
বাসুদেব বিশ্বাস,বান্দরবান : “ নারী-কণ্যার সুরক্ষা করি, সহিংসতামুক্ত বিশ্ব গড়ি ” এই প্রতিপাদ্যকে সামনে রেখে বান্দরবানে উদযাপিত হয়েছে আন্তর্জাতিক নারী নির্যাতন পক্ষ ও বেগম রোকেয়া দিবস।
দিবসটি উপলক্ষ্যে সোমবার (৯ডিসেম্বর) সকালে বান্দরবান জেলা প্রশাসন ও জেলা মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের আয়োজনে জেলা প্রশাসকের কার্যালয়ের সামনে থেকে একটি বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করে শহরের প্রধান প্রধান সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে আবার একইস্থানে গিয়ে সমবেত হয়। পরে জেলা প্রশাসকের সভাকক্ষে আয়োজন করা হয় এক আলোচনা সভার। বান্দরবান মহিলা বিষয়ক অধিদপ্তরের উপ পরিচালক সুপন চাকমা এর সভাপতিত্বে এসময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উম্মে কুলসুম। এসময় সদর উপজেলা র্নিবাহী কর্মকর্তা উম্মে হাবীবা মীরা, জেলা দুনীর্তি প্রতিরোধ কমিটির সভাপতি অং চ মং মারমা, মানবাধিকারকর্মী ডনাই প্রু নেলীসহ বিভিন্ন সরকারী বেসরকারী দফতরের কর্মকর্তা ও নারী নেত্রীরা সভায় উপস্থিত ছিলেন। সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য দিতে গিয়ে বান্দরবান জেলা প্রশাসনের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক উম্মে কুলসুম বেগম রোকেয়া এর বর্ণাঢ্য জীবনী আলোকপাত করেন এবং বলেন, নারী জাগরণের অন্যতম পথিকৃৎ বেগম রোকেয়া বাংলা সাহিত্যের একজন নারীবাদী লেখিকা। তিনি শৈশবের সামান্য প্রাথমিক শিক্ষা ছাড়া কোনো আনুষ্ঠানিক শিক্ষা পাননি,স্বামীর অনুপ্রেরণায় তিনি সাহিত্যচর্চা শুরু করেন।
এসময় তিনি আরো বলেন, বেগম রোকেয়া যে সময় জন্মগ্রহণ করেন সেসময় ইংরেজি শিক্ষা তো বহুদুরের কথা মেয়েদের শিক্ষা গ্রহণই ছিলো নিষেধ। মেয়েদের কাজ ছিলো সন্তান জন্মদান, লালন পালন ও গৃহ কাজকর্মের মধ্যে সীমাবদ্ধ, এমনকি নিজ পরিবারেও মতামত প্রকাশ করা ছিলো কঠিন কাজ। বাইরের জগতে বের হওয়ার সুযোগও ছিলো খুব কম। বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তিনি আবিষ্কার করলেন বাইরের প্রথিবীটা তার জন্য নয়। সেটা শুধুই পুরুষদের দখলে। তাকে ঘরেই আরবি ও উর্দু শিক্ষা দেয়া হলো, তবে জ্ঞানের নেশা যাকে পেয়ে বসে তাকে থামানো যায়নি। ঘরের আবদ্ধ থেকে বের হয়ে কুসংস্কার আচ্ছন্ন নারী সমাজ রোকেয়ার হাত ধরেই আজ বিশ্বের বুকে পুরুষের সঙ্গে সমান তালে এগিয়ে যাচ্ছেন, রাখছেন সফলতার চিহ্ন।