পাকিস্তানের নতুন পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়াল ভুট্টো জারদারিকে ঢাকা সফরের আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. একে আব্দুল মোমেন। আগামী ২৭শে জুলাই ঢাকায় অনুষ্ঠেয় উন্নয়নশীল আট মুসলিম রাষ্ট্রের জোট ডি-৮ এর পররাষ্ট্রমন্ত্রী পর্যায়ের সম্মেলনে অংশ নিতে তাকে বিশেষ আমন্ত্রণ জানানো হয়েছিল। পাকিস্তান সরকার মন্ত্রী মোমেনের সেই আমন্ত্রণ রক্ষা করেছে কিন্তু তারা বিলাওয়ালকে নয় বরং প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানী খারকে ঢাকায় পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে। ডি-৮ পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের সম্মেলনে ৬ সদস্যের প্রতিনিধিদলের নেতৃত্ব দিবেন হিনা। তার সঙ্গে ঢাকা আসছে পাকিস্তানের ৮ সদস্যের উচ্চ পর্যায়ের একটি বিজনেস ডেলিগেশন এবং বেশ বড় একটি কালচারাল টিম। ইস্তাম্বুলস্থ ডি-৮ সদর দপ্তর সূত্রে এ খবর মিলেছে। যার সত্যতা নিশ্চিত করেছে সেগুনবাগিচা। ইসলামাবাদস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের বরাতে সেগুনবাগিচার দায়িত্বশীল প্রতিনিধিরা মানবজমিনকে বলেন, ডি-৮ সম্মেলনে পাকিস্তানের প্রতিনিধিত্বের বিষয়টি শুক্রবার কনফার্ম করেছে ইসলামাবাদ।
আগামী সোমবার নাগাদ তারা ভিসার আবেদন করবে বলে আশা করা হচ্ছে। সেগুনবাগিচা বলছে, ডি-৮ এর বর্তমান সভাপতি হিসেবে বাংলাদেশ জোটের অন্য সদস্য মিশর, ইন্দোনেশিয়া, ইরান, মালয়েশিয়া, নাইজেরিয়া এবং তুরস্কের পররাষ্ট্রমন্ত্রীকেও যথাযথ মর্যাদায় আমন্ত্রণ জানিয়েছে। সদস্য রাষ্ট্রগুলোতে থাকা বাংলাদেশ দূতগণ সশরীরে আমন্ত্রিত অতিথিদের কাছে হাজির হয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর আমন্ত্রণপত্র হস্তান্তর করেছেন।
সেগুনবাগিচার দায়িত্বশীল এক কর্মকর্তা গতকাল সন্ধ্যায় মানবজমিনকে বলেন, পররাষ্ট্রমন্ত্রী বিলাওয়ালের বদলে প্রতিমন্ত্রী হিনা রব্বানী খারকে পাঠাচ্ছে পাকিস্তান- এতে অসুবিধার কিছু নেই। তাছাড়া হিনা রাজা পারভেজ আশরাফ সরকারে পররাষ্ট্রমন্ত্রীর দায়িত্ব পালন করেছেন। এখন নতুন সরকারে তিনি প্রতিমন্ত্রী হয়েছেন। এটা তাদের অভ্যন্তরীণ বিষয়। তবে প্রতিনিধিত্বের বিচারে এটা বড় ধরনের ব্যত্যয় নয়। তাছাড়া প্রতিমন্ত্রীর নেতৃত্বাধীন প্রতিনিধিদলে অতিরিক্ত পররাষ্ট্র সচিব, একাধিক অনুবিভাগের মহাপরিচালক ও পরিচালক অন্তর্ভুক্ত রয়েছেন বলে জানানো হয়েছে। সব মিলিয়ে এমন প্রতিনিধিত্বই কাঙ্ক্ষিত ছিল।
উল্লেখ্য, ২০১২ সালে পাকিস্তানের তৎকালীন পররাষ্ট্রমন্ত্রী হিনা রব্বানী খার বাংলাদেশ সফর করেছিলেন। সে সময় ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত ডি-৮ শীর্ষ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে আমন্ত্রণ জানাতে এসেছিলেন তিনি। এটাই ছিল দেশটির কোনো মন্ত্রীর সর্বশেষ বাংলাদেশ সফর। এরপর থেকে দীর্ঘ সময় ঢাকা-ইসলামাবাদ সম্পর্ক টানাপড়েনের মধ্যদিয়ে গেছে। যা সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তৃতীয় দেশের মধ্যস্থতায় ইউটার্ন নিয়েছে বলে ধারণা ওয়াকিবহাল মহলের।