নোয়াখালী সদর উপজেলায় স্কুলছাত্রী তাসনিয়া হোসেন অদিতা (১৪) হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আবদুর রহিম রনি (২৫) নামে কোচিং শিক্ষকসহ দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ।
শুক্রবার (২৩ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেন জেলা পুলিশ সুপার মো. শহীদুল ইসলাম। গ্রেফতার রনি লক্ষ্মীনারায়ণপুর এলাকার খলিল মিয়ার ছেলে।
পুলিশ সুপার জানান, শিক্ষার্থী তাসনিয়ার মরদেহ উদ্ধারের পর পুলিশের একাধিক দল অভিযান চালিয়ে ইসরাফিল (১৪), তার ভাই সাঈদ (২০) ও আবদুর রহিম রনিকে (২০) গ্রেফতার করে। এ হত্যাকাণ্ডে রনি প্রাথমিকভাবে জড়িত বলে ধারণা করা হচ্ছে। রনির মাথা, ঘাড়, গলাসহ শরীরের একাধিক স্থানে নখের আঁচড় রয়েছে। এদিকে ঘটনাস্থল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত একটি ছোরা উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় সুধারাম মডেল থানায় একটি হত্যা মামলা করা হয়।
তিনি আরও জানান, রনির কোচিং থেকে কিছুদিন আগে পড়া বন্ধ করে দিয়ে অন্যস্থানে প্রাইভেট শুরু করে অদিতা। এতে ক্ষিপ্ত হন রনি। যদিও পরে অদিতাদের বাসায় বিভিন্ন সময় আসা-যাওয়া করতেন তিনি। অদিতার মা ঘরে না থাকার সুযোগে বৃহস্পতিবার (২২ সেপ্টেম্বর) দুপুর ১২টা থেকে ২টার মধ্যে অদিতাকে ধর্ষণ ও পরে ঘটনা ধামাচাপা দেয়ার জন্য ছোরা দিয়ে হাত ও গলা কেটে হত্যা করা হয়। ঘটনাটি ভিন্ন খাতে নেয়ার জন্য ঘরে আলমারিতে থাকা মালামাল ছড়িয়ে-ছিটিয়ে রাখে।
বৃহস্পতিবার রাত সাড়ে ৯টার দিকে জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষ থেকে অদিতার মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। মরদেহ অর্ধনগ্ন, গলা ও দুই হাতের রগ কাটা অবস্থায় বিছানায় পড়ে ছিল।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, ২০১২ সালে দক্ষিণ আফ্রিকায় মারা যান অদিতার বাবা রিয়াজ হোসেন সরকার। জাহান মঞ্জিলের একটি কক্ষে দুই মেয়েকে নিয়ে থাকতেন রিয়াজের স্ত্রী রাজিয়া সুলতানা।
রাজিয়া সুলতানা বলেন, সকালে বাসা থেকে বের হয়ে স্কুলে যায় অদিতা। দুপুর ১২টার দিকে প্রাইভেট শেষে বাসায় আসে। এরপর থেকে সে বাসায় একাই ছিল। সন্ধ্যায় বাড়িতে ফিরে এসে ঘরের মূল দরজায় তালা দেখতে পান তিনি। তালা খুলে ভেতরে ঢুকে সামনের কক্ষের আলমারিতে থাকা জিনিসপত্র এলোমেলো অবস্থায় দেখতে পেলেও অদিতাকে দেখেননি। কিছুক্ষণ পর অন্য রুম খুলে ভেতরে ঢুকে বিছানার ওপর অর্ধনগ্ন এবং গলা ও দুই হাতের রগ কাটা অবস্থায় অদিতার মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন তিনি।
তিনি আরও বলেন, এলাকার কিছু বখাটে দীর্ঘদিন ধরে অদিতাকে বিভিন্নভাবে উত্ত্যক্ত করত। এ বিষয়ে একাধিকবার স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানানো হয়। কয়েক দিন ধরে অদিতাকে ধর্ষণ করবে বলে বাড়ির সামনে এসে তাকে হুমকি দিত কয়েকজন। তিনি ঘরে না থাকার সুবাদে কেউ ঘরে ঢুকে অদিতাকে ধর্ষণ করে গলা ও হাতের রগ কেটে হত্যা করে ঘরে লুটপাট করে।