বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের (বাফুফে) সাধারণ সম্পাদক মো. আবু নাইম সোহাগকে ২ বছরের জন্য নিষিদ্ধ করেছে বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা ফিফা। আর্থিক অনিয়মের দায়ে পরবর্তী দুই বছর ফুটবলের সব ধরনের কর্মকা- থেকে বিরত তাকে থাকতে বলা হয়েছে। একই সঙ্গে ১০ হাজার সুইস ফ্রাঁ বা প্রায় ১২ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে সোহাগকে। ফিফার অফিসিয়াল ওয়েবসাইটে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল) এক বিবৃতিতে এই তথ্য জানানো হয়।
এর আগে অনুদানের অর্থ দিয়ে বাফুফের কেনাকাটায় গরমিলের অভিযোগে সাধারণ সম্পাদক সোহাগ ও দুই অর্থ কর্মকর্তাকে শোকজ করেছিল ফিফা। ফিফার ক্রয়নীতি বলছে, যেকোনো কিছু কিনতে হলে নিতে হবে অন্তত তিনটি দরপত্র। এরপর সর্বনিম্ন দরদাতা পাবে কাজের দায়িত্ব। বাফুফেও সেটাই করেছে। কিন্তু ক্রয় রশিদসহ বাকি দুই কোটেশনে গরমিল পেয়েছে ফিফার অডিট দল।
ক্রয় রশিদসহ বাকি দুই কোটেশনে গরমিল পেয়ে আজ (শুক্রবার) সন্ধ্যায় ফিফার ইন্ডিপেন্ডেন্ট এথিক্স কমিটির বিচারিক চেম্বার সেই অভিযোগের প্রতিবেদন প্রকাশ করে। যেখানে বাফুফের সাধারণ সম্পাদক আবু নাইম সোহাগের বিরুদ্ধে অনুদানের অর্থ নিয়ে মিথ্যা ও ভুয়া নথি ব্যবহারের কথা বলা হয়েছে। বিশ্ব ফুটবলের নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিবৃতিতে জানিয়েছে, বাফুফেকে দেওয়া ফিফার টাকার হিসাবে মিথ্যা তথ্য বা নথি সরবরাহের কারণে সোহাগকে নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বিবৃতিতে বলা হয়, তদন্ত চলাকালে আবু নাইম সোহাগের বিরুদ্ধে বেশকিছু প্রমাণ বিচারিক চেম্বারের হাতে এসেছে। প্রতিবেদন প্রকাশের আগে তারা সেসব নথি ভালোভাবে পরীক্ষা করেছে এবং তার উপর চেম্বার সন্তুষ্ট। এরপর বাফুফের সাধারণ সম্পাদক সোহাগের বিরুদ্ধে ফিফার ২০২০ সালের কোড অব কন্ডাক্ট ভঙ্গের প্রমাণ পাওয়া যায়। তিনি সাধারণ নীতিমালার ১৩ নম্বর, দায়িত্ব ও নৈতিকতার ১৫ নম্বর এবং জালিয়াতি ও মিথ্যা বিষয়ক নীতিমালার ২৪ নম্বর অনুচ্ছেদটি ভঙ্গ করেছেন বলে বিবৃতিতে বলা হয়।
এরই মধ্যে শাস্তির বিষয়টি জানিয়ে আবু নাইম সোহাগকে চিঠি পাঠানো হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে ফিফা। চিঠির অনুলিপি দেওয়া হয়েছে বাফুফে এবং এশিয়ান ফুটবল কনফেডারেশনকেও (এএফসি)। সোহাগের বিরুদ্ধে শাস্তি আরোপ হবে শুক্রবার (১৪ এপ্রিল ২০২৩ ইং) থেকেই। বিষয়টি নিয়ে কথা বলতে দৈনিক ইনকিলাবের পক্ষ থেকে শুক্রবার রাতে মুঠোফোনে সোহাগের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন ধরেননি।
এদিকে ২০০৮ সাল থেকেই বাফুফে সভাপতি দ্বারা নিয়ন্ত্রিত। পরবর্তী বছর (২০০৯) থেকে পেশাদার সাধারণ সম্পাদক দিয়ে পরিচালিত হচ্ছে সংস্থাটির কার্যক্রম। বেতনভুক্ত প্রথম পেশাদার সাধারণ সম্পাদক আল মুসাব্বির সাদী পামেলের মৃত্যুর পর ২০১১ সালে ভারপ্রাপ্ত হিসেবে আবু নাইম সোহাগকে দায়িত্ব দেওয়া হয়। দুই বছর ভারপ্রাপ্ত হিসেবে কাজ করার পর ২০১৩ সাল থেকে সোহাগ সাধারণ সম্পাদকের পূর্ণ দায়িত্ব পান।