বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ দীর্ঘদিন অসুস্থ থাকার পর মৃত্যুবরণ করেন প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অবসরপ্রাপ্ত এক শিক্ষক (৭৫)। পরের দিন দুপুরে জানাজার প্রারম্ভে উপস্থিত হন বেশ কয়েকজন পাওনাদার এবং কথা বলে মৃতের স্ত্রী ছেলে মেয়ে এবং স্বজনদের সাথে। তারা মৃতের দেনা পরিশোধ করতে অস্বিকৃতি জানাই এবং জানাযাস্থল থেকে পালিয়ে যায়। লাশ পড়ে থেকে ঈদগাহ মাঠে। পরবর্তিতে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা এবং স্থানীয় জনপ্রতিনিধিদের সহায়তায় লাশের দাফন সম্পন্ন হয়েছে।
ঘটনাটি ঘটেছে বাগেরহাটের শরণখোলা উপজেলার রায়েন্দা বাজার এলাকায়। উপজেলার সাউথখালী ইউনিয়নের দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামের বাসিন্দা অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক আব্দুল আজিজ মৃধা দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের নিয়ে রায়েন্দা বাজারের পাঁচরাস্তা মোড় সংলগ্ন এলাকায় বাড়ি নির্মান করে বসবাস করতেন। অন্যদিকে, প্রথম স্ত্রীর সন্তানেরা দক্ষিণ তাফালবাড়ী গ্রামের বাড়িতে বসবাস করেন। দীঘৃদিন অসুস্থ থাকার পরে গত ১১ জুলাই দুপুরে মৃত্যুবরণ করেন ওই শিক্ষক। বুধবার (১২ জুলাই) দুপুরে রায়েন্দা বাজার বড় মসজিদ ঈদগাহ মাঠে জানাজা শুরুর পূর্ব মুহূর্তে কয়েকজন পাওনাদার উপস্থিত হয়ে সর্বসাকুল্যে ছয় লক্ষ টাকা দাবী করেন। টাকার পরিমান শুনে স্ত্রী ও সন্তানরা টাকা দিতে অস্বীকৃতি জানাই এবং একপর্যায়ে মরদেহ ফেলে কৌশলে সটকে পড়ে। পরে, যোগাযোগ করা হয় তার প্রথম স্ত্রীর সন্তান মোঃ মতিয়ার রহমান এর সাথে, তিনিও কোন ধরনের অর্থ পরিশোধ করতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নুর-ই আলম সিদ্দিকীর হস্তক্ষেপে উপজেলা পরিষদের ভাইস-চেয়ারম্যান হাসানুজ্জামান পারভেজ ঘটনাস্থলে ছুটে আসেন। মৃতের স্ত্রী পুত্র-কন্যা ও স্বজনদের না পেয়ে পাওনাদারদের সাথে কথা বলে লাশের জানাজা ও দাফনের ব্যবস্থা করেন তিনি। পরবর্তীতে রায়েন্দা বাজার বড় মসজিদ ঈদগাহ মাঠে স্কুল শিক্ষকের জানাজার নামাজ অনুষ্ঠিত এবং আল ফাতাহ মাদ্রাসা সংলগ্ন কবরস্থানে তাকে দাফন করা হয়। মৃত শিক্ষকের দুই স্ত্রী দুই ছেলে এবং দুই মেয়ে রয়েছে বলে জানা গেছে। তাছাড়া টাকা ধার দেনা করে ছেলে মেয়ের পড়াশোনা এবং পরিবারের ভরণ পোষণে ব্যয় করেছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয়রা।
ঘটনার বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ নুর-ই আলম সিদ্দিকী জানান, বিষয়টি তিনি শুনে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান, প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা ও শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ সহ সকলের সহযোগিতা কামনা করেছেন। তবে, তার পরিবারের লোকজন কোন সুরাহা না করলে বিধি অনুযায়ী আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান তিনি।