May 19, 2024, 8:37 pm
সর্বশেষ:
বিরোধীদের জেলে ঢুকিয়ে বাংলাদেশ ও পাকিস্তানের মডেলে নির্বাচন করতে চান মোদি: কেজরিওয়াল এসএমই মেলার উদ্বোধন করলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা রামপালে ৬৩০ জন রোগী পেল বিনামূল্যে ছানি অপারেশনের সুযোগ  চাল বিতরণে অনিয়মের দায়ে ইউপি সদস্য বরখাস্ত মোরেলগঞ্জের পোলেরহাট বাজারে ভয়াবহ অগ্নিকান্ড, ১৩ দোকান পুড়ে ছাই মৌলভীবাজারে নদী রক্ষার বাঁধ নির্মাণে দীর্ঘসূত্রতা ৬ তারিখে বাজেট দেবো, বাস্তবায়নও করবো: প্রধানমন্ত্রী বেনাপোলে দোয়াত কলম প্রতীকের নির্বাচনী গণসমাবেশ দেশজুড়ে আজ থেকে ‘নো হেলমেট, নো ফুয়েল’ কার্যকর বিমানের সাবেক এমডিসহ ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে দুদকের চার্জশিট

বাংলা পানের চাষ যেন প্রায় বিলুপ্তির পথে

  • Last update: Monday, May 15, 2023

তিমির বনিক, মৌলভীবাজার প্রতিনিধি: মৌলভীবাজার জেলা যেমন চা উৎপাদনে সন্মানীত দেশে বিদেশে তেমনি মনু নদীর তীরজুড়েই একসময় বাড়ৈ সম্প্রদায়ের পানের বরজ তৈরি করে পান চাষ করতেন। একসঙ্গে চাষ করতো লাউ মরিচ ও বেগুন পান চাষের সহায়ক ভূমিকা পালন করতো। সিলেটসহ মৌলভীবাজারের প্রবাসে বাস করাদের কাছে লন্ডনে যেতো এ বাংলা পান। ভারতসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে পান আসতে থাকায় কদর কমেছে বাংলা পানের। ফলে পৃষ্ঠপোষকতার অভাবে আজ বিলুপ্তির পথে বাংলা পান।

পান চাষের সঙ্গে জড়িতরা জানান, বরজ তৈরির উপকরণ ছন, বাঁশ, বেত ও শ্রমিক সংকটের কারণে অনেকেই ছেড়ে দিচ্ছেন পান চাষের আগ্রহ। পান চাষ ছেড়ে ভিন্ন পেশায় যুক্ত হচ্ছেন তারা। জেলার কুলাউড়া ও রাজনগর উপজেলার মনু নদীর তীরের গ্রামগুলোতে বেশীরভাগ পানের বরজ ছিল। পারিবারিক ঐতিহ্য ধরে রাখতে কিছু চাষি সুপারি গাছের পাতা দিয়ে বরজ তৈরি করে পান চাষ করছেন এখন।

কৃষি বিভাগ বলছে, এ পর্যন্ত বাংলা পান চাষের জন্য কোনো প্রকার প্রকল্প নেই। জেলায় ২৫-৩০ একর ভূমিতে বাংলা পান চাষ হয়ে থাকে। নিজ উদ্যোগেই চাষ করেন তারা। আগে বাংলা পান চাষে মৌলভীবাজারের কুলাউড়া, রাজনগর ও কমলগঞ্জ উপজেলার ৫ শতাধিক পরিবার অতপ্রতয় ভাবে জড়িত ছিল। বর্তমানে সংখ্যা কমে শতাধিক হয়েছে। এ পান স্থানীয়দের কাছে খুবই প্রিয় ছিল। এ অঞ্চলে বাংলা পানের পরিকল্পিত চাষাবাদ ঘুরিয়ে দিতে পারে বাড়ৈ সম্প্রদায়ের ভাগ্যের চাকা। জাতীয় অর্থনীতিতেও রাখতে পারে ভূমিকা। পাশাপাশি প্রবাসে রপ্তানি করা সম্ভব হতো।

কুলাউড়া উপজেলার টিলাগাঁও ইউনিয়নের কুড়িগ্রামের সুব্রত কর বলেন, ‘পান চাষ করে সংসারের চাকা খুরতো। বাংলা পান ধরে রাখার জন্য আমরা চাষ করি। কিন্তু এখন ছন, বাঁশ ও শ্রমিক না পাওয়ায় বরজ তৈরি করতে অনেক কষ্ট হয়। ৮ শতাংশের ভূমিতে ৩ বছর মেয়াদের একটি বরজ তৈরি করতে ২০ হাজার টাকা খরচ হয়। প্রতি বছর মেরামত খরচ হয় ৮-১০ হাজার টাকা। লাভ হয় ৩০ হাজার টাকা।’

রাজনগর উপজেলার কামারচাক ইউনিয়নের টুপির মহল গ্রামের কোলনিশি দে বলেন, ‘পান বিক্রি করে একসময় অনেক লাভ হয়েছে। ছেলে-মেয়েদের লেখাপড়ার খরচসহ সংসারের যাবতীয় হাসিখুশিতে খরচ চলতো। অতীতে এ অঞ্চলে ব্যাপকভাবে পান চাষ হতো। স্থানীয় চাহিদা মিটিয়ে বাইরেও রপ্তানি করা যেতো। কিন্তু নানাবিধ সমস্যায় পানের চাষ দিন দিন কমে যাচ্ছে।’

টিলাগাঁও ইউনিয়নের চকসালন গ্রামের বাবুল দত্ত বলেন, ‘কোনো একসময় আমাদের গ্রামের শতভাগ মানুষ পান চাষের সঙ্গে অতপ্রতয় ভাবে জড়িত ছিলেন। বিগত ৫-৭ বছরে পানের দাম কমেছে। বাইরের পান আসায় পানের প্রকৃত মূল্য আমরা পাচ্ছি না। বর্তমানে ১৫-১৬ ভাগ মানুষ পান চাষ করছেন। সরকার উদ্যোগ নিলে হয়তো আবার পান চাষে মানুষ ফিরে যাবে।’ ঘুরে দাঁড়াতে পারে পান চাষিরা।

মৌলভীবাজার কৃষি অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক সামছুদ্দিন আহমেদ বলেন, ‘মৌলভীবাজারে খাসিয়া পানের চাষ বেশি হচ্ছে। বাংলা পানের চাষ দিন দিন কমে যাচ্ছে। আমাদের জানামতে, ২৫ একর ভূমিতে বাংলা পান চাষ হয়। এ পর্যন্ত আমাদের হাতে সরকারের পক্ষ থেকে বাংলা পান চাষের কোনো রকম প্রকল্প আসেনি। কোনো সুযোগ আসলে আমরা বাংলা পান চাষিদের পাশে দাঁড়াবো।’ পাশাপাশি চাষিদের পান চাষের জন্য উদ্বুদ্ধ করা হবে।

Drop your comments:

Please Share This Post in Your Social Media

আরও বাংলা এক্সপ্রেস সংবাদঃ
© 2023 | Bangla Express Media | All Rights Reserved
With ❤ by Tech Baksho LLC