তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: বৃষ্টি হলেই মৌলভীবাজারের বড়লেখা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড এবং ডেলিভারী রোগীর পোষ্ট অপারেটিভ কক্ষ ছাদ চুঁয়া পানিতে ভেসে যায়। এতে সীমাহীন দুর্ভোগে পড়েন রোগী ও তাদের সাথে আসা পরিবার ও স্বজনরা। সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মূখে পড়েন প্রসুতি ও নবজাতক শিশু প্রসুতী মায়েরা।
জানা গেছে, উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের পুরাতন ভবনের দ্বিতীয় তলায় হাসপাতালের ভর্তি রোগীদের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ড রয়েছে। এছাড়া একই তলায় রয়েছে প্রসূতিদের নরমাল ডেলিভারী ও সিজারিয়ান অপারেশন এবং পোষ্ট আপারেটিভ রুম। সাধারণ রোগীদের স্বাস্থ্যসেবা প্রদানের গুরুত্বপূর্ণ এই ভবনের ছাদ চুঁয়ে অনেক দিন ধরেই পানি পড়ছে। বৃষ্টি হলেই ছাদ চুঁয়া পানিতে রোগীর ওয়ার্ড, অপারেশন রুম ও অপারেশন পরবর্তী রুমের রোগীর সিট ভিজে যায়, ফ্লোরে জমে ৪-৫ ইঞ্চি পানি। এতে মারাত্মক দুর্ভোগে পড়েন রোগিরা।
মঙ্গলবার দুপুরে সরেজমিনে গিয়ে ছাদ চুঁয়া পানিতে হাসপাতালের পুরুষ ও মহিলা ওয়ার্ডসহ দ্বিতীয় তলার প্রত্যেকটি কক্ষের ফ্লোর ও করিডোর পানিতে ভেসে যেতে দেখা গেছে। পরিচ্ছন্নতাকর্মী ও সেবিকারা একদিকে পানি মুছছেন আর অন্যদিকে বেড়েই চলেছে। রোগীরা সিট ছেড়ে যাওয়ার মত বৃষ্টির পানিহীন কোন জায়গাই নেই। রোগীর স্বজনরাও পানি মূছে শেষ করতে পারছেন না। উপজেলার সুজানগরের সাজু মিয়া জানান, রোববার রাতে ডেলিভারীর ব্যথা উঠায় স্ত্রীকে নিয়ে আসেন হাসপাতালে। সোমবার সোয়া ১২টায় সিজারের মাধ্যমে বাচ্চা জন্ম দেন তার স্ত্রী।
অপারেশনের পরে ডাক্তাররা চার বেডের যে কক্ষে (পোষ্ট অপারেটিভ রুম) তার স্ত্রী ও নবজাতককে রাখেন সে রুমের অবস্থা মারাত্মক বেহাল। বৃষ্টির পানিতে সব বেড ভিজা। ফ্লোরে হাঁটু পানি জমে আছে। তিনি ও তার এক আত্মীয় অনেকক্ষণ ফ্লোরের পানি মূছেও শেষ করতে পারেননি। নোংরা পানিতে একাকার স্থানে সুস্থ মানুষই থাকা কষ্টের, সেখানে নবজাতক ও প্রসূতিকে রাখা মৃত্যুর মূখে টেলে দেওয়ার সামিল।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. রত্নদ্বীপ বিশ্বাস জানান, ভবনের ছাদ মেরামতের জন্য স্বাস্থ্য প্রকৌশল বিভাগে একাধিকবার চিঠি দিয়েছেন। কিন্তু কোন প্রতিকার পাচ্ছেন না। পুনরায় তাদেরকে বিষয়টি অবহিত করবেন বলে তিনি জানান।