ফরিদপুর প্রতিনিধিঃ ফরিদপুরের চরভদ্রাসনে বিয়েবাড়িতে এক কিশোরীকে (১৭) ধর্ষণচেষ্টার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় পুলিশ তিনজনকে গ্রেপ্তার করেছে। ভুক্তভোগী কিশোরী ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মঙ্গলবার (১ নভেম্বর) এ ঘটনায় করা মামলায় আদালতের নির্দেশে চার আসামিকে জেল হাজতে পাঠিয়েছে চরভদ্রাসন থানা পুলিশ। এর আগে, শনিবার ধর্ষণচেষ্টার শিকার হন ওই কিশোরী।
ঢাকা ট্রিবিউনকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মণ্ডল।
স্থানীয় ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, উপজেলার গাজীরটেক ইউনিয়নের এক তরুণ (২৭) ছয় বছর সৌদি আরবে থেকে এ বছর দেশে ফেরেন। সেখানে তার সঙ্গে একই উপজেলার এক তরুণীর (২১) ওয়েব প্ল্যাটফর্ম ইমোতে পরিচয় হয়। ওই নারী আড়াই বছর আগে তিনি দেশে ফিরে আসেন। ২৭ অক্টোবর পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়।
বিয়ের রীতি অনুযায়ী ২৮ অক্টোবর রাতে তিন বোন এবং কয়েকজন আত্মীয়কে নিয়ে শ্বশুরবাড়িতে বেড়াতে যান ওই তরুণ।
তিনি জানান, ২৯ অক্টোবর বিকেল ৩টার দিকে তার এক বোন (১৭) গোসল করছিলেন। হঠাৎ বোনের চিৎকার শুনে এগিয়ে গেলে ঘটনাস্থল থেকে নববধূর মামাতো ভাই কাউসার (১৯), যমজ দুই খালাতো ভাই সোহাগ শেখ ও শিপন শেখ (১৯) দৌড়ে ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যেতে দেখেন। ঘটনাস্থলে তার বোন অজ্ঞান অবস্থায় পড়ে ছিলেন।
ওই তরুণ আরও জানান, ঘটনার পর বোনকে স্থানীয় এক পল্লী চিকিৎসকের কাছে নিয়ে যাওয়া হয়। পরে তারই পরামর্শে নির্যাতনের শিকার কিশোরীকে ফরিদপুর বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
ভুক্তভোগী কিশোরীর ভাই বলেন, “অভিযুক্তরা আমার বোনকে তারা ধর্ষণের চেষ্টা চালিয়েছে।”
এদিকে, ভাইদের বিরুদ্ধে ওঠা ধর্ষণের অভিযোগ অস্বীকার করেছেন নববধূ। ওই নারীর ভাষ্য, তাকে গোসল করানোর জন্য সবাই প্রস্তুত হচ্ছিল। এ সময় তার ননদের (ভুক্তভোগী কিশোরী) গায়ে রঙ মেখে দেয় তার ছোট বোন (১৬)। এ নিয়ে ধস্তাধস্তির একপর্যায়ে তার ননদ পড়ে গিয়ে ঘরের টিনে আঘাত পান এবং অসুস্থ হয়ে পড়েন।
এ বিষয়ে নববধূর বাবা বলেন, “তারা প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে বিয়ে করেছেন। তাদের বিয়ে কোনোভাবেই মেনে নিতে চাচ্ছিলেন না বরের বাবা। এজন্য ঘটনার পর তাদের কাছে মিমাংসার জন্য গেলেও তিনি সমাধানে রাজি হননি।”
চরভদ্রাসন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মিন্টু মণ্ডল বলেন, “মঙ্গলবার দুপুরে ধর্ষণচেষ্টা ও সহায়তার অভিযোগে চারজনকে আসামি করে মামলা করেছেন কিশোরীর বাবা। এজাহারভুক্ত তিনজন মামুন শেখ, সোহাগ ও শিপনকে গ্রেপ্তার করে মঙ্গলবার বিকেলে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে পাঠানো হয়েছে।”