
কামরুল হাসান জনি, ইউএইঃ করোনা মহামারি একদিকে স্থবির প্রায় জনজীবন। দেশে আটকে থাকা প্রবাসীরা ফিরতে চান কর্মস্থলে। যারা প্রবাসে রয়েছেন তারা চান স্বজনের কাছে যেতে। এই প্রতীক্ষার সময় যেন শেষ হবার নয়। অপেক্ষার ঘড়িতে সময় গুণছেন সবাই। মাঝখানে কর্মহীন, চাকরিচ্যুত প্রবাসী কিংবা পরিবার নিয়ে থাকা প্রবাসীর স্ত্রী-সন্তান বা বৃদ্ধ বাবা-মা অথবা অসুস্থ প্রবাসীরা জরুরিভিত্তিতে ফিরে যাচ্ছেন দেশে। করোনার পরিস্থিতিতে এরা একপ্রকার অসহায়। আমিরাত-বাংলাদেশ দু’দেশের কূটনৈতিক সমন্বয়ে কিছু সংখ্যক প্রবাসী দেশে ফেরার এই বিশেষ সুযোগ পাচ্ছেন, ফিরছেনও। কিন্তু এই অসহায় মূহুর্তে বিশেষ ফ্লাইটের বাড়তি ভাড়া তাদের ‘মরার উপর খাড়ার ঘা’র মতো।
সোমবার আবুধাবি থেকে ঢাকায় ছেড়ে যাওয়া ইতিহাদ এয়ারওয়েজের সিঙ্গেল টিকেটের মূল্য ছিল ২,২০০/- দিরহাম, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৫০,৬০০ টাকা। এর আগে শনিবার বাংলাদেশ বিমানের বিশেষ ফ্লাইটে সিঙ্গেল টিকেটের ভাড়া ছিল ১,৮৭০/-, যা বাংলাদেশি টাকায় প্রায় ৪৩,০১০/- টাকা। যেখানে একপ্রকার অসহায়ত্বে দিনপার করছেন প্রবাসীরা সেখানে বিশেষ এই ফ্লাইটের বিশেষ মূল্য বাড়তি বোঝা কিংবা বলা যায় প্রবাসীদের উপর অদৃশ্য এক চেপে দেয়া যন্ত্রণা।
প্রায় প্রতিটি ফ্লাইট পরিচালিত হচ্ছে সম্পূর্ণ যাত্রী নিয়ে। প্রবাসীদের মধ্যে একটি ধারণা কাজ করছে, হয়ত একটি সিট বাদ দিয়ে একটি সিটে যাত্রী নিচ্ছে এসব ফ্লাইট। তাদের ধারণার বিপরীতে বর্তমানে বিশেষভাবে পরিচালিত হওয়া ফ্লাইটগুলো স্বাভাবিক ফ্লাইটের মতই যাত্রী পরিষেবা সচল রেখেছে। অর্থ্যৎ প্রায় সবক’টি সিটের সম্পূর্ণ যাত্রী নিয়েই এগুলো চলাচল করছে। এ ছাড়াও বাড়তি ভাড়া ধরার কারণ হিসেবে উল্লেখ করা হচ্ছে, ওয়ানওয়ে যাত্রীর সেবার কথা।
যদিও পরিস্থিতি এমনই। তবুও সহনীয় পর্যায় থেকে বিষয়টি বিবেচনায় নিতে প্রবাসীদের পক্ষ থেকে সরকারের প্রতি বিশেষ অনুরোধ করছি। দেশের নাগরিকদের জন্য সরকার চাইলে কিছুটা চিন্তা করতে পারেন, দিতে পারেন সামান্য ভর্তুকিও। বিশেষত এরা যে লাল-সবুজের দেশেরই নাগরিক। প্রবাসীদের অসহায় চেহারাগুলো দিকে তাকিয়ে হলেও বিবেচনায় নিন বিষয়টি। অন্তত স্বাভাবিক ফ্লাইট চালুর পূর্ব পর্যন্ত পরিচালিত হওয়া এসব বিশেষ ফ্লাইটে ভাড়া কিছুটা সহনীয় করে দিতে আকুল আবেদন রইল। প্রবাসীদের মায়ার জালে জড়িয়ে নিন। আমার বিশ্বাস, তারা রেমিট্যান্স পাঠিয়ে দ্রুতই তা পুষিয়ে দিবে।