অতিবৃষ্টির কারণে দুইবার পেছানোর পর অবশেষে মাঠে গড়াল বাংলাদেশ-সিশেলস ম্যাচ। ভারি মাঠে খেলার স্বাভাবিক গতি না থাকলেও প্রতিপক্ষকে চাপে রেখে প্রথমার্ধে কাঙ্ক্ষিত গোল তুলে নেয় বাংলাদেশ। কিন্তু বিরতির পর তাদের রক্ষণে ধরল চিড়। শেষ দিকে যার মাশুল দিয়ে পয়েন্ট খোয়াল মারিও লেমোসের দল।
প্রাইম মিনিস্টার মাহিন্দা রাজাপাকসে চার জাতি টুর্নামেন্টে বুধবার কলম্বোর রেসকোর্স মাঠে দুই দলের ম্যাচটি ১-১ ড্র হয়েছে। সপ্তদশ মিনিটে মোহাম্মদ ইব্রাহিম বাংলাদেশকে এগিয়ে নেওয়ার পর ৮৭তম মিনিটে সমতা ফেরান রশিদ ড্যান ল্যাবরোস।
বাংলাদেশ জাতীয় দলের অন্তর্বর্তীকালীন কোচ হিসেবে সম্ভাবনা জাগিয়েও জয়ে শুরু পেলেন না লেমোস। সব মিলিয়ে চার ম্যাচ জয়হীন থাকল দল। সাফ চ্যাম্পিয়নশিপে শ্রীলঙ্কাকে হারানোর পরের তিন ম্যাচের মধ্যে ভারত ও নেপালের বিপক্ষে ড্র করেছিল বাংলাদেশ; হেরেছিল মালদ্বীপের কাছে।
নিজেদের (১৮৭তম) চেয়ে ফিফা র্যাঙ্কিংয়ে পিছিয়ে থাকা সিশেলসের (১৯৯তম) বিপক্ষে জয়ে শুরুর আশাবাদ জানিয়েছিলেন বাংলাদেশ কোচ ও খেলোয়াড়রা। কিন্তু চাওয়া পূরণ হলো না।
শুরু থেকে বলের নিয়ন্ত্রণ রেখে আক্রমণ শানাতে থাকে বাংলাদেশ। কিন্তু সিশেলসের গোলরক্ষককে তেমন কোনো পরীক্ষা নিতে পারছিল না ৪-২-৩-১ ফরমেশনে খেলা বাংলাদেশ। তেমন কোনো সুযোগই তৈরি করতে পারেননি একমাত্র ফরোয়ার্ড হিসেবে খেলা সুমন রেজা।
ইয়াসিন আরাফাত, টুটুল হোসেন বাদশা, তপু বর্মন ও সুশান্ত ত্রিপুরার কড়া পাহারায় সিশেলস প্রথমার্ধে তেমন সুবিধা করতে পারেনি। চতুর্দশ মিনিটে দলটির স্যাম শেন হ্যালকের দূরপাল্লার শট ফিরিয়ে দেন বাংলাদেশের গোলরক্ষক আনিসুর রহমান জিকো।
এর তিন মিনিট পরই এগিয়ে যায় বাংলাদেশ। নিজেদের অর্ধ থেকে বাদশার লং পাস এক সতীর্থের পা হয়ে কিছুটা সৌভাগ্যবশত পেয়ে যান ইব্রাহিম। এক ডিফেন্ডারকে কাটিয়ে এই অ্যাটাকিং মিডফিল্ডারের নেওয়া শট বাঁক খেয়ে জাল খুঁজে নেয়।
একটু পরই ব্যবধান দ্বিগুণ হতে পারত। রাইট উইং ধরে আক্রমণে ওঠা সাদউদ্দিনের বক্সে বাড়ানো ক্রসে মাথা ছুঁয়েছিলেন সুমন, কিন্তু বল লক্ষ্যে থাকেনি। দূরের পোস্টে থাকা ইব্রাহিম পারেননি দরকারি টোকা দিতে, দ্রুত ক্লিয়ার করেন এক ডিফেন্ডার।
৩০তম মিনিটে সতীর্থের কাট ব্যক নিয়ন্ত্রণে নিয়ে জামাল ভূইয়ার বক্সে ঢুকে নেওয়া শট আটকান গোলরক্ষক। ছয় মিনিট পর তপুর শট দূরের পোস্ট দিয়ে বেরিয়ে যায়।
৪১তম মিনিটে নষ্ট হয় ব্যবধান দ্বিগুণের সুবর্ণ সুযোগ। এবারও ডান দিক থেকে সাদউদ্দিনের নিখুঁত ক্রস বক্সে পেয়ে রাকিব হোসেন কাট ব্যাক করেন। ফাঁকায় থাকা ইব্রাহিম দুর্বল লক্ষ্যহীন শটে হতাশা বাড়ান।
দ্বিতীয়ার্ধে বাংলাদেশের খেলার ধার কমে। বারবার আলগা হতে থাকে রক্ষণভাগ। ৬১তম মিনিটে সতীর্থের ছোট পাসে বক্সে ফাঁকায় বল পেয়েছিলেন সিশেলসের রানডফ দি এলিজাবেথ, কিন্তু পোস্টের বাইরে মেরে সুযোগ নষ্ট করেন এই বদলি মিডফিল্ডার। তিন মিনিট পর সতীর্থের থ্রু পাসে শট নিলেও বল লক্ষ্যে রাখতে পারেননি আরেক বদলি ফরোয়ার্ড ডিন স্টিফেন।
৮৭তম মিনিটে সতীর্থের ক্রসে ওয়ারেন এরিক বুক দিয়ে বল নামানোর পর ল্যাবরোস জোরালো শটে সমতা ফেরান। একটু পর উডলে ট্যাম্বুর হেড অল্পের জন্য বাইরে দিয়ে গেলে বেঁচে যায় বাংলাদেশ।
যোগ করা সময়ে জুয়েল রানার নিচু ক্রসে মাহবুবুর রহমান সুফিল হেড করলেও বল উড়ে যায় ক্রসবারের উপর দিয়ে। শেষ হয়ে যায় বাংলাদেশের জয়ের আশাও।
রাউন্ড রবিন লিগ পদ্ধতির এ আসরে বাংলাদেশ নিজেদের দ্বিতীয় ম্যাচে আগামী শনিবার মালদ্বীপের মুখোমুখি হবে। উদ্বোধনী ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে চার গোলে এগিয়ে গিয়েও জিততে পারেনি মালদ্বীপ; ৪-৪ ড্র করে তারা।