মো. রাসেল ইসলাম,যশোর জেলা প্রতিনিধি: করোনা সংক্রমন আতংকে রয়েছে বেনাপোল সীমান্তের মানুষ। মাক্স পরিধান এবং অপ্রয়োজনে ঘরের বাইরে বের না হবার জন্য বেসরকারিভাবে মাইকিং করা হচ্ছে দিনরাত। তারপরও স্বাস্থ্যববিধি মানছে না লোকজন। আবার বেনাপোলের বিভিন্ন হোটেলে ভারত ফেরত যাত্রিরাও মানছে না কোয়ারেন্টাইন। হোটেলে নিরাপত্তার দায়িত্বে থাকা আনসারদের ম্যানেজ করে বাজারঘাটে ঘুরে বেড়াচ্ছেন। ফলে সাধারন মানুষের মধ্যে বিরাজ করছে আতংক। গত ১৫ দিনে বেনাপোল এবং আশপাশের এলাকায় করোনা আক্রান্তের সংখ্যা তিনগুন বেড়ে গেছে।
২ জুন পর্য্যন্ত শার্শা উপজেলায় মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৪শ ২৩ জন।এর মধ্য আইসোলেশনে আছেন ৬৯ জন। ভারত ফেরত যাত্রিদের নিয়ে সবচেয়ে বেনাপোল বন্দর এলাকা রয়েছে ঝুঁকির মধ্যে। সরকারিভাবে আক্রান্তের সংখ্যা ২২ জন বলা হলেও আক্রান্তের সংখ্যা দু’শতাধিক। সবচেয়ে সংক্রমিত এলাকা চেকপোষ্ট ও ভারত সীমান্ত সংলগ্ন গ্রাম বড়আঁচড়া, গাজীপুর এবং দীঘিরপাড় এলাকা। সংক্রমন ঠেকাতে সীমান্ত এলাকা সিলগালা করে দেয়া হয়েছে। অবৈধ অনুপ্রবেশ বন্ধ করতে বিজিবি কঠোর নজরদারি চালাচ্ছে। গত২০ জুন স্থানীয় একটি হোটেল থেকে বের হয়ে সুন্দরবন কুরিয়ার সার্ভিসে আম বুকিং দিতে গেলে কুরিয়ারের ম্যানেজার পাসপোর্ট যাত্রিকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়।
এদিকে গত ১জুন বেনাপোলের বিভিন্ন হোটেলে কোয়ারেন্টাইনে থাকা ৭ জন যাত্রী করোনা পজিটিভ সংক্রামনে আক্রান্ত হয়েছে। এ খবর চারিদিকে ছড়িয়ে পড়ায় সাধারন মানুষ আতঙ্কগ্রস্থ হয়ে পড়েছে। এর আগে, গত মে মাসে বেনাপোল শহরের আশে পাশে ২৪ জন করোনা পজিটিভ সংক্রামনে আক্রান্ত হবার খবর নিশ্চিত করেন উপজেলা স্বাস্থ্যকর্মকর্তা।
যশোর জেলা সিভিল সার্জন শাহীন হোসেন জানান, হোটেলে অবস্থান করা ভারত ফেরত যাত্রিদের মধ্যে সংক্রমন ধরা পড়ার বিষয়টি ঝুঁকিপুর্ণ। গত ২ জুন ৪২ জনের শরীর থেকে নমুনা নেয়া হয়েছে। আক্রান্তদের হোটেল থেকে যশোর সদর হাসপাতালে স্থানান্তর করা হয়েছে। কোয়ারেন্টাইনে থাকা যাত্রিদের ১৩ দিন পর নেগেটিভ নিশ্চিত করেই ছাড়পত্র দেয়া হচ্ছে। যারা ভারত থেকে করোনা নেগেটিভ সনদ নিয়ে আসছে তাদেরকেও বাংলাদেশে পরীক্ষা নিরিক্ষা করা হচ্ছে।
বেনাপোল সিএন্ডএফ এজেন্টের সভাপতি মফিজুর রহমান সজন জানান, বৈধ অবৈধভাবে অনেকেই সীমান্ত পেরিয়ে বেনাপোলে আসে। সাধারন মানুষের সাথে তাদের মেলামেশা ও হোটেলে থাকাটা বেনাপোলবাসির জন্য বেশ ঝুঁকিপূর্ণ। বেনাপোলের মানুষ এখন বেশ শঙ্কিত। আবাসিক হোটেল থেকে বিশেষ ব্যবস্হায় যাত্রিরা নেমে বাজারে ঘুরাঘুরি এবং কেনাকাটা করে হোটেলে প্রবেশ করছে যা খুবই ঝুঁকিপুর্ণ। পুলিশ প্রশাসন কে আরও কঠোর না হলে সংক্রমন ঠেকিয়ে রাখা যাবে না।