অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেছেন, যেসব উন্নয়ন প্রকল্প এখনই বাস্তবায়ন জরুরি নয়, সেগুলো ছয় মাস বা আরও পরে বাস্তবায়নের সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার। কারণ বর্তমানে বিশ্বব্যাপী অস্বাভাবিক সময় চলছে। এই সময়ে অহেতুক ব্যয় করতে চাচ্ছে না সরকার। বিশেষ করে বৈদেশিক মুদ্রার ব্যয়ে সরকার সতর্ক। এজন্য বিলাসী পণ্যের আমদানিও যাতে কম হয় সে উদ্যোগ নেয়া হচ্ছে। পাশাপাশি বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভের ওপর চাপ কমাতে সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর বন্ধ করে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে।
বুধবার সরকারি ক্রয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির বৈঠকের পর সাংবাদিকদের ব্রিফিংয়ে সময় প্রশ্নের উত্তরে অর্থমন্ত্রী এসব কথা বলেন।
সরকারি কর্মকর্তাদের বিদেশ সফর সম্পর্কিত এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, এখন যে সফরগুলো হচ্ছে সেগুলো আগেকার অনুমোদন নেয়া। বর্তমান নিতান্ত জরুরি প্রয়োজন ছাড়া নতুন করে বিদেশ ভ্রমণের অনুমোদন না দেয়ার জন্য প্রধানমন্ত্রী নির্দেশনা দিয়েছেন। ফলে আপাতত বিদেশ সফর আর নয়।
সাংবাদিকরা অর্থমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছিলেন সম্প্রতি বাংলাদেশ ব্যাংক বিলাসী পণ্যে এলসি মার্জিন বাড়িয়েছে। এতে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ে লাগাম টানার ইঙ্গিত আছে। সরকার কি কোনো কারণে শঙ্কিত? জবাবে মুস্তফা কামাল বলেন, বিষয়টি সহজ৷ সময় যখন কঠিন, সিদ্ধান্ত কঠিন নিতে হবে। বর্তমানে বিশ্বের পরিস্থিতি স্বাভাবিক নয়। বিশ্বের সার্বিক অবস্থা বিবেচনায় এসব সিদ্ধান্ত নেয়া হচ্ছে। যতদিন বহির্বিশ্বে অস্থিরতা থাকবে ততদিন এ ধরনের কঠিন সিদ্ধান্ত নিতে হবে। তবে কঠিন মানে এমন নয় যে সবকিছু বন্ধ করে ফেলা হবে। বিলাসপণ্য পরে কেনা যাবে। যেসব প্রকল্পের সাথে বৈদেশিক মুদ্রা ব্যয়ের বিষয় রয়েছে এবং এখনই বাস্তবায়ন জরুরি নয় সেগুলো পরে বাস্তবায়ন করা হবে। সরকার এই অস্বাভাবিক সময়টি ম্যানেজ করার জন্য যা করার তাই করছে। ইউক্রেন রাশিয়া যুদ্ধ কবে শেষ হবে তা স্পষ্ট নয়। এই যুদ্ধ সারাবিশ্বে প্রভাব ফেলেছে।
জিডিপি’র প্রবৃদ্ধির হিসাব নিয়ে দেশের অর্থনীতিবিদদের সংশয় বিষয়ক এক প্রশ্নের জবাবে অর্থমন্ত্রী বলেন, জিডিপির হিসাব মেলাতে গেলে যেখান থেকে এই হিসাব করা হয়েছে তাদের সঙ্গে সংশয়বাদিদের বসতে হবে। তবে জিডিপির হিসাব যেভাবে করা হয়, সেভাবেই করা হয়েছে। কোনো পরিবর্তন করা হয়নি। ফলে কোনো সন্দেহও নেই।
তিনি বলেন, সব কাজে সব সময় সন্দেহ করার দরকার নেই। সবাই এদেশের মানুষ। দেশের ভালো সকলেই চায়। সরকার যে তথ্য প্রকাশ করেছে সেগুলো জনগণের জন্যই প্রকাশ করেছে। ফলে জিডিপির হিসাব কিভাবে করা হয়েছে তাও প্রকাশ করা হবে। তিনি বলেন, সবচেয়ে বড় সন্দেহকারী বিশ্বব্যাংক, আইএমএফও সরকারের তথ্যে আপত্তি করে না। বরং সরকারের সঙ্গে একমত।