May 21, 2024, 7:47 pm
সর্বশেষ:
সাবেক সেনাপ্রধানের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা সম্পর্কে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী বললেন কোনো মন্তব্য নেই প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করলো ইরান সাবেক সেনাপ্রধান ও তার পরিবারের ওপর মার্কিন নিষেধাজ্ঞা এভারেস্টের পর লোৎসা জয় করলেন বাবর আলী ইরানের প্রেসিডেন্ট ইব্রাহিম রাইসির মৃত্যুতে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার শোক আলফাডাঙ্গা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন: প্রতীক পেয়েই প্রচারণা শুরু চরভদ্রাসন পদ্মা নদীতে অভিযান ইরানের অন্তর্বর্তীকালীন প্রেসিডেন্ট মোহাম্মদ মোখবের বাংলাদেশ প্রেসক্লাব ইউএইর সভাপতি মামুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক মুহাম্মদ মোরশেদ আলম বিরোধীদের জেলে ঢুকিয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মডেলে নির্বাচন করতে চান মোদি: কেজরিওয়াল

বিদেশ পড়তে যেতে আগ্রহী শিক্ষার্থীরা বিপাকে!

  • Last update: Monday, August 31, 2020

খুলনা বিশ্ববিদ্যালয়ের সদ্য আন্ডার গ্র্যাজুয়েট শেষ করা শিক্ষার্থী কামরুন নাহার কেয়ার স্বপ্ন যুক্তরাষ্ট্রে গিয়ে উচ্চশিক্ষা নেওয়ার। সব ধরনের প্রক্রিয়া শেষ করে টেক্সাসের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হন তিনি। টিচিং অ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে ফুল ফান্ডও পেয়ে যান কেয়া। ২০২০ সালে তার সেমিস্টার শুরু হওয়ার কথা ছিল। ভিসার জন্য আবেদনও করেছিলেন দূতাবাসে। কিন্তু করোনার কারণে এলোমেলো হয়ে গেছে সবকিছু।
কামরুন নাহার কেয়া একাই নন, দেশের ছয় শতাধিক শিক্ষার্থী যুক্তরাষ্ট্র, কানাডা ও ইউরোপের কয়েকটি দেশের ভিসা না পেয়ে বিপাকে পড়েছেন। কেয়ার মতো শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী স্বর্ণালী ভট্টাচার্য টেক্সাসের একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে স্কলারশিপে উচ্চশিক্ষার সুযোগ পান। কিন্তু তিনিও একই সমস্যার কথা জানান। আর দ্রুত ভিসা না মিললে শিক্ষা জীবনে অনিশ্চয়তা নেমে আসবে বলে জানান তিনি।

এই শিক্ষার্থীরা জানান, ভর্তির পর করোনার কারণে বন্ধ হয়ে যায় বিদেশি দূতাবাসগুলোর নিয়মিত ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম। কেয়া ও স্বর্ণালীও এতদিন ধরে অপেক্ষায় আছেন ভিসার জন্য। টেক্সাসের ওই বিশ্ববিদ্যালয় দুই বার তারিখ পরিবর্তন করলেও ভিসার জন্য সাক্ষাৎকার দেওয়া সম্ভব হয়নি তাদের। ফলে ২০২০ সালে সেমিস্টার শুরু করতে পারছেন না তারা।

যুক্তরাষ্ট্র ও কানাডাসহ বিভিন্ন দেশে যদি দ্রুত যেতে না পারেন তাহলে শুধু এক বছরের শিক্ষাজীবন নষ্টই হবে না, ভবিষ্যৎ শিক্ষাজীবনও অনিশ্চয়তার মধ্যে পড়বে। কারণ, পরবর্তীতে এসব প্রতিষ্ঠানে তারা আর ভর্তির সুযোগ পাবেন না। আর তাদের ফান্ডও বাতিল হয়ে যাবে। গত বছরের নভেম্বরে উহান শহর থেকে ধীরে ধীরে সারাবিশ্বে করোনা ছড়িয়ে পড়ে। গত ৮ মার্চ বাংলাদেশে প্রথম করোনা রোগী শনাক্ত হয়। এরপর সারাদেশে লকডাউন ঘোষণা করা হয়। গত ১৯ মার্চ ঢাকায় যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাস নিয়মিত ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম অনির্দিষ্ট সময়ের জন্য স্থগিত করে। ফলে বাংলাদেশ থেকে যুক্তরাষ্ট্রের ‍বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে চলতি সেমিস্টারে ভর্তি হয়ে এবং ফান্ড পেয়েও ক্লাস শুরু করতে পারেননি অনেক শিক্ষার্থী।

কিছু শিক্ষার্থী তাদের ভর্তি ও ফান্ড আগামী স্প্রিং সেশনের (২০২১ সালের জানুয়ারি) সেমিস্টারে ট্রান্সফার করতে পারলেও বেশিরভাগ শিক্ষার্থীর ফান্ড ইতোমধ্যে বাতিল হয়ে গেছে। খুব শিগগিরই ঢাকায় অবস্থিত বিদেশি দূতাবাসগুলো ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম শুরু না করলে, যেসব শিক্ষার্থী ভর্তি ও ফান্ড ট্রান্সফার করতে পেরেছেন তারাও পরবর্তী সেমিস্টারে শিক্ষা কার্যক্রম শুরু করতে পারবেন না। ফলে তাদের ভর্তি ও ফান্ডও বাতিল হয়ে যাবে। এ নিয়ে সবচেয়ে বেশি অনিশ্চয়তার মধ্যে রয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশীরা।

কামরুন নাহার কেয়া বলেন, ‘ভিসা প্রসেসিং বন্ধ থাকায় ভিসা নিতে পারিনি। তাই ২০২০ সালের সেমিস্টারও শুরু করতে পারিনি। ফলে আমার নামে বরাদ্দ ফান্ড বাতিল হয়ে গেছে। বিশ্ববিদ্যালয় থেকে জানিয়েছে, আগামী সেমিস্টারে ফান্ডের বিষয়টি নতুন করে বিবেচনা করবে। কিন্তু তখন ফান্ড পাবো কিনা—তা এখনই নিশ্চিত করে বলতে পারছি না। আমরা এক কঠিন সময় অতিবাহিত করছি।’ কেয়া জানান, অনেকে চাকরি ছেড়ে দিয়েছেন বিদেশে উচ্চশিক্ষার জন্য যাবেন বলে। তারা যদি যেতে না পারেন, তাহলে তাদের ভবিষ্যৎটাই নষ্ট হয়ে যাবে।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মালিহা আলম বলেন, ‘আমার শুধু ভিসা প্রসেসিং বাকি ছিল। তখন ভাবলাম এই অল্প সময়ের জন্য চাকরি নিয়ে কী করবো। কিন্তু করোনায় ভিসা কার্যক্রম আটকে যাওয়ায় এখন অলস সময় কাটাচ্ছি।’

মালিহা আলম আরও বলেন, ‘প্রায় সব অফিসে নিরাপত্তা নির্দেশনা মেনে কার্যক্রম চলছে—এখন এভাবে যদি ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম শুরু হতো, তাহলে আমরা স্বস্তি পেতাম।’ যুক্তরাষ্ট্রে উচ্চশিক্ষা প্রত্যাশী আসিফ শাহরিয়ার বলেন, ‘ভারত ও শ্রীলঙ্কায় যুক্তরাষ্ট্রের ভিসা প্রসেসিং কার্যক্রম শুরু হয়েছে। বাংলাদেশে কবে নাগাদ শুরু হবে তা বুঝতে পারছি না। আমরা নিয়মিত ভিসা কার্যক্রম শুরুর অপেক্ষা করছি।’

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী লুবনা কাদের বলেন, ‘আমি বিশ্ববিদ্যালয়কে অনুরোধ করে ভর্তি ও ফান্ড স্প্রিং ২০২১ পর্যন্ত পেছাতে পেরেছি। কিন্তু এখনও এম্বাসি খুলছে না। কবে নাগাদ খুলবে তাও জানি না। তাই চিন্তা আর অনিশ্চয়তার মধ্যে আছি। এ বিষয়ে শিক্ষা আর পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের যদি কিছু করার থাকে, তবে আমাদের এই অনিশ্চয়তার মধ্য থেকে বাঁচার জন্য অনুরোধ করবো।’

এ বিষয়ে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানায়, যেসব শিক্ষার্থী তাদের সমস্যার কথা আমাদের জানিয়েছেন, তাদের বিষয়ে দূতাবাসগুলোকে জানিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে শিক্ষার্থীরা সমস্যায় না পড়ে।

ঢাকায় অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্র দূতাবাসসহ যেসব দূতাবাসে তাদের ভিসা কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে, কবে নাগাদ খুলবে সে বিষয়ে এখনও কোনও তথ্য দেয়নি।

উৎসঃ বাংলা ট্রিবিউন

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC