
রোম থেকে ঢাকামুখী বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের বিজি ৩৫৫ ফ্লাইটে যাত্রীদের পড়তে হয়েছে চরম অস্বস্তিতে। বিমানে ওঠার আগেই ছড়িয়ে পড়ে তীব্র দুর্গন্ধ, যার উৎস ছিল যাত্রীদের লাগেজে থাকা রান্না করা খাবার ও কাঁচা মাছ। দুর্গন্ধ এতটাই তীব্র ছিল যে, রোমের ফিউমিচিনো বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিমানটি পরিষ্কার না করা পর্যন্ত উড্ডয়নের অনুমতি দেয়নি। এতে ফ্লাইটের ছাড়তে বিলম্ব হয় প্রায় চার ঘণ্টা।
জানা যায়, মঙ্গলবার সন্ধ্যায় রোম থেকে ঢাকার উদ্দেশে ছাড়ার কথা ছিল উক্ত ফ্লাইটটির। কিন্তু ওইদিন সকালে ঢাকা থেকে রোমে আসার সময় বেশ কয়েকজন যাত্রী তাদের লাগেজে কাঁচা ইলিশ, ভর্তা ও ঝোলসহ রান্না করা খাবার বহন করেন। এসব লাগেজ বিমানবন্দরে সরাসরি বেল্টে দেয়ায় শুধু বিমানের ভিতরে নয়, আশপাশে থাকা অন্যান্য এয়ারলাইন্সের যাত্রীদের লাগেজেও মাছের পানি ও তেলের দাগ লাগে।
দীর্ঘ সময় ধরে (প্রায় ৯ ঘণ্টা) ফ্লাইটে থাকায় লাগেজে রাখা খাবার পচে গিয়ে দুর্গন্ধ আরও বেড়ে যায়। বিমানের কার্গো হোল্ডজুড়ে ছড়িয়ে পড়ে সেই দুর্গন্ধ। ফ্লাইট ছাড়ার আগে যাত্রীরা বিমানে উঠলে দুর্গন্ধে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েন এবং শুরু হয় তুমুল হট্টগোল। পরে বিমানবন্দর কর্তৃপক্ষ বিমানের অভ্যন্তর পরিদর্শন করে পরিচ্ছন্নতা কার্যক্রম পরিচালনা করে। এরপরই উড্ডয়নের অনুমতি দেওয়া হয়।
এই ঘটনার পর এক যাত্রীর লাগেজ থেকে ১১টি কাঁচা ইলিশ মাছ উদ্ধার করা হয়। লাগেজে নিষিদ্ধ পণ্য বহনের নিয়ম ভঙ্গের দায়ে তাকে জরিমানাও করা হয়েছে। এ নিয়ে রোম বিমানবন্দরের নিরাপত্তা ও পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা বিভাগ অতিরিক্ত সতর্কতা আরোপ করেছে।
এভিয়েশন বিশেষজ্ঞ কাজী ওবায়দুল আলম বলেন, “এটা কেবল বিমানের গাফিলতি নয়, বরং দেশের সম্মানহানির বিষয়।” তিনি আরও বলেন, আন্তর্জাতিক ভ্রমণে এ ধরনের আচরণ দেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করে।
বিশ্লেষকদের মতে, যাত্রীদের সচেতনতা, এয়ারলাইন্সের কড়া নজরদারি এবং বিমানবন্দরের স্ক্রিনিং প্রক্রিয়ায় আরও কঠোরতা না আনলে ভবিষ্যতেও এ ধরনের বিব্রতকর পরিস্থিতির পুনরাবৃত্তি ঘটতে পারে।