ম্যাচের লম্বা সময় পর্যন্ত লড়াই হলো সমানে সমান। কিন্তু শেষদিকে গিয়ে বদলে গেল চিত্র। বসুন্ধরা কিংসকে চেপে ধরে একের পর এক আক্রমণ রচনা করতে লাগল বেঙ্গালুরু এফসি। রক্ষণভাগ ও গোলরক্ষকের দৃঢ়তার পাশাপাশি ক্রসবারের কল্যাণে সেই চাপ সামাল দিয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি পয়েন্ট আদায় করে নিল বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের চ্যাম্পিয়নরা।
শনিবার মালদ্বীপের রাজধানী মালের জাতীয় ফুটবল স্টেডিয়ামে এএফসি কাপের ‘ডি’ গ্রুপের ম্যাচটি শেষ হয়েছে গোলশূন্যভাবে।
বল দখলে সামান্য ব্যবধানে এগিয়ে ছিল বসুন্ধরা। তবে আক্রমণে একচ্ছত্র আধিপত্য দেখায় ভারতের বেঙ্গালুরু। তারা গোলমুখে ১৪টি শট নিয়ে লক্ষ্যে রাখে তিনটি। অন্যদিকে, কিংসের ছয়টি শটের মধ্যে লক্ষ্যে ছিল দুটি।
ম্যাচের প্রথম দিকে সুযোগ তৈরিতে এগিয়ে ছিল কিংস। ২১তম মিনিটে ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড রবসন দা সিলভা রবিনহোর ফ্রি-কিক বাধা পায় সামনের মানব দেয়ালে। ৩৩তম মিনিটে তার স্বদেশি জোনাথান ফার্নান্দেজের দূরপাল্লার জোরালো শট কর্নারের বিনিময়ে রক্ষা করেন বেঙ্গালুরু গোলরক্ষক গুরপ্রীত সিং। চার মিনিট পর ইরোন্দু মুসাভু-কিংয়ের হেড ফাঁকি দিতে পারেনি বসুন্ধরার গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকোকে।
বিরতির পর ম্যাচের ৫৫তম মিনিটে গোল প্রায় পেয়েই যাচ্ছিল বসুন্ধরা। বিপলু আহমেদ ডি-বক্সে বল বাড়িয়েছিলেন রবিনহোর দিকে। তিনি সঙ্গে লেগে থাকা ডিফেন্ডারের চাপ এড়িয়ে যে শট নেন, তা পা দিয়ে রক্ষা করেন গুরপ্রীত। তবুও বল জালের দিকেই যাচ্ছিল। বেঙ্গালুরুর এক ডিফেন্ডার গোললাইন থেকে তা ফেরালেও পুরোপুরি বিপদমুক্ত হয়নি। পরে আবার বল রক্ষাকর্তার ভূমিকায় আবির্ভূত হন গুরপ্রীত।
৬০ মিনিটের পর খেই হারায় বসুন্ধরা। সেসময় ম্যাচের চালকের আসনে বসে পড়ে বেঙ্গালুরু। বাকিটা সময় মুহুর্মুহু আক্রমণ শানিয়ে কিংসকে ব্যতিব্যস্ত রাখে তারা।
৬২তম মিনিটে সুনীল ছেত্রীর শট লক্ষ্যে থাকেনি। ৭৩তম মিনিটে সৌভাগ্যক্রমে বেঁচে যায় বসুন্ধরা। ছেত্রীর শট কর্নারের বিনিময়ে ফেরান জিকো। সতীর্থের কর্নার থেকে অ্যালান কস্তার হেড ক্রসবারের নিচের দিকে লেগে গোললাইনে পড়ে লাফিয়ে উঠলে লুফে নেন জিকো। এএফসি কাপে গোললাইন প্রযুক্তি কিংবা ভিএআর প্রযুক্তি নেই। আর বেঙ্গালুরুর ফুটবলারদের গোলের আবেদনেও সাড়া দেননি রেফারি।
৮৩তম মিনিটে ফের জিকোর সেভে জাল অক্ষত থাকে বসুন্ধরার। এরপর শেষ বাঁশি বাজা পর্যন্ত রক্ষণাত্মক কৌশলে খেলে পয়েন্ট বেঙ্গালুরুর সঙ্গে পয়েন্ট ভাগাভাগি করে তারা।
নিজেদের প্রথম ম্যাচে মালদ্বীপের মাজিয়া স্পোর্টস অ্যান্ড রিক্রিয়েশন ক্লাবকে ২-০ গোলে হারিয়েছিল বসুন্ধরা। গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে অস্কার ব্রুজোনের শিষ্যদের প্রতিপক্ষ ভারতের আরেক শক্তিশালী ক্লাব এটিকে মোহনবাগান। আগামী ২৪ অগাস্ট বাংলাদেশ সময় বিকাল পাঁচটায় মাঠে গড়াবে ম্যাচটি।
দুই ম্যাচে ৪ পয়েন্ট নিয়ে গ্রুপের শীর্ষে আছে বসুন্ধরা। এক ম্যাচ খেলে ৩ পয়েন্ট নিয়ে দুইয়ে অবস্থান করছে মোহনবাগান। তাদের বিপক্ষে আগের লড়াইয়ে হেরে যাওয়া বেঙ্গালুরু দুই ম্যাচে ১ পয়েন্ট নিয়ে আছে তিনে। তলানিতে থাকা মাজিয়া এক ম্যাচ খেলে পয়েন্টের দেখা পায়নি।
শনিবার ‘ডি’ গ্রুপের পরের ম্যাচে মুখোমুখি হবে মোহনবাগান ও মাজিয়া। ম্যাচটি শুরু হবে বাংলাদেশ সময় রাত দশটায়। সেই লড়াইয়ের পর নির্ধারিত হবে বসুন্ধরার পরের পর্বে ওঠার সমীকরণ।
উৎসঃ ডেইলি স্টার