বিয়ের কথা বলায় প্রেমিকাকে হত্যা করে লাশ ড্রামে ভরে গুম করার অভিযোগ উঠেছে এক পুলিশ কনস্টেবলের বিরুদ্ধে। রাজশাহী রেলওয়ে পুলিশে কর্মরত কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র সরকারসহ (৪৩) চার জনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। সোমবার (১৯ এপ্রিল) সকালে পিবিআই’র রাজশাহী জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার আবুল কালাম আযাদ এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
অজ্ঞাত এক তরুণীর হত্যা মামলা তদন্ত করতে গিয়ে তাদের গ্রেফতার করা হয়। পরবর্তীতে ওই তরুণীর পরিচয় শনাক্ত করে পিবিআই। নিহত তরুণী নাম ননিকা রানী রায় (২৩)। তার বাবার নাম শ্রী নিপেন চন্দ্র বর্মন, গ্রামের বাড়ি ঠাকুরগাঁও জেলার মিলনপুর (গড়েয়া) এলাকায়। ননিকা সদ্য নার্সিং পাস করে বের হয়েছিলেন।
হত্যায় সহায়তার অভিযোগে গ্রেফতার তিন জন
পিবিআইর হাতে গ্রেফতার পুলিশ কনস্টেবল নিমাই চন্দ্র সরকার এর আগে রাজশাহী মহানগর পুলিশে (আরএমপি) কর্মরত ছিলেন। নারী সংশ্লিষ্ট ঘটনায় তিনি একবার বরখাস্ত হয়েছিলেন। এরপর রাজশাহী রেলওয়ে পুলিশে নিযুক্ত ছিলেন তিনি। রবিবার রাতে তাকে নাটোরের লালপুরে তার বোন-জামাইর বাড়ি থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই।
গত ১৬ এপ্রিল সকাল সাড়ে ১০টার দিকে রাজশাহী মহানগরীর শাহমখদুম থানার ইউনাইটেড কলেজের সামনে চাঁপাইনবাবগঞ্জ টু রাজশাহী বাইপাস মহাসড়কে কালভার্টের নিচ থেকে একটি ড্রামের ভেতর থেকে অজ্ঞাত তরুণীর লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। তার গলায় কালো ওড়না দিয়ে ফাঁস লাগানো ছিল। ধারণা করা হয়, তার গলায় ওড়না পেঁচিয়ে শ্বাসরোধে হত্যা করে লাশ গুম করা হয়। লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ।
পরবর্তীতে শাহমখদুম থানার এস আই মো. আমিনুল ইসলাম বাদী হয়ে অজ্ঞাতদের আসামি করে একটি মামলা করেন। এরপর নিহত তরুণীর লাশের আঙুলের ছাপ নিয়ে তার পরিচয় শনাক্ত করে পুলিশ। পরিচয় শনাক্তের পর পিবিআই রাজশাহী টিম পাবনা ও নাটোর জেলায় বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে। হত্যার সঙ্গে জড়িত মূল আসামি নিমাই চন্দ্র সরকারকে (৪৩) পাবনার আতাইকুলা থানার চরাডাঙ্গা থেকে গ্রেফতার করে। এরপর তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে হত্যার সঙ্গে জড়িত আসামি মো. কবির আহম্মেদ (৩০) ও মো. সুমন আলীকে (৩৪) রাজশাহী থেকে গ্রেফতার করে পিবিআই। লাশ গুমে ব্যবহার হওয়া মাইক্রোবাস ও মাইক্রোবাসের চালক মো. আব্দুর রহমান ওরফে সঞ্জয়কেও (২৫) গ্রেফতার করে পুলিশ।
নিমাই চন্দ্র জিজ্ঞাসাবাদে হত্যার কথা স্বীকার করেছে বলেও জানিয়েছে পিবিআই। নিমাই পুলিশকে জানায়, ননিকা রানী রায়ের সঙ্গে তার ৬/৭ বছর ধরে প্রেমের সম্পর্ক ছিল। ননিকা বিয়ের জন্য চাপ দেয়। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে কৌশলে তাকে নিজের ভাড়া বাসায় নেয় নিমাই। সেখানে হত্যা করে লাশ গুম করার জন্য ড্রামে ভরে পানিতে ফেলে দেওয়া হয়।