করোনার প্রভাবে মাস তিনেক বাংলাদেশের সঙ্গে আমিরাতের আকাশপথের স্বাভাবিক ফ্লাইট বন্ধ ছিল। সেই সময়ে বিশেষ কিছু ফ্লাইটে আটকে পড়া বাংলাদেশিরা চড়া দামে টিকিট ক্রয় করে দেশে যান। এসব বিশেষ ফ্লাইটের মাত্রাতিরিক্ত টিকিটের মূল্য নিয়ে প্রবাসীদের মধ্যে চাপা ক্ষোভ থাকলেও মেনে নিতে হয়েছিল। করোনাকালীন বিপর্যয়ে বিমান ভাড়ার ভারে নাজেহাল প্রবাসীরা স্বাভাবিক ফ্লাইট চালু হলে টিকিটের মাত্রাতিরিক্ত দাম কমবে বলে মনে করেছিলেন।
গতবছর ১৩ জুলাই থেকে আমিরাত রুটে বিমান ফের পরিচালনার সুযোগ পায়। কিন্তু ফ্লাইটের ভাড়া স্পেশাল ফ্লাইটের মতোই রয়ে যায়। দেশে আটকা পড়া প্রবাসীরা লাখ টাকা দিয়ে ফিরে আসছেন। বর্তমানে ভিজিট ভিসায় এসে কাজের সন্ধান করে শ্রমিক ভিসায় রূপান্তর করার সুযোগ হওয়ায় দেশ থেকে প্রচুরসংখ্যক লোক আসছেন।
কিন্তু দুর্ভাগ্যজনক হলো, এসব ভিজিটররা এয়ারপোর্টের কথিত কন্ট্রাক্ট ও বিমান ভাড়ায় নাজেহাল। যেখানে আমিরাত সরকার ভিজিট ভিসা দিচ্ছে সেখানে দেশের এয়ারপোর্টে কথিত কন্ট্রাক্ট কেন? বারবার প্রতিবাদ জানিয়ে প্রবাসীরা পাচ্ছে না কোন সমাধান। প্রায় ৪/৫ মাস থেকে চলে আসা এই মহা দুর্নীতি দেখার কি কেউ নেই?
আমিরাতে অবস্থানরত প্রবাসীরাও মাত্রাতিরিক্ত ভাড়ার কারণে চাইলেও দেশে যেতে পারছেন না। আলাদা গন্তব্য ঢাকা ও কাঠমণ্ডুর দূরত্ব প্রায় সমান হলেও ভাড়ার পার্থক্য দিগুণ। আবার ভারতের যাত্রীরা বর্তমান সময়ে স্বাভাবিক সময়ের চেয়ে কম দামে টিকিট ক্রয় করে দেশে যেতে পারছে। পার্শ্ববর্তী দেশের মানুষ করোনার বিপর্যয়ে ফ্লাইটে বিশেষ সুবিধা পচ্ছে আমরা তখন নিরুপায় হয়ে বিমানের চড়া দামে পিষ্ট হয়ে যাতায়াত করতে হচ্ছে। ভাড়া না কমালেও বিমানের সংখ্যা দেশে বৃদ্ধি পাচ্ছে।
এদিকে দেশের বিমান মন্ত্রণালয়ে আগামী ৫ মার্চ নতুন আরও একটি উড়োজাহাজ যুক্ত হচ্ছে। বাংলাদেশ ও কানাডা সরকারের মধ্যে জিটুজি ভিত্তিতে কেনা তিনটি ড্যাশ-৮ প্লেনের প্রথমটি গত বছরের ২৭ ডিসেম্বর ও দ্বিতীয় উড়োজাহাজটি গত ২৪ ফেব্রুয়ারি বিমান বহরে যুক্ত হয়। সবশেষ তৃতীয় প্লেনটি ৫ মার্চ কানাডা থেকে দেশে আসবে।
চারটি বোয়িং ৭৭৭-৩০০ ইআর, চারটি বোয়িং ৭৮৭-৮, দু’টি বোয়িং ৭৮৭-৯, ছয়টি বোয়িং ৭৩৭ এবং চারটি ড্যাশ ৮-৪০০ উড়োজাহাজ। তৃতীয় ড্যাশ-৮ উড়োজাহাজটি বিমান বহরে যুক্ত হলে দেশে উড়োজাহাজের সংখ্যা হবে ২১টি।
রাষ্ট্রের উচিৎ বর্তমান এই বিপর্যয়ে প্রবাসীদের পাশে দাঁড়ানো। বিমান ভাড়া কমানোর ব্যবস্থা নিয়ে প্রবাসীদের সময়ের দাবি পূরণ হোক। কথিত এয়ারপোর্ট কন্ট্রাক্ট নামের দুর্নীতি থামিয়ে রেমিট্যান্স বৃদ্ধির পথ আরও প্রসারিত করা হোক।
আব্দুল্লাহ আল শাহীন
সাংগঠনিক সম্পাদক
বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএই