেরবাজার ইউনিয়নের কাঞ্চনপুর গ্রামের মানিক মিয়ার ছেলে জুয়েল আহমদ (২৬) ও আকদ্দছ মিয়ার ছেলে নুনু মিয়া (৩২)। তারা সম্পর্কে চাচা ভাতিজা এবং পেশায় সিএনজিচালিত অটোরিকশাচালক।
জানা গেছে, ভারতের পাথারকান্দি বুবরীঘাট চা বাগানে শনিবার রাতে গরু চোর সন্দেহে বাগান শ্রমিকরা কয়েক ব্যক্তিকে আটক করে। অমানবিক গণপিটুনিতে তিনজনের মৃত্যু ঘটে। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যান বিএসএফ ১৩৪ ব্যাটালিয়নের অধিনায়কসহ করিমগঞ্জ সীমান্ত শাখার অতিরিক্ত পুলিশ অধিক্ষক প্রশান্ত দত্ত।
প্রশাসনের উচ্চ পর্যায়ের ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে ৩ লাশের পকেটে থাকা বিড়ি, দিয়াশলাই, বিস্কুট, মশার কয়েল, ফেন্সিং কাটার যন্ত্রসহ কিছু নথিপত্র দেখে নিহতদের বাংলাদেশি নাগরিক বলে তারা নিশ্চিত হন।
নিহত জুয়েল আহমদের ভাই সোয়েল আহমদ জানান, তার ভাই ও চাচা সিএনজি চালান। গত কয়েক দিন থেকে বাড়ি ফিরছেন না। ইন্ডিয়ায় ৩ বাংলাদেশি মারা যাওয়ার খবর শুনে জুড়ী থানায় যোগাযোগ করেন। ৩ জনের লাশের ছবির মধ্যে চাচাকে শনাক্ত করি। বাকিগুলো অস্পষ্ট হওয়ায় ওসি অন্য এঙ্গেলের ছবি যোগাড় করে দেখালে ভাইকেও শনাক্ত করি। তারা কবে কীভাবে ভারতে গেছে বলতে পারছেন না তিনি।
জুড়ী থানার ওসি জাহাঙ্গীর হোসেন সরদার জানান, রোববার বিজিবি থেকে ছবি পেয়ে জামকান্দি এলাকায় তন্ন তন্ন করেও ৩ জনের লাশের কারো পরিচয় উদ্ধার করতে পারেননি। কোনো মানুষ মিসিং রয়েছে বলেও কেই বলেনি। পরে বড়লেখা থানার ওসির কাছেও ছবি পাঠিয়ে দেই।
বড়লেখা থানার ওসি মো. ইয়াছিনুল হক জানান, ছবি পেয়েই তিনি বিভিন্ন জায়গায় খোজ নিতে শুরু করেন। বিকালে কাঞ্চনপুর গ্রামের সোয়েল আহমদ নামক ব্যক্তি দুইজনের ছবি শনাক্ত করেছেন।
বিজিবি ৫২ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লে. কর্নেল গাজী শহীদুল্লাহ সোমবার সন্ধ্যায় জানান, ভারতে নিহত অপর বাংলাদেশির পরিচয় জানার চেষ্টা চলছে। অপর দিকে শনাক্ত ২ বাংলাদেশির লাশ দেশে আনার জন্য বিএসএফের সঙ্গে যোগাযোগ চলছে।