করোনা (কভিড-১৯) মহামারির ধাক্কা সামলিয়ে ঘুরে দাঁড়াচ্ছে মধ্যপ্রাচ্যের দেশ সংযুক্ত আরব আমিরাত (ইউএই)। কভিডপরবর্তী অর্থনীতি পুনরুদ্ধারে তেল নির্ভরতা কমিয়ে পর্যটনখাতসহ বিভিন্ন উদ্যোগ নিয়েছে দেশটি। যার আশানুরূপ ফল পাচ্ছে দেশটি। ফলে গত বছরের অর্থনৈতিক খারাপ অবস্থা কাটিয়ে চলতি বছরের প্রত্যাশার চেয়ে ভালো প্রবৃদ্ধি আশা করছে দেশটির সরকার। খবর: আরব নিউজ, খালিজ টাইমস।
দেশটির অর্থমন্ত্রী আবদুল্লাহ বিন তুক আল মারি জানান, ২০২০ সালে যেমনটা আশা করা হচ্ছিল ২০২১ সালে দেশের অর্থনৈতিক পুনরুদ্ধার তার চেয়েও ভালো হয়েছে। দেশের অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডের বিষয়ে ফেডারেল কম্পিটিটিভনেস অ্যান্ড স্ট্যাটিসটিক্স সেন্টারের সম্প্রতি প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে এ উন্নতির তথ্য পাওয়া যায়। প্রতিবেদনে আরব আমিরাত সরকারের ঘোষিত কভিড প্রণোদনা প্যাকেজ এবং সক্রিয় অর্থনৈতিক ব্যবস্থার প্রতিচ্ছবি উঠে এসেছে। মূলত বৈশ্বিক পরিবর্তনের কারণে গৃহীত পদক্ষেপ এবং অর্থনীতিতে বৈচিত্র্য আনার যে চেষ্টা, সেটিই এ অর্জনের কারণ।
গত বছর সংযুক্ত আরব আমিরাতের অর্থনীতির প্রাথমিক প্রতিবেদন অনুযায়ী, মাইক্রো ইকোনমিক সূচকে দেশীয় পণ্য উৎপাদনে ঘাটতি দেখা গেছে। সেই সঙ্গে ২০১৯ সালে তেলের যে ধারাবাহিক মূল্য ছিল, ২০২০ সালে তা কমে গেছে। জিডিপিতেও এর হার ৬.১ শতাংশ এবং ৬.২ শতাংশ কম লক্ষ্য করা গেছে।
অর্থমন্ত্রী মারি জানান, ২০২০ সাল আমাদের জন্য খুবই উদ্বেগপূর্ণ একটি বছর ছিল। কারণ পুরো বছরেই আমাদের অর্থনৈতিক ও স্বাস্থ্য-সংক্রান্ত সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়েছে, যা বিশ্ব অর্থনীতিতে বিরূপ প্রভাব ফেলেছে। সে সময় আরব আমিরাতের অর্থনীতি এ দুর্যোগের মোকাবিলা করার মতো শক্ত অবস্থানে ছিল না।
মূলত দেশটির অর্থনীতি, বৈদেশিক বাণিজ্য, বৈদেশিক বিনিয়োগ, ভ্রমণ শিল্প এবং বৈশ্বিক পরিবহন-সংক্রান্ত খাতে বিনিয়োগ এবং ব্যবসার সঙ্গে জড়িত। ২০২০ সালে কভিড মহামারির কারণে এ খাতগুলোতে মারাত্মক প্রভাব পড়ে।
২০২০ সালে জ্বালানি তেলের বাইরের খাতে যেসব অর্থনৈতিক উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে এবং এসব খাতে উৎপাদন বৃদ্ধিতে যেসব পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়েছে, সেগুলো ইতিবাচক ফল এনে দিয়েছে। এসব খাতে আয় ২৭ হাজার ৩৬১ কোটি ৮৪ লাখ ৮০ হাজার ডলার ছাড়িয়েছে এবং জিডিপির প্রবৃদ্ধি ধরা হয়েছে এক লাখ ৪১ হাজার ৮০০ কোটি ডলার।
২০১৯ সালের তুলনায় ২০২০ সালের জিডিপিতে যেসব খাত নেতিবাচক প্রভাব ফেলেছে, তার মধ্যে গৃহায়ন ও খাবার সরবরাহ খাতে ২৩.৬ শতাংশ অবনমন হয়েছে। এছাড়াও গণপরিবহন এবং স্টোরেজ সুবিধাতে এ হার ১৫.৫ শতাংশ। পাইকারি ও খুচরা বিক্রিতেও ১৩.১ শতাংশ পতন হয়েছে এবং ভবন ও বিল্ডিং নির্মাণ খাতেও ১০.৪ শতাংশ কর্মকাø হ্রাস পেয়েছে। যেখানে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ০.২ শতাংশ প্রবৃদ্ধি অর্জন করেছে।