বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধির প্রতিবাদে রাজধানীসহ সারাদেশে জামায়াত বিক্ষোভ মিছিল করেছে। রাজধানীর মিরপুরে বিক্ষোভ করে ঢাকা মহানগরী উত্তর জামায়াত। আজ শনিবার সকালে মিরপুরের এ বিক্ষোভ করেন সংগঠনের নেতাকর্মীরা। বিক্ষোভ মিছিলটি মিরপুর ১ নং থেকে শুরু হয়ে শাহ আলী অতিক্রম প্রদক্ষিণ করে গাবতলীতে গিয়ে সংক্ষিপ্ত সমাবেশের মাধ্যমে শেষ হয়।
সংক্ষিপ্ত সমাবেশে, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি মাহফুজুর রহমান বলেন, সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত নয় বলেই দেশ ও জাতির এই ক্রান্তিকালে সম্পূর্ণ অবিবেচনাপ্রসূত ও অযৌক্তিকভাবে বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি করে গণবিরোধী ও আত্মঘাতি সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
তিনি বলেন, বর্তমান ফ্যাসীবাদী সরকারের আমলে ২০১০ সাল থেকে গ্রাহক পর্যায়ে ১০ বার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি করা হয়েছে। ২০১০ সালের মার্চে প্রথম বিদ্যুতের দাম ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়। পরের বছর ২০১১ সালে গ্রাহক পর্যায়ে দুই দফা বাড়ানো হয়েছিল। ২০১২ সালেও খুচরা বিদ্যুতের দাম দুই দফা বাড়ানো হয়। এরপর ২০১৪ সালের মার্চে বিদ্যুতের দাম ৬ দশমিক ৯৬ শতাংশ বাড়িয়ে প্রতি ইউনিট করা হয় ৬ টাকা ১৫ পয়সা। আর ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে তা ২ দশমিক ৯৩ শতাংশ বেড়ে হয় ৬ টাকা ৩৩ পয়সা। এদিকে ২০১৭ সালে ডিসেম্বরে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানো হয়। ২০২০ সালের মার্চে গ্রাহক পর্যায়ে বিদ্যুতের গড় মূল্যহার ৫ দশমিক ৩ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে।
এরপর গত ১২ জানুয়ারি সরকার এক প্রজ্ঞাপনের মাধ্যমে খুচরা পর্যায়ে বিদ্যুতের দাম গড়ে ৫ শতাংশ বাড়ানো হয়েছে। যা ১ জানুয়ারি থেকেই কার্যকর হয়েছে। এতে ইউনিটপ্রতি দাম বাড়বে ৩৫ পয়সা। ফলে খুচরায় গ্রাহক পর্যায়ে গড়ে প্রতি ইউনিট বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পেয়ে গড়ে দাঁড়াবে ৭ টাকা ৪৮ পয়সা। যা রীতিমত জনদুর্ভোগ সৃষ্টি করবে।
তিনি আরো বলেন, সরকার জামায়াতকে বিশেষভাবে টার্গেট করে রাষ্ট্রশক্তির অপব্যবহারের মাধ্যমে এই আদর্শবাধী, দেশপ্রেমী, গণতান্ত্রিক ও কল্যাণকামী শক্তিকে নির্মূল করার দিবাস্বপ্ন দেখছে। সে ধারাবাহিকতায় পরিচ্ছন্ন জাতীয় নেতা ও আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে অন্যায় ও অযৌক্তিকভাবে গ্রেফতার করে কারাগারে অন্তরীণ করা হয়েছে। কিন্তু ইতিহাস সাক্ষী জুলম-নির্যাতন ও দলন-পীড়ন চালিয়ে অতীতে কোন আদর্শবাদী শক্তিকে নির্মূল করা যায়নি; আর কখনো যাবেও না।
সরকারকে নেতিবাচক, ধ্বংসাত্মক ও গণবিরোধী রাজনীতি বৃত্ত থেকে বেরিয়ে এসে অবিলম্বে পদত্যাগ করে কেয়ারটেকার সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর এবং আমীরে জামায়াত ডা. শফিকুর রহমানকে নিঃশর্ত মুক্তি দেয়ার আহবান জানান তিনি।
এসময় উপস্থিত ছিলেন কেন্দ্রীয় মজলিসে শূরা সদস্য ও ঢাকা মহানগরী উত্তরের সহকারি সেক্রেটারি ডা. ফখরুদ্দীন মানিক, মহানগরী কর্মপরিষদ সদস্য জিয়াউল হাসান, নাসির উদ্দীন ও শাহ আলম তুহিন, শূরা সদস্য ডা. মঈন উদ্দীন, আব্দুল মতিন খান, আব্দুল মান্নান ও সাইফুল কাদের ও ছাত্রনেতা আসাদুজ্জামান প্রমুখ।