বুকে ব্যথা নিয়ে কয়েকটি হাসপাতালে ভর্তির জন্য ছোটাছুটি করতে করতে গাড়ির মধ্যেই মারা গেছেন চট্টগ্রামের আওয়ামী লীগের এক নেতা।
পরিবারের সদস্য ও সংগঠনের নেতারা জানিয়েছেন, মঙ্গলবার বেলা সোয়া ১১টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন বায়েজিদ থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ৫৭ বছর বয়সী শফিউল আলম ছগীর।
প্রথমে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে গেলেও চিকিৎসার পরিবেশ না থাকায় ছগীরকে মেডিকেল সেন্টার নামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিয়ে যান স্বজনরা। সেখানে আইসিইউ বন্ধ ও চিকিৎসক না থাকার অজুহাতে রোগীকে ফিরিয়ে দেয়া হয়।
বায়েজিদ থানাধীন জালালাবাদ ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও স্থানীয় ওয়ার্ড কাউন্সিলর শাহেদ ইকবাল বাবু বিডিনিউজ টোয়েন্টিফোর ডটকমকে বলেন, “ছগীর ভাইয়ের পরিবারের সদস্যরা বলেছেন মেডিকেল সেন্টারের পর তাকে জিইসি মোড় সংলগ্ন মেট্রোপলিটন হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখান থেকেও ফিরিয়ে দেয়া হয়।
“সেখান থেকে পাঁচলাইশের পার্কভিউ হাসপাতালে নিলে সেখানেও ভর্তি নিতে অপরাগতা প্রকাশ করে। পরবর্তীতে আমি নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক সিটি মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিনকে ফোন করলে তার সহযোগিতায় পার্কভিউ হাসপাতালেই ছগীর ভাইকে ভর্তির প্রক্রিয়া চলার মধ্যে গাড়িতেই তার মৃত্যু হয়।”
কাউন্সিলর শাহেদ ইকবাল বলেন, “ছগীর ভাইয়ের বুকে ব্যথা ছিল, করোনাভাইরাসের কোনো উপসর্গ ছিল না। তারপরও তাকে বেসরকারি হাসপাতালগুলো নানা অজুহাত দেখিয়ে ভর্তি নিল না। চিকিৎসা না পেয়েই উনাকে মরতে হয়েছে।”
চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে করোনাভাইরাস ও সাধারণ রোগী ভর্তি করানোর সরকারি নির্দেশ থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণে চট্টগ্রামের অতিরিক্ত বিভাগীয় কমিশনার (উন্নয়ন) মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের নেতৃত্বে বেসরকারি হাসপাতালে কোভিড ও নন কোভিড আক্রান্তদের চিকিৎসা সংক্রান্ত সার্ভিল্যান্স টিম গঠন করা হয়েছে।
কয়েক হাসপাতাল ঘুরেও চিকিৎসা না পেয়ে আওয়ামী লীগ নেতা শফিউল আলম ছগীরের মারা যাওয়ার বিষয়ে দৃষ্টি আকর্ষণ করলে টিমের প্রধান মিজানুর রহমান বলেন, “বিষয়টি আমরা জেনেছি। চিকিৎসা না পেয়ে মৃত্যু দুঃখজনক।
“দ্রুতই বেসরকারি হাসপাতালগুলো তদারকি করা হবে। গত সোমবার নগরীর ১৬টি বেসরকারি হাসপাতালে ৮২৪টি সিট খালি ছিল। তারপরও কেনো রোগী ভর্তি করানো হল না তা খতিয়ে দেখা হবে।”