বেসামরিক বিমান পরিবহন ও পর্যটন খাতে ২০২০-২০২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ৩ হাজার ৬৮৮ কোটি টাকা বরাদ্দ রাখা হয়েছে। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল তার বাজেট বক্তৃতায় এই তথ্য জানান। গত অর্থবছরে এই বরাদ্দ ছিল ৩ হাজার ৪২৬ কোটি টাকা। এবারের বাজেটে তা বেড়েছে ২৬২ কোটি টাকা।
অর্থমন্ত্রী বলেন, ‘দ্রুতগতির নিরাপদ, দক্ষ ও নির্ভরযোগ্য যাত্রী ও পণ্য পরিবহন সুবিধাদি নিশ্চিতকরণে বিশ্বমানের বেসামরিক বিমান পরিবহন ব্যবস্থা গড়ে তুলতে সরকার কার্যকর পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে। দেশের আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরগুলোর যাত্রী ও কার্গো হ্যান্ডেলিং সক্ষমতার মান ও পরিধি বৃদ্ধির অংশ হিসেবে হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে তৃতীয় টার্মিনালের নির্মাণকাজ চলমান রয়েছে। কক্সবাজার ও সৈয়দপুর বিমানবন্দরকে আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে উন্নীতকরণের প্রক্রিয়া দ্রুতগতিতে এগিয়ে চলছে।’
আ হ ম মুস্তফা কামাল জানিয়েছেন, বাগেরহাট জেলায় খান জাহান আলী বিমানবন্দর নির্মাণসহ যশোর, সৈয়দপুর ও বরিশাল বিমানবন্দর এবং রাজশাহীর শাহ মখদুম বিমানবন্দর সম্প্রসারণ ও নবরূপায়নের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে। এছাড়া দেশে একটি আন্তর্জাতিক মানের সিভিল এভিয়েশন ইনস্টিটিউট নির্মাণের পরিকল্পনা রয়েছে তার।
বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইনসের বহর সম্প্রসারণ করতে চায় সরকার। লাভজনক বিভিন্ন গন্তব্যে সাপ্তাহিক ফ্রিকোয়েন্সি বৃদ্ধি এবং উচ্চ চাহিদা সম্পন্ন গন্তব্য যেমন গুয়াংজু, চেন্নাই, কলম্বো, টোকিও, টরন্টো, বাহরাইন, শারজাহ, নিউ ইয়র্ক ও সালালাহতে রাষ্ট্রীয় পতাকাবাহী সংস্থাটির সেবা সম্প্রসারণ অথবা পুনঃপ্রবর্তনের পরিকল্পনা সাজানো হয়েছে।
এদিকে করোনাভাইরাস মহামারির কারণে দেশের পর্যটন খাতের ব্যবসায়ীরা ব্যাপক ক্ষতিগ্রস্ত। তাই সরকারের সুদৃষ্টি কামনা করে বাজেটে বিশেষ বরাদ্দের দাবি জানিয়ে আসছিলেন তারা। এর মধ্যে ছিল পর্যটন খাতের জন্য বিশেষ প্রণোদনা। কিন্তু ২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটে তা দেওয়া হয়নি।
তবে অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামাল আশ্বাস দিয়েছেন, কোভিড-১৯ রোগের প্রাদুর্ভাবে ক্ষতির সম্মুখীন হওয়া দেশের পর্যটন শিল্পের উন্নয়নে সরকার সক্রিয় প্রচেষ্টা গ্রহণ করবে। বৃহস্পতিবার (১১ জুন) জাতীয় সংসদে বাজেট বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন।
২০২০-২১ অর্থবছরের বাজেটের পরিমাণ ৫ লাখ ৬৮ হাজার কোটি টাকা। বৃহস্পতিবার বিকাল ৩টায় সংসদের বিশেষ বাজেট অধিবেশনে ‘অর্থনৈতিক উত্তরণ ও ভবিষ্যৎ পথ-পরিক্রমা’ প্রতিপাদ্য সংবলিত ১১০ পৃষ্ঠার বাজেট বক্তৃতা শুরু করেন অর্থমন্ত্রী।
আ হ ম মুস্তফা কামাল বলেন, ‘পর্যটন শিল্পকে অর্থনৈতিক খাত হিসেবে উন্নত ও সমৃদ্ধ করার জন্য প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নির্দেশনার আলোকে সরকার বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করছে। যেমন, দেশের পর্যটন সম্ভাবনাময় স্থানগুলোতে কেবল বিদেশিদের জন্য স্বতন্ত্র পর্যটন এলাকা স্থাপন, প্রাকৃতিক সৌন্দর্য অক্ষুন্ন রেখে ইকো-ট্যুরিজম পার্ক, দ্বীপভিত্তিক পর্যটন পার্ক ও হোটেল নির্মাণ এবং পর্যটকদের বিনোদনসহ যাবতীয় সুযোগ-সুবিধা সমৃদ্ধ আন্তর্জাতিক মানের পর্যটন কেন্দ্র স্থাপনের পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।’
পাশাপাশি বাংলাদেশ পর্যটন করপোরেশনের বিদ্যমান স্থাপনাগুলোর আধুনিকায়ন ও সক্ষমতা বৃদ্ধি এবং নতুন নতুন স্থানে আধুনিক পর্যটন সুবিধা সম্প্রসারণের জন্য প্রকল্প হাতে নেওয়া হচ্ছে বলে জানান অর্থমন্ত্রী।