
মো. রাসেল ইসলাম,যশোর জেলা প্রতিনিধি: যশোরের বেনাপোলে এনজিও কর্মীরা লকডাউনের মধ্যে কিস্তি আদায়ে দাপিয়ে বেড়াচ্ছে। এসব এনজিও কর্মীদের অত্যাচারে নাজেহাল হয়ে পড়েছে নিম্ন আয়ের ঋন গ্রহীতারা। ঋনের কিস্তি দিতে হিম শিম খাচ্ছে তারা। ছোট খাট ব্যবসায়িরা ঋণ নিয়ে তাদের ব্যবসার কার্যক্রম চালান। এছাড়া অনেকে এনজিও থেকে ঋন নিয়ে ইজিবাইক, থ্রি-হুইলার, ভ্যান, আলমসাধৃসহ বিভিন্ন যানবাহন কিনে চালিয়ে তা থেকে আয় করে জীবিকা নির্বাহ করেন ও ঋণের কিস্তি চালান।
সীমন্তের এই শহরে করোনার দ্বিতীয় ঢেউ শুরু হওয়ার পর থেকে ধীরে ধীরে মৃত্যু ও আক্রান্তের হার বাড়তে থাকায় সরকার দেশ জুড়ে কঠোর লকডাউন ঘোষনা করে। ফলে সরকারি বেসরকারি অফিস-আদালত ব্যবসা প্রতিষ্ঠান শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ বিভিন্ন যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। ফলে আয় রোজগার বন্ধ হয়ে যায় অনেক মানুষের। এমন পরিস্থিতিতে এনজিওর ঋণের কিস্তি দিতে হিম শিম খাচ্ছেন নিম্ন আয়ের ঋণ গ্রীতারা।
অধিকাংশ এনজিও বিবাহিত নারীদের সমিতির মাধ্যেমে ঋন দিয়ে থাকে। এমন সময়ে এ সকল ভুক্তভোগি খেটে খাওয়া ঋণ গ্রহীতা যখন তাদের সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে, তখন এনজিও কর্মীরা বাড়ি বাড়ি কিস্তি আদায়ের জন্য ধরনা দিচ্ছেন, চাপ সৃষ্টি করে কিস্তি আদায় করা হচ্ছে।
বেনাপোল পোর্ট থানার দিঘিরপাড়, ভবেরবেড়, নারানপুর, কাগজপুকুরসহ বেশ কয়েকটি গ্রামের ভুক্তভোগিরা অভিযোগ করেন। তারা বলেন, এসময় আমাদের খাবার যোগাড় করা কঠিন। তারপর এনজিও কর্মীরা মামলা হামলার ভয় দেখিয়ে কিস্তি আদায় করছে। দিঘিরপাড় গ্রামের আবুল হোসেন বলেন, সে একটি ইজিবাইক কিনেছে ব্র্যাক থেকে লোন নিয়ে। এখন রাস্তায় উঠা যাচ্ছে না। কিন্তু ওই এনজিও কর্মীরা এসে ঋণের টাকার জন্য চাপ দিচ্ছে এবং হুমকি দিচ্ছে টাকা না দিলে ইজিবাইক নিয়ে যাবে।
এ বিষয়ে নাম প্রকাশ না করার সত্বে একটি এনজিও প্রতিষ্ঠানের ঋণ আদায়কারী কর্মচারী জানান, আমরাও চাকরি করি। প্রতিষ্ঠান থেকে আমাদের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে টাকা আদায়ে। ঠিকমত কিস্তির টাকা আদায় করে অফিসে জমা দিতে না পারলে আমারও বেতন বন্ধ এমনি চাকরি হারাতে হবে।
বেনাপোল পৌরসভার ৫ নং দিঘিরপাড় ওয়ার্ডের কাউন্সিলার রাশেদ আলী বলেন, গ্রামের মানুষ তার নিকট অভিযোগ করছে। লকডাউনের মধ্যে তারা খেতে পারছে না। তারপর আবার কিস্তির জন্য চাপ। তিনি বলেন, ব্র্যাক, গ্রামীন ব্যাংক, আশাসহ কয়েকটি এনজিও কর্মীরা গ্রামে এসে দাপট দেখাচ্ছে। তারা কিস্তি না দিলে মামলারও হুমকি দিচ্ছে সদস্যদের।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী অফিসার মীর আলীফ রেজার কাছে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।