দেশের বর্তমান সার্বিক পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে বিএনপির কর্মসূচির একমাত্র লক্ষ্য ‘সরকার পতন’ বলে জানিয়েছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শুক্রবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের এক আলোচনা সভায় ফখরুল এ কথা জানান। জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক ফাউন্ডেশনের উদ্যোগে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলামের ৪৬তম মৃত্যুবার্ষিকী উপলক্ষে ‘নজরুলের রাজনীতি-বাংলাদেশের রাজনীতি’ শীর্ষক এই আলোচনা সভা হয়।
কবি কাজী নজরুল ইসলাম ১৯৭৬ সালের ২৭ আগস্ট ততকালীন পিজি হাসপাতালে (বর্তমানে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয় হাসপাতালে) মারা যান।
মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন, ‘আজকে নজরুল ইসলামকে ইগনোর করা হয়। তাকে বাদ দিয়েই বাংলা সাহিত্যের পাঠ্যক্রমের মধ্যে তার বই থাকে না, কবিতা থাকে না। আমি লক্ষ্য করেছি, ইলেক্ট্রনিক চ্যানেলগুলোতে নজরুল ইসলামের গান খুবই কম সম্প্রচার করা হয়।’
‘আপনি দেখবেন যে, পত্র-পত্রিকাগুলোতে নজরুল ইসলামের জন্মদিন অথবা মৃত্যবার্ষিকীকে যে ক্রোড়পত্র বের হতো সেটাও বোধহয় আজকাল বেশি হয় বলে মনে হয় না, আমি দেখি না। এটা হচ্ছে চরম সংকীর্ণতা। বাংলাদেশের মানুষকে তাদেরকে ভুল দিকে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করা, তাকে তার যে স্বকীয়তা আছে, তার স্বাতন্ত্র্য আছে সেই স্বাতন্ত্র্য থেকে দূরে সরিয়ে দেয়ার চেষ্টা করা।’ বলেন বিএনপি মহাসচিব।
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘এখন একেবারে নিরেট যে বাস্তবতা, সেই বাস্তবতা হচ্ছে- একটা ভয়াবহ ফ্যাসিবাদী, দানবীয় একটা মনোস্টার আমাদের সব কিছুকে দুমড়ে-মুচড়ে ধ্বংস করে দিচ্ছে। তাকে প্রতিহত করা, তাকে পরাজিত করা-এটাই আমাদের একমাত্র লক্ষ্য এবং সেখানে কবি কাজী নজরুল ইসলাম সবচেয়ে বেশি প্রাসঙ্গিক।’
সবার প্রতি আহ্বান জানিয়ে ফখরুল বলেন, ‘আসুন আমরা আজ নজরুলকে আবার নতুন করে স্মরণ করি, সার্বক্ষণিকভাবে স্মরণ করে, ধারণ করে, তাকে সামনে নিয়ে যেন এগিয়ে যেতে পারি- তার এই মৃত্যুদিনে এটাই হোক আমাদের শপথ।’
মির্জা ফখরুল বলেন, ‘শোষিত নিপীড়িত নির্যাতিত মানুষকে জাগিয়ে তোলবার জন্য তার কবিতা সব সময় সবকালেই মানুষকে অনুপ্রাণিত করেছে। আজকের এই দিনে বর্তমান প্রেক্ষিতে কাজী নজরুল ইসলাম বেশি প্রাসঙ্গিক। কবিদের মধ্যে এই ধরনের জাগিয়ে তোলা মানুষকে অন্যায়ের বিরুদ্ধে, অত্যাচারের বিরুদ্ধে, নির্যাতনের বিরুদ্ধে, নিপীড়নের বিরুদ্ধে।আমার মনে হয় কাজী নজরুল ইসলামকে যদি এই সময়ে স্মরণ করি আরো বেশি অনুপ্রাণিত হবো।’
‘যখন ভোলাতে আমার ভাই নুরে আলমকে পয়েন্ট ব্যাংক রেইনজে গুলি করে হত্যা করা হয় অথবা যখন আমার ইলিয়াস আলীকে গুম করে দেয়া হয় অথবা যখন আমাদের সমস্ত নেতাকর্মীর ওপর নির্যাতন করা হয়, যখন আমরা দেখি যে, আমাদের গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে অন্যায়ভাবে বন্দি করে রাখা হয়, আমাদের নেতা তারেক রহমানকে বিদেশে নির্বাসিত করে রাখা হয়, তখন নজরুল ইসলাম আমার কাছে বেশি প্রাসঙ্গিক মনে হয়, অনেক বেশি তাকে অনুসরণ করতে আমার ইচ্ছা করে।’ বলেন বিএনপি মহাসচিব।
নজরুল গবেষক আবদুল হাই শিকদারের সভাপতিত্বে ও ফাউন্ডেশনের মহাসচিব হুমায়ুন কবির ব্যাপারীর সঞ্চালনায় সভায় আরও বক্তব্য দেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী, মাহবুব হাসান, জসিম উদ্দিন, বাবুল আহমেদ, ইফতেখার আলম মাসউদ, ফাউন্ডেশনের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি মজিবর রহমান প্রমুখ।