বাগেরহাট প্রতিনিধিঃ বঙ্গোপসাগরের দিকে ধেয়ে আসা ঘূর্ণিঝড় অশনি বৃহস্পতিবার (১২ মে) সুপার সাইক্লোন হয়ে উপকূলে আঘাত হানতে পারে। অশনির প্রভাবে ইতোমধ্যে বাগেরহাট জুড়ে বৃষ্টি শুরু হয়েছে। সোমবার (৯মে) সকাল থেকেই জেলার সবগুলো উপজেলায় বৃষ্টি শুরু হয়। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়ছে বৃষ্টির পরিমাণও। ফলে হঠাৎ বৃষ্টিতে বিপাকে পড়েছেন ধানচাষিরা।
সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়নের ধানচাষি মো: আসলাম হাওলাদার বলেন, ঈদের দিন থেকে অনেক বৃষ্টি ছিল। গত দুই-তিন দিন বৃষ্টি না থাকায় আমরা ধান কেটে মাঠে রেখেছিলাম। বাড়ি আনার আগেই সব শেষ হয়ে গেল।
কচুয়া উপজেলার কাঠালতলা গ্রামের মিজান নকিব বলেন, আল্লাহর রহমতে ধান কেটে মাড়াই করে ঘরে তুলতে পেরেছি। কিন্তু খড় নিয়ে খুব বিপদে পড়েছি। বৃষ্টির পানিতে খড় নষ্ট হলে গরু-বাছুরকে কী খাওয়াব? শরণখোলা উপজেলার নলবুনিয়া এলাকার সোবাহান ফরাজি বলেন, সিডরে আপনজন, ঘর-বাড়ি, জমি-জমা হারিয়েছি। সিডরের পর আইলা, নার্গিস, বুলবুল, আম্পান, ইয়াসসহ একের পর এক ঘূর্ণিঝড়ের আঘাতে মূল্যবান সম্পদও হারিয়েছি। এ বছর নাকি আবার অশনি আঘাত হানবে। এত আঘাত সহ্য করার জায়গা নেই আমাদের।
মোংলার হলদেবুনিয়া এলাকার বাসিন্দা কালাম হাওলাদার বলেন, ঝড়ের পূর্বাভাস যখন থাকে, তখন আকাশে মেঘ দেখলেই আমাদের নির্ঘুম রাত কাটে। সিডরে ঘর-বাড়ি সব কিছু হারিয়েছি। এখন নদীর পাড়ে কোনো রকম ঘর বানিয়ে থাকি। নতুন করে আবার ঝড় আসছে। ঘর-বাড়ি যদি আবার নদীতে চলে যায়, পরিবার নিয়ে গাছের নিচে থাকা ছাড়া আমাদের আর কোনো উপায় থাকবে না।বাগেরহাটের অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক খোন্দকার মোহাম্মদ রিজাউল করীম বলেন, ঘূর্ণিঝড় অশনির বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের প্রয়োজনীয় নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। সিপিবি, রেড ক্রিসেন্ট, উপজেলা প্রশাসন, স্থানীয় জনপ্রতিনিধি সবাই প্রস্তুত আছে। বাগেরহাটে বর্তমানে ২ নং সতর্কতা সংকেত চলমান রয়েছে। সংকেত বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।তিনি আরও বলেন, বাগেরহাটে ৩৪৪টি আশ্রয়কেন্দ্রসহ বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, সরকারি অফিস প্রস্তুত রাখা হয়েছে। শুকনো খাবার এবং সুপেয় পানির ব্যবস্থা রয়েছে আমাদের।