এনামুল হক রাশেদী, চট্টগ্রামঃ সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়, রেলপথ মন্ত্রণালয় এবং বাংলাদেশের অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাউজুল কবির খান বলেছেন, বিগত তিনটি জাতীয় নির্বাচনে মানুষ ভোট দিতে পারেনি। নাগরিক হিসাবে জনতার মনে এব্যাপারে প্রচন্ড ক্ষোভ আছে। ডঃ ইউনুসের নেতৃত্বাধীন অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ৫ আগস্ট ছাত্র আন্দোলনে গন বিপ্লব পরবর্তি রাস্ট্রযন্ত্রের সংস্কারের মাধ্যমে একটি অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে একটি বৈষম্যহীন সমাজ প্রতিষ্ঠায় কাজ করছে।
১৮ জানুয়ারি’২৫ ইং শনিবার সকাল ১১ টায় চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গাস্থ বোট ক্লাবে চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটির (সিআইইউ) সমাবর্তন’২০২৫ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপদেস্টা ফাওজুল এ মন্তব্য করেন। চিটাগং ইন্ডিপেন্ডেন্ট ইউনিভার্সিটি (সিআইইউ)’র উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীর মোহাম্মদ নুরুল আবসারের সভাপতিত্বে সমাবর্তন অনুষ্ঠানে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) সদস্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন ও শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব নুরুন আখতার। সমাবর্তন বক্তা ছিলেন শিল্পগ্রুপ ইয়ংওয়ান কর্পোরেশনের প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান ও প্রধান নির্বাহী (সিইও) কিহাক সুং। সকাল ১১ টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশন, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, গীতা ও ত্রিপিঠক পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সুচনা হয়।
উপদেষ্টা ড. ফাওজুল কবির খান শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে বলেন, ক্রিয়েটিভ এবং কম্পিউটারে দক্ষ শিক্ষার্থীরা এগিয়ে যাবে। ডিগ্রি থাকলেও কিন্তু মার্কেটে তোমাদেরকে যোগ্যতা দিয়ে প্রমাণ করতে হবে। মূল্যবোধসহ দক্ষ হয়ে উঠতে হবে সকলকে।
ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান সমাবর্তনে রাষ্ট্রপতির পক্ষে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন এবং শিক্ষার্থীদের সফল ভবিষ্যতের জন্য শুভকামনা জানান।
এবারের সমাবর্তনে সিআইইউর বিভিন্ন অনুষদের ২,১৮৯ জন শিক্ষার্থীকে ডিগ্রি প্রদান করা হয়। এর মধ্যে ১,৪৫২ জন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যবসায় প্রকৌশল, আইন এবং লিবারেল আর্টস অনুষদ থেকে স্নাতক পর্যায়ের শিক্ষার্থী এবং ৭৩৭ জন স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থী। অনুষ্ঠানে ১৪ জন শিক্ষার্থীকে তাদের অসামান্য কৃতিত্বের জন্য ‘টপ অ্যাচিভার্স’ অ্যাওয়ার্ড দেওয়া হয়। এই শিক্ষার্থীরা তাদের নিজ নিজ প্রোগ্রামে অপ্রতিরোধ্য সাফল্য অর্জন করে সম্মানিত হন। সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সিআইইউ’র ইভেন্ট পার্টনার হিসাবে ছিল এমজিএইচ গ্রুপ।
সিআইইউর শিক্ষার মান ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনার বিষদ ব্যাখ্যাপূর্বক সভাপতির বক্তব্যে সিআইইউর উপাচার্য অধ্যাপক ড. মীর মোহাম্মদ নুরুল আবসার বলেন, আমরা শিক্ষার্থীদের জন্য উচ্চমানের শিক্ষা এবং গবেষণার সুযোগ সৃষ্টি করতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ। আমাদের লক্ষ্য, শিক্ষার্থীরা যেন একটি শিক্ষিত, দক্ষ এবং দায়িত্বশীল সমাজ গঠনে যুগোপযোগী অবদান রাখতে পারে। “আজকের এই দিনটি আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের জন্য একটি বিশেষ মুহূর্ত। আমরা গর্বিত যে আমাদের শিক্ষার্থীরা শুধু একাডেমিক সাফল্যে নয়, বরং ব্যক্তিত্ব ও সমাজসেবায়ও উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেছে। আশা করি, তারা ভবিষ্যতে দেশের উন্নয়নে উল্লেখযোগ্য অবদান রাখবে।”
এছাড়াও অনুষ্ঠানে বক্তব্য দেন সিআইইউ ট্রাস্টি বোর্ডের চেয়ারম্যান জনাব লুৎফে এম আইয়ুব, সিআইইউর প্রতিষ্ঠাতা ট্রাস্ট ‘এডুকেশন, সায়েন্স, টেকনোলজি এন্ড কালচারাল ডেভেলপমেন্ট ট্রাস্ট (ইসটিসিডিটি)’-এর চেয়ারম্যান জনাব মোহাম্মদ জাকারিয়া খান।
বক্তারা বলেন, ‘সিআইইউ’র সমাবর্তন অনুষ্ঠানটি ছিল চট্টগ্রামের উচ্চশিক্ষার অঙ্গনে একটি উল্লেখযোগ্য মাইলফলক। এটি শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি অর্জনের ঐতিহাসিক মুহূর্তকে উদযাপন করার পাশাপাশি উচ্চশিক্ষায় নতুন দিগন্ত উন্মোচনের প্রতীক। এ আয়োজনের ইভেন্ট পার্টনার ছিল এমজিএইচ গ্রুপ, যা সমাবর্তনের সুষ্ঠু আয়োজন নিশ্চিত করতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেছে।
সকাল ১১ টায় জাতীয় পতাকা উত্তোলন, জাতীয় সংগীত পরিবেশন, পবিত্র কোরআন তেলাওয়াত, গীতা ও ত্রিপিঠক পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের শুভ সুচনা হয়ে অতিথিদের আলোচনা, দুপুরের লাঞ্চ ও বিকালে মনোজ্ঞ সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের মাধ্যমে অনুষ্ঠান সমাপ্ত হয়।